নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: দেবাশিষ রায়।
বিগত কয়েক বছর ধরে অনেক বার ‘ম্যান মেড’ বন্যার পরিস্থিতি রুখে দিয়েছি, কিন্তু এ বার গত কয়েক দিনের লাগাতার বৃষ্টি এবং ভরা কোটালের জেরে দক্ষিণবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার নবান্নে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার পড়শি রাজ্যের বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়ায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এখনই কেন্দ্রের সাহায্য চাওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি। দক্ষিণবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতির জন্য তাঁর আসন্ন উত্তরবঙ্গ সফরও বাতিল করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কাল, সোমবার তাঁর উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। গত মাসেই পাহাড়ে ধস নামার পরে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখতে দার্জিলিং গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বারও জলপাইগুড়ি, হলদিবাড়িতে সরকারি কর্মসূচির পাশাপাশিই ধস-বিধ্বস্ত এলাকার পুনর্গঠনের কাজ দেখার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু রবিবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বর্ষণের জন্য তাঁর উত্তরবঙ্গ সফর আপাতত বাতিল।
ডিভিসি, তিলপাড়া, গালুডি প্রভৃতি জলাধার থেকে জল ছাড়ায় এ বছর পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে চলে গিয়েছে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর। সোমবার ডিভিসি আরও এক লক্ষ কিউসেক জল ছাড়তে বলে জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, রাজ্যের ১২টি জেলা বন্যা প্রভাবিত। এর মধ্যে মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান, বীরভূম, হাওড়া এবং হুগলি— পাঁচটি জেলার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। জেলাগুলিতে এ পর্যন্ত ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১২টি জেলার ২১০ ব্লকের ৪৭টি পুরসভার প্রায় ৩৬ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত। ৫৮ হাজার বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। এই ক’দিনে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ। এ দিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিভিন্ন মন্ত্রীরা ত্রাণ ব্যবস্থা তদারকি করতে ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় চলে গিয়েছেন। তিনি নিজে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন। প্রয়োজনে বিষয়টি তদারকি করতে তিনি রবিবার নবান্নে থাকতে পারেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বন্যা পরিস্থিতির দিকে ২৪ ঘণ্টা নজর রাখা হচ্ছে। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ইতিমধ্যেই দু’বার বৈঠক হয়েছে। উদ্ধারকার্য এবং ত্রাণ সামগ্রী বিলি বন্টন করতে দুর্গত জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy