Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

‘নির্মল বাংলা’, কেন্দ্রের সঙ্গে টক্কর মমতার

কেন্দ্রীয় সরকারের বহু আগেই ‘নির্মল বাংলা’র কাজের সূচনা করেছিল এই রাজ্য। আর দেশের ২৯টি রাজ্যের মধ্যে বাংলাই ইতিমধ্যে চার-চারটি জেলাকে ‘নির্মল জেলা’য় রূপান্তরিত করে ফেলেছে। যার তকমা ভারতের আর কোনও রাজ্যের পকেটেই নেই।

নির্মল বাংলা নিয়ে চিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ছবি: প্রকাশ পাল।

নির্মল বাংলা নিয়ে চিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ছবি: প্রকাশ পাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২৮
Share: Save:

কেন্দ্রীয় সরকারের বহু আগেই ‘নির্মল বাংলা’র কাজের সূচনা করেছিল এই রাজ্য। আর দেশের ২৯টি রাজ্যের মধ্যে বাংলাই ইতিমধ্যে চার-চারটি জেলাকে ‘নির্মল জেলা’য় রূপান্তরিত করে ফেলেছে। যার তকমা ভারতের আর কোনও রাজ্যের পকেটেই নেই।

বস্তুত নির্মল বাংলা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি টক্করের প্রতিযোগিতায় নেমে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চুঁচুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে বলেন, “কাজ করার ইচ্ছে থাকলেই করা যায়। এক শ্রেণির মানুষ আছেন, যাঁরা কাজ না করে কেবলই খুঁত ধরে বেড়ান। ভাবুন এক বার, একটা জেলায় এমন কোনও বাড়ি নেই, যেখানে শৌচাগার নেই। এই কাজ কী সোজা ব্যাপার!” মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, “আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, এই বছরের মধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং বর্ধমানকে নির্মল জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। আর আগামী বছরের মধ্যে আরও ছ’টি জেলাকে নির্মল হিসেবে ঘোষণা করা হবে।”

এদিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম-সহ অন্যরা। ছিলেন ইউনিসেফের এ দেশের প্রধান লুই জর্জ আর্সেনাল। মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে ‘নির্মল জেলা’ পুরস্কার নেওয়ার জন্য এসেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। যে সব জেলায় এই কর্মসূচি রূপায়ণের কাজ চলছে, মুখ্যমন্ত্রী বারে বারেই সেখানকার জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের বাহবা দেন।

মমতার ঘোষণা, “এ বার থেকে এই প্রকল্পে যারা ভাল কাজ করবে, সেই জেলার জেলাশাসককে পুরস্কার হিসেবে ১০ লক্ষ টাকা ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। পরবর্তী ক্ষেত্রে ওই টাকা তাঁরা জেলার উন্নয়নে খরচ করতে পারবেন।” কেন্দ্রকে রীতিমত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্য এই প্রকল্প শুরু করেছে ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর। আর কেন্দ্র শুরু করেছে পরের বছর। আপনারা দেখে নেবেন, ২০১৮ সালের মধ্যে বাংলার সমস্ত জেলাই নির্মল জেলা হিসেবে ঘোষিত হবে।”

হুগলির নবনির্মিত প্রশাসনিক ভবনে এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা কোনও কোনও ইস্যুতে কর্তাদের তোপ দাগলেও প্রকাশ্য জনসভায় কিন্তু বেশ ভাল ‘মুডে’ই ছিলেন। বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ মঞ্চে উঠে তিনি বলেন, “রাত পোহালেই মহালয়া। জাগো দুর্গা, দশপ্রহরণধারিণী...। নির্মল পবিত্র বাংলা গড়ে মায়ের চরণে নিবেদন করছি।” এর পাশাপাশি তিনি চারটি নতুন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। যার মধ্যে রয়েছে, কোনও শিশু জন্মালেই একটি গাছের চারা দেওয়া হবে। প্রতি বছর ১৫ লক্ষ গাছের চারা বিলি করা হবে। এ ছাড়াও, মৃতদেহ সৎকারের ক্ষেত্রে অসচ্ছ্বল পরিবারকে ২ হাজার টাকা দেবে সংশ্লিষ্ট পুরসভা বা পঞ্চায়েত। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বিভিন্ন কবরস্থান পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে শ্মশান সংস্কারের কাজ করা হবে। প্রসঙ্গক্রমে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অনেক সময় দেখা যায় কাঠের অভাবে আধপোড়া দেহ ফেলে রেখেই লোকজন পালিয়ে যাচ্ছে। তাতে দূষণ যেমন হয়, মৃতের প্রতি অশ্রদ্ধা হয়। বাংলাকে নির্মল করতে এই সব নতুন নতুন প্রকল্প রূপায়ণই আমাদের সরকারের লক্ষ্য।”

বকেয়া প্রকল্পের কাজ কেন নির্দিষ্ট গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়নি, তার জবাব যেমন মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে সরকারি কর্তাদের কাছে চেয়েছেন, পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্পের কথা ঘোষণাও করেছেন জনসভায়। এ দিন চন্দননগরের বহু আকাঙ্খিত উড়ালপুল-সহ মোট ৬২টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৩১টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nirmal Bangla project mamata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE