Advertisement
E-Paper

‘আপনারা অন্ধকারে থাকতে চান, না আলোয়?’ ভাঙড়ে কথা চান মমতা

ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের প্রকল্প হলে গ্রামের মহিলাদের গর্ভ নষ্ট হবে, জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে—এমন গুজব রটেছিল। যার জেরে গত জানুয়ারিতে ওই প্রকল্পের বিরোধিতায় তেতে উঠেছিল ভাঙড়। কিন্তু এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সেই গুজব নস্যাৎ করে গ্রামবাসীদের আশ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

অত্রি মিত্র ও শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৭ ০৪:২৭
চা-বিরতি: ভাঙড়ে সভা সেরে ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী। বাসন্তী হাইওয়ের বামনঘাটায়। নিজস্ব চিত্র।

চা-বিরতি: ভাঙড়ে সভা সেরে ফেরার পথে মুখ্যমন্ত্রী। বাসন্তী হাইওয়ের বামনঘাটায়। নিজস্ব চিত্র।

আন্দোলনকারীরা তাঁর সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন ছ’মাস আগে। সোমবার ভাঙড়ে গিয়ে আলোচনার মাধ্যমেই পাওয়ার গ্রিড নিয়ে সমস্যা সমাধানে নিজের আগ্রহের কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে ভোজেরহাটের জনসভায় মমতা ওই আগ্রহের কথা জানালেও সঙ্গে কিছু শর্ত দিয়েছেন। তিনি আলোচনা করতে চান শুধু গ্রামবাসীদের সঙ্গে। কোনও নেতা বা রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে নয়। আন্দোলনকারীদের নেতাদের ‘মাওবাদী’ আখ্যা দিয়ে হুমকিও দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কয়েকটা মাওবাদী লোক, আপনাদের কাছ থেকে টাকা তুলছে। আপনাদের দেখিয়ে ভেনিজুয়েলা থেকে টাকা নিচ্ছে। ওই টাকা নিয়ে দু’দিন বাদে পালিয়ে যাবে।’’ তাঁর হুমকি, ‘‘ওরা অস্ত্র এনে গ্রামে মজুত করেছে। এখনই আত্মসমর্পণ না করলে, খুঁজে বের করবই। আজ অথবা কাল।’’

এর পরেই মমতা গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘গ্রামবাসীরা যদি মনে করেন, কোনও ব্যাপারে কথা বলতে চান, নিশ্চয়ই বলতে পারেন। বাইরের কোনও লোকের সঙ্গে কথা বলব না। গ্রামের কেউ যদি কথা বলতে চান, পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি দিয়ে জানাবেন। আমি সময়মতো ডেকে নেব।’’ এখানেই শেষ নয়, বক্তব্যের শেষ লগ্নে পুলিশ সুপারের পাশাপাশি একে একে মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতা পুলিশের কমিশনারকেও মঞ্চে দাঁড় করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার পুরো টিম এ কথা বলতে এসেছে, আবদার যদি ন্যায্য হয়, মানব। অন্যায় হলে মানব না।’’

আরও পড়ুন:মন গলেনি, মিছিল মাছিভাঙায়

ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের প্রকল্প হলে গ্রামের মহিলাদের গর্ভ নষ্ট হবে, জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হবে—এমন গুজব রটেছিল। যার জেরে গত জানুয়ারিতে ওই প্রকল্পের বিরোধিতায় তেতে উঠেছিল ভাঙড়। কিন্তু এ দিন মুখ্যমন্ত্রী সেই গুজব নস্যাৎ করে গ্রামবাসীদের আশ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সমাবেশে আসা কয়েক হাজার মানুষের কাছে তাঁর ঘোষণা, ‘‘বিদ্যুৎ না থাকলে সেচ হবে কোথা থেকে! চাষ হবে কোথা থেকে! কলকারখানা হবে কোথা থেকে! ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা হবে কোথা থেকে! বিদ্যুতের জন্য গর্ভ নষ্ট হয় না। কখনও ধান নষ্ট হয় না। এগুলি মিথ্যে কথা বলা হচ্ছে।’’ ভাঙড় আন্দোলন যে আদতে উন্নয়ন-বিরোধী একটি আন্দোলন এবং সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের সঙ্গে একাসনে কখনওই বসানো যায় না, তা-ও স্পষ্ট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে বিদ্যুৎ প্রকল্পের পক্ষে গ্রামবাসীদের ভোটও নেন তিনি।

মমতার প্রশ্ন, ‘‘আপনারা অন্ধকারে থাকতে চান, না আলোয়?

হাত তুলে জনতা—আলোয়।

ফের মমতা—যদি কেউ ভাবেন, অন্ধকারে থাকতে চান, তাঁরাও হাত তুলতে পারেন।

কেউ হাত তোলেননি।

মুখ্যমন্ত্রীর মুখে স্বস্তি।

Bhangar Mamata Banerjee Tmc Power Grid মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঙড়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy