ঘাটাল আদালতে ধৃত রাধারমণ দিন্দা।
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতী ছাত্রীর উপর অ্যাসিড হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবারই রাধারমণ দিন্দা নামে ওই যুবককে আটক করা হয়েছিল। পরে ওই তরুণীর মায়ের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ধৃতকে রবিবার ঘাটাল আদালতে হাজির করা হলে বিচারক ৬ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
দাসপুরের নন্দনপুরে ওই অ্যাসিড হামলার ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার রাতে। সে দিন সকালেই উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরিয়েছিল ওই তরুণীর। ৮০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন তিনি। সেই রাতেই প্রতিবেশী রাধারমণ মাটির বাড়ির খোলা দরজা দিয়ে ঢুকে ঘুমিয়ে থাকা ওই তরুণীর গায়ে অ্যাসিড ছুড়েছে বলে অভিযোগ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তরুণীর চিকিৎসা চলছে কলকাতার এম আর বাঙুর হাসপাতালে। জখম হয়ে সেখানে ভর্তি তার ভাইও।
আক্রান্তকে দেখে এম আর বাঙুর হাসপাতালের বার্ন ইউনিট থেকে বেরিয়ে আসছেন
রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায়। রবিবার।
বার্ন ইউনিটের তিন নম্বর কেবিনে ভর্তি ওই তরুণীকে দেখতে রবিবার সকালে হাসপাতালে এসেছিলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায়। কথা বলেন হাসপাতালের সুপার এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। পুলিশের কাছে ওই তরুণী যে বয়ান দিয়েছে, তা-ও সংগ্রহ করেন সুনন্দাদেবী। তাঁর সঙ্গে এ দিন ছিলেন কমিশনের আর এক সদস্য শিখা আদিত্য। পরে সুনন্দাদেবী বলেন, ‘‘বিয়ের প্রস্তাব খারিজ করায় ওই তরুণীকে যে ভাবে অ্যাসিড ছোড়া হয়েছে তা পৈশাচিক। অ্যাসিড বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও কী করে অ্যাসিড সহজলভ্য হয়ে যাচ্ছে, সেটাও দেখা দরকার। সরকারকে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।’’
এম আর বাঙুরের দায়িত্বে থাকা সুপার অশোককুমার সামন্ত এ দিন জানান, অ্যাসিডে ওই তরুণীর ডান চোখ খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আপাতত তাঁর ক্ষতের সংক্রমণ রোখার চেষ্টা চালাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এরপর প্লাস্টিক সার্জেন দিয়ে তাঁকে পরীক্ষা করানো হবে। সঙ্কট কাটলে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চোখের পরবর্তী চিকিৎসা করানো হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোনার কারিগর রাধারমণ বেঙ্গালুরুতে কাজ করে। দিন পনেরো আগে নন্দনপুর সংলগ্ন বালকরাউত গ্রামে রাধারমণের বিয়ে হয়। এ দিকে, আক্রান্ত তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই যুবক তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তিনি রাজি হননি। অভিযোগ, প্রত্যাখ্যানের সেই আক্রোশ থেকেই তরুণীর উপর অ্যাসিড-হামলা চালায় রাধারমণ ওরফে পাপাই। জানা গিয়েছে,
সোনা গলানোর কাজে ব্যবহৃত সালফিউরিক অ্যাসিড দিয়েই হামলা চালায় সে। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় এখনও ঘটনার কথা স্বীকার করেনি রাধারমণ।
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy