Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Malbazar Flash Flood

‘জলের তোড়ে ভেসে যাচ্ছিল বাচ্চাটা, হাতটা ধরেও ফেলেছিলাম, কিন্তু ধরে রাখতে পারলাম না’

দশমীর রাতের ভয়াবহ বিপর্যয়ের দুঃস্বপ্ন কাটছে না। বিসর্জনের ঘাটে হড়পা বানের স্রোতে ভেসে যেতে দেখেছেন বহু মানুষকে। মালবাজারের বিপর্যয়ের সেই আতঙ্ক কাটেনি আহতদের।

দশমীর রাতে মাল নদীতে বিসর্জনের সময় ঘটে বিপর্যয়।

দশমীর রাতে মাল নদীতে বিসর্জনের সময় ঘটে বিপর্যয়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালবাজার শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২২ ১১:৫৭
Share: Save:

বিপদ ছুঁয়ে গেলেও কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচেছেন। তবে দশমীর রাতের ভয়াবহ বিপর্যয়ের দুঃস্বপ্ন কাটছে না। বিসর্জনের ঘাটে হড়পা বানের স্রোতে ভেসে যেতে দেখেছেন বহু মানুষকে। মালবাজারের বিপর্যয়ের পর বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও সেই আতঙ্ক কাটেনি আহতদের। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক মহিলা জানিয়েছেন, চোখের সামনেই অনেককে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে হড়পা বান। তাঁর নিজেরও বাঁ-হাত ভেঙেছে।

দশমীতে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মালবাজারের মাল নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের সময় হড়পা বানে মৃতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত আট বলে পুলিশ সূত্রে খবর। আহত হয়েছেন অনেকে। বিপর্যয় এড়াতে অনেকে আবার নদীর চরে আশ্রয় নিয়েছেন।

প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে বুধবার রাতে মাল নদীর ঘাটে গিয়েছিলেন মালবাজারের হাজার পাঁচেক বাসিন্দা। সে সময়ই ঘটে বিপর্যয়। হড়পা বানের জেরে বিপুল জলস্রোতের ভেসে যান অনেকে। তাঁদের মধ্যে দুই শিশু-সহ অন্তত আট জন মারা গিয়েছেন। ওই ঘাটেই ছিলেন এই মুহূর্তে মালবাজারের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক মহিলা। বানের তোড়ে যাঁর বাঁ-হাত ভেঙেছে। হাসপাতালের বেডে হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায়ও তিনি বলে চলেন, ‘‘আমরা সকলে বিসর্জন দেখতে গিয়েছিলাম। আচমকা বিপুল জলস্রোত এসে কয়েক মিনিটের মধ্যে আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে গেল। চোখের সামনে দেখলাম অনেককে ভেসে যেতে। আমি একাই গিয়েছিলাম ঘাটে। জলের স্রোতে কোথাও ছিটকে পড়েছিলাম। তার পর একটি জেসিবি দিয়ে আমাদের পাড়ে তোলা হল। সেখান থেকে পড়ে গিয়ে আমার হাতটা ভেঙে গেল।’’

নদীতে বিসর্জন দেখতে গিয়েছিলেন মালবাজারের আর এক বাসিন্দা হুসেন। দুর্ঘটনায় জখম হয়ে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। দুর্ঘটনার সময় তাঁর সামনে দিয়ে এক শিশুকে ভেসে যেতে দেখেছেন। তবে চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারেননি। হুসেন বলেন, ‘‘প্রবল জলস্রোতের মধ্যেই একটি শিশুর হাত আমি ধরতে পেরেছিলাম। কিন্তু তাকে ধরে রাখতে পারিনি। ঢেউয়ের তোড়ে সে যে কোথায় ভেসে গেল, তা জানি না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE