Advertisement
E-Paper

সংখ্যালঘু খাতে টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র: মমতা

আর এ দিন সংখ্যালঘুদের এক অনুষ্ঠানে তাঁর অভিযোগ, ‘‘সংখ্যালঘু দফতরের টাকা ওরা (কেন্দ্র) দিতেই চায় না। অনেক টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা আগের বারেও নিজেদের টাকায় স্কলারশিপ দিয়েছি। এ বারেও বলেছি, নিজেদের টাকা থেকেই তা দেবো। সংখ্যালঘু ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করবে না, মানুষ হবে না— এটা আমি দেখতে চাই না।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৯
সংবর্ধনা: সংখ্যালঘুদের একটি অনুষ্ঠানে এক ছাত্রের হাতে পুরস্কার ও মানপত্র তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

সংবর্ধনা: সংখ্যালঘুদের একটি অনুষ্ঠানে এক ছাত্রের হাতে পুরস্কার ও মানপত্র তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

চলতি তরজাটার ধরতাই হল ‘কার টাকা, কে দেয়!’ এই নিয়ে রাজ্য আর কেন্দ্রের মধ্যে তোপ, পাল্টা তোপ সমানে চলেছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে আবার কামান দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তরজার তুঙ্গ মুহূর্তে এসে আক্রমণের জন্য সংখ্যালঘুদের একটি অনুষ্ঠানকেই বেছে নিলেন তিনি।

সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের পর্যালোচনা বৈঠকের পরে মমতা জানিয়েছিলেন, কয়েকটি প্রকল্পে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রের কাছে নবান্নের পাওনা বকেয়া রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। আর এ দিন সংখ্যালঘুদের এক অনুষ্ঠানে তাঁর অভিযোগ, ‘‘সংখ্যালঘু দফতরের টাকা ওরা (কেন্দ্র) দিতেই চায় না। অনেক টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা আগের বারেও নিজেদের টাকায় স্কলারশিপ দিয়েছি। এ বারেও বলেছি, নিজেদের টাকা থেকেই তা দেবো। সংখ্যালঘু ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করবে না, মানুষ হবে না— এটা আমি দেখতে চাই না।’’

দিল্লির বিরুদ্ধে মমতার লাগাতার বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে সোমবার মুখ খুলেছিলেন কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর পাল্টা বক্তব্য ছিল, টাকা কেন্দ্রের। প্রকল্প কেন্দ্রের। অথচ নিজের খুশিমতো নাম দিয়ে নাম কিনছেন মুখ্যমন্ত্রী! বাবুলের সাফ কথা, ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট বা কাজ শেষে টাকার সদ্ব্যবহার শংসাপত্র না-দিলে কেন্দ্রের কাছ থেকে বরাদ্দ যে পাওয়া যায় না, সেটা মুখ্যমন্ত্রীর জানা উচিত।

বিতর্ক এখানেই থেমে যায়নি। এ দিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের বার্ষিক অনুষ্ঠানে মমতার কটাক্ষ, ‘‘কেউ কেউ ফুসফাস করে বলে, ‘কেন্দ্রের টাকা’। টাকাটা এল কোথা থেকে! রাজ্যের থেকে। মাছের তেলে মাছ ভাজা। আমার রাজ্য থেকে ৪০ হাজার কোটিরও বেশি টাকা তুলে নিয়ে যাও। দাও কত? বড়জোর ১৫ হাজার কোটি দাও।’’ এর পরেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমাদের থেকে টাকা তুলে নিয়ে যেয়ো না। তা হলে আমরা এক পয়সাও চাইব না। আমরা ভিক্ষে চাই না। আমাদের টাকার আমাদেরই ভাগ দেবে না। আবার বলবে, কেন্দ্র দিচ্ছে। অত সোজা কথা নয়!’’

এত সব ‘বঞ্চনা’র পরেও সংখ্যালঘুদের উন্নয়নে রাজ্য এগিয়ে চলেছে বলে দাবি করেন মমতা। সরকারের কাজের ফিরিস্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘২০১১ সালে সংখ্যালঘু দফতরের বাজেট ছিল ৪৭২ কোটি টাকা। মাত্র ছ’বছরে তা আট গুণ বেড়ে ৩৭১৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।’’ পালাবদলের পরে প্রতিটি জেলায় ‘সংখ্যালঘু ভবন’, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, হজ টাওয়ার হয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজনৈতিক মহলের মতে, কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ নতুন কিছু নয়। অতীতে, বিশেষত জ্যোতি বসুর আমলে কেন্দ্রের বিরদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগকে হাতিয়ার করে বহু মিটিং-মিছিল, বাংলা বন্‌ধও হয়েছে। সেই একই ধরনের অভিযোগ এখন তুলছেন মমতাও। যার মোদ্দা কথা, কর বাবদ রাজ্য থেকে টাকা নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র। অথচ টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে হাত গুটিয়ে নিচ্ছে।

বিজেপি, মোদীর নাম না-করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশের নেতা কেমন হবে? যে দেশকে নিয়ে চলবে, গাঁধীজির মতো হবে, নেতাজির মতো হবে। আর যারা দেশকে ভাঙে, তারা দেশের নেতা নয়। তারা একটা চেয়ারের নেতাও হতে পারে না। কখনও আসে, কখনও চলে যায়। তাদের স্থায়িত্ব থাকে না।’’ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় কিছু শক্তি সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘‘অজানা-অচেনা লোক টাকার থলি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মানুষে মানুষে ভাগাভাগি করার চেষ্টা করছে। এদের গুরুত্ব দেবেন না। দেখতে পেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেবেন।’’

Mamata Banerjee Central Government Fund Release Minorities মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy