রাজ্যে তৃণমূল জমানার ছ’বছরে অন্তত ৮১ লক্ষ কর্মসংস্থানের দাবিকে চ্যালেঞ্জ করেছিল বিরোধীরা। শুক্রবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মসংস্থানের যে হিসাব দিলেন, তাতেও সংখ্যা তিন লাখ পেরোয় না। বাদ বাকি যা, সবটাই এখনও পর্যন্ত প্রস্তাবিত!
এ দিন রাজ্যপালের ভাষণের উপর বিতর্কের শেষে মুখ্যমন্ত্রীর জবাবি বক্তৃতা বয়কট করেছিলেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়করা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, শুধু মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ টিভিতে সরাসরি দেখানোর অনুমতি দেওয়া হবে কেন? অন্যদের বেলায় কীসের বাধা? অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, এ ক্ষেত্রে তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। ক্ষুব্ধ বিরোধী পক্ষ ওয়াক আউট করে।
বিরোধীবিহীন বিধানসভায় এ বার কার্যত বাধাহীন ভাবেই বিরোধীদের তোলা একের পর এক অভিযোগ খণ্ডন করেন মুখ্যমন্ত্রী। কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কোথায় কর্মসংস্থান চোখে দেখতে পাচ্ছেন না? গত এক বছরে শিক্ষকই তো নেওয়া হয়েছে ১ লক্ষ। প্রতি ক্যাবিনেটে ১০-২০ হাজার করে নতুন পদ সৃষ্টি হচ্ছে। ৪০ হাজার কনস্টেবল, ১ লক্ষ ৪০ হাজার সিভিক পুলিশ নেওয়া হয়েছে। এশিয়ার সিলিকন ভ্যালিতেও কর্মসংস্থান হবে। বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ২০ লক্ষ কর্মসংস্থানের প্রস্তাব আছে।’’
রাজ্যপালের ভাষণে বলা হয়েছে, সরকার ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পে সব জেলায় ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে ৭০ লক্ষ সাইকেল তুলে দিয়েছে। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান দাবি করেছিলেন, ওই ৭০ লক্ষ সাইকেল কোথা থেকে এল, সে বিষয়ে সরকার শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বিধানসভায় বলেন, ‘‘অমিত মিত্র ই টেন্ডার করে ওই সাইকেল দিয়েছেন। তার পরেও যদি প্রশ্ন তোলেন, কিছু করার নেই। বক্তব্যের সমর্থনে কাগজ দেখান। না পারলে প্রিভিলেজ আনব।’’ তার জবাবে পরে বিধানসভার প্রেস কর্নারে মান্নান বলেন, ‘‘কোথা থেকে সাইকেলগুলি এল, সে জবাব কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী দিলেন না! কেন আসানসোলের কারখানাটিকে পুনরুজ্জীবিত করে সেখান থেকে সাইকেল আনা হল না? উনি প্রিভিলেজ আনলে আনুন। আমরা জবাব দেব।’’
আইনশৃঙ্খলার অভাব নিয়ে বিরোধীদের তোলা প্রশ্নের জবাবে মমতা এ দিন পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটেন। তাঁর বক্তব্য, তৃণমূল জমানায় কোথাও কেউ আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু বাম জমানায় তা হত না। উদাহরণ হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সম্প্রতি বাসন্তী কাণ্ডে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু নন্দীগ্রাম-কাণ্ডে লক্ষ্মণ শেঠ অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে বামফ্রন্ট আমলে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর আরও দাবি, কোনও ঘটনায় দু’-এক জন তৃণমূলের কর্মী জড়িয়ে পড়লে তার জন্য গোটা দলকে দায়ী করা যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy