Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চক্রের মাথা গারদে, খোঁজ চার হাতের

চক্রের মাথা বলা হোক বা পান্ডা, সে ধরা পড়ে গিয়েছে ও-পারে। সেই মাথার ‘হাত’ কিন্তু চারটে। দু’‌টো এ-পারে, অন্য দু’‌টো ও-পারে। সীমান্তে জাল নোটের কারবার ঠেকাতে দু’পারের সেই চারটি হাতে কড়া পরানো জরুরি।

সুরবেক বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৯
Share: Save:

চক্রের মাথা বলা হোক বা পান্ডা, সে ধরা পড়ে গিয়েছে ও-পারে। সেই মাথার ‘হাত’ কিন্তু চারটে। দু’‌টো এ-পারে, অন্য দু’‌টো ও-পারে।

সীমান্তে জাল নোটের কারবার ঠেকাতে দু’পারের সেই চারটি হাতে কড়া পরানো জরুরি। আপাতত চক্রের পান্ডা হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিল শেখের এ-পারের শাগরেদদের ধরে জাল নোটের কারবারে বড় ধাক্কা দিতে চাইছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

বাংলাদেশ থেকে মালদহের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে জাল নোট পাঠানোর অন্যতম বড় চাঁই হাবিবুর ওরফে হাবিলকে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখা ‘র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন’ বা র‌্যাব। এমন একটা সময়ে এই গ্রেফতারি, যখন পাঁচশো ও হাজার টাকার পুরনো নোট বাতিল হওয়ায় মালদহ সীমান্ত বরাবর ভারতীয় জাল নোটের কারবার অনেকটা টাল খেয়েছে বলে গোয়েন্দাদের দাবি। এই প্রেক্ষিতে ধৃত হাবিবুরের শাগরেদ, মালদহের কুতুবউদ্দিন ও সফিককে জালে ধরাই এখন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র লক্ষ্য।

এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘সফিক আর কুতুবউদ্দিন মালদহে হাবিল শেখের দুই শাগরেদ। একই ভাবে বাংলাদেশের শিবগঞ্জে নিজের খাসমহলে হাবিলের দুই শাগরেদ হল করিম ওরফে কালু শেখ আর অলকেশ শেখ।’’ গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, এই চতুর্ভুজের মধ্যে কালুই দেড় বছর ধরে সব চেয়ে সক্রিয়। সে-ই হাবিলের হয়ে কোটি কোটি ভারতীয় টাকার জাল নোট মালদহে পাঠিয়েছে কিংবা নিজে এসে দিয়ে গিয়েছে কুতুবউদ্দিন ও সফিকদের হাতে। ‘‘দুই বাংলা মিলিয়ে চার জনকেই ধরা এখন জরুরি। নোট বাতিলের পরে জাল নোটের কারবারে বড়সড় ঘা লেগেছে। লোহা গরম থাকতে থাকতেই যা করার করতে হবে,’’ বলছেন এক এনআইএ-কর্তা।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা আপাতত এ-পারে হাবিলের দু’‌টো ‘হাত’ ভাঙতে মরিয়া। তাঁরা জানাচ্ছেন, সেই দুই হাতের প্রথম জন কুতুবউদ্দিন বছর তিরিশের যুবক। দ্বিতীয় হাত সফিকের বয়স ৪৫। কুতুবউদ্দিনের বাড়ি মালদহের বৈষ্ণবনগর এলাকার পারদেওনাপুরের চৌধুরী পাড়া গ্রামে। সফিক একই তল্লাটের বৈরাতিপাড়ার বাসিন্দা। কাকতালীয় ভাবে দু’জনে একই কোম্পানির, একই ব্র্যান্ডের লাল রঙের মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। জাল নোটের কারবার ছাড়া দু’জনের আর কোনও রোজগার নেই। দু’জনেই মোবাইলে একাধিক বাংলাদেশি সিমকার্ড ব্যবহার করে।

এনআইএ সূত্রের খবর, ও-পারের হাবিবুর মালদহে হাবিল শেখ নামে পরিচিত। গত সাত-আট বছর ধরে মালদহের দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে জাল নোট ঢোকানোর মূল কারিগর ছিল সে। হাবিল তার লোকেদের বলে দিত, মাসে গড়ে এক কোটি টাকার জাল নোট পাচার করতে হবে। এই হাবিলের বাড়ি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ এলাকার সাহাপাড়া গ্রামে। শুক্রবার র‌্যাব তাকে শিবগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে ভারতে বাতিল হাজার টাকার ৫০টি নোট-সহ। সেগুলো আসল না জাল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাবিল শেখের সঙ্গে কথা বলতে এনআইএ-র একটি দল শীঘ্রই বাংলাদেশে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Main culprit Arrested Fake currency racket
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE