মদন মিত্র
বাইশ মাসের বন্দিজীবন তাঁকে অনেক শিক্ষা দিয়েছে! এখন তাই তিনি অনেক সাবধানী। ভবিষ্যতে রাজনীতির ময়দানে থাকলেও মেপে পা ফেলতে চান মদন মিত্র।
আদালতের নির্দেশ মানতে গিয়ে জেল থেকে ছাড়া পেয়েও কাঁসারিপাড়ায় বাড়িতে ফিরতে পারেননি। বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এলগিন রোডের এক হোটেলের ঘরে বসে প্রাক্তন মন্ত্রী বললেন, ‘‘ছাত্র আন্দোলন দিয়ে রাজনীতির শুরু। চিরকাল খোলামেলা থেকেছি। এই কয়েক মাসে শিখলাম— মেপে, ভেবেচিন্তে পা ফেলতে হয়।’’
শনিবার সকাল সাতটা নাগাদ আলিপুর জেল থেকে বের হন মদন। তার আগে জেলেই স্নান সেরে নেন। জেল সূত্রে খবর, কয়েক দফায় মদনবাবু যত বারই আলিপুর জেলে গিয়েছেন, থেকেছেন মন্দির ওয়ার্ডে। সেখানেই মা কালীর মূর্তি স্থাপন করে নিয়মিত পুজো করেছেন। এ দিন সকালেও তার অন্যথা হয়নি। দুপুরেও তাঁর নির্দেশে জেলের মন্দিরের জন্য পুজো পৌঁছে গিয়েছে। বেরোনোর আগে সহবন্দিদের কথা দিয়ে এসেছেন, ভবিষ্যতে মন্দিরটিকে আরও সুন্দর করে তুলবেন তিনি।
যে সংস্থার আর্থিক কেলেঙ্কারিতে মদত দেওয়ার অভিযোগে প্রায় ২২ মাস জেলে কাটানো, সেই সারদার প্রতারিত আমানতকারীদেরও পাশে থাকতে চান মদন। এ দিন তিনি জানান, আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতে কোনও আন্দোলনে যদি ডাক পান, তা হলে অবশ্যই হাজির হবেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি চাই, আমানতকারীরা টাকা ফেরত পান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেটাই চেয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধীরা সব গুলিয়ে দিয়েছে।’’
আন্দোলনে সামিল হতে চান ঠিকই, কিন্তু গত ২২ মাস জেলের নিঃসঙ্গতা থেকে যে শিক্ষা পেয়েছেন, তাকে সম্বল করেই আগামী দিনে চলতে চান মদন। উদাস গলায় বলেন, ‘‘প্রথমে মাটিতে ছিলাম। পরে পাহাড়ে উঠেছিলাম। এখন বালুকাবেলায় একা একা হাঁটছি।’’ তবে কি দলের প্রতি ক্ষোভ জমেছে মনে? প্রশ্ন শুনেই যেন সম্বিৎ ফেরে। ‘‘না, না, তা কেন! দলের আস্থা না থাকলে কি আর আমাকে প্রার্থী করত!’’— সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে মুচকি হাসেন মদন।
শনিবার দিনভর দলের নেতারা বিশেষ কেউ আসেননি দেখা করতে। অনুগামীরা অবশ্য দলে দলে ভিড় জমিয়েছিলেন হোটেলে। কেউ ফুল, কেউ মিষ্টি হাতে। সকলকেই হাসিমুখে সময় দিয়েছেন মদন। এর মধ্যে এক জন স্পেশাল অতিথি। নাতি মহারূপ। তার সঙ্গে খেলার সময় বাইরের লোক ‘নট অ্যালাউড’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy