Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তাড়াচ্ছিস কবে, বন্ধুর হাত ধরে প্রশ্ন ডাক্তারের

দু’জনার দু’টি পথ এখন দুই দিকে গিয়েছে বেঁকে। তবু বিধানসভার লবির এক মোড়ে দু’জনের দেখা হয়ে গেল! এক জন কাছে টানলেন। অন্য জন সাড়াও দিলেন। বরফ তবু পুরোটা গলল না!

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৬ ০৩:১৪
Share: Save:

দু’জনার দু’টি পথ এখন দুই দিকে গিয়েছে বেঁকে। তবু বিধানসভার লবির এক মোড়ে দু’জনের দেখা হয়ে গেল! এক জন কাছে টানলেন। অন্য জন সাড়াও দিলেন। বরফ তবু পুরোটা গলল না!

এক জন বেরোচ্ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের বৈঠকে যোগ দেবেন বলে। অন্য জনের গন্তব্য বিধানসভায় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) বৈঠক। মুখোমুখি পড়ে যেতে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানই টেনে ধরলেন পিএসি চেয়ারম্যান মানস ভুঁইয়ার হাত— ‘‘কী ডাক্তার, রাগ পড়েছে?’’ রাগী মুখেই

মানসবাবু প্রথমে চাইছিলেন না আলিঙ্গনে ধরা দিতে। তবু এড়াতেও পারলেন না। মান্নানের জন্য পাল্টা প্রশ্ন করে বসলেন, ‘‘তাড়াচ্ছিস কবে?’’ বয়সে এক বছরের অনুজ পিএসি চেয়ারম্যানকে বিরোধী দলনেতা বোঝানোর চেষ্টা করলেন, দল থেকে তাঁকে তাড়ানোর জন্যে কেউ কিছু করছে না। মানসবাবুও

শুনিয়ে দিলেন, জোর করে তাঁকে খলনায়ক বানিয়ে দেওয়া হল! অবিচার হল তাঁর প্রতি।

সংক্ষিপ্ত এই মোলাকাতের পরে শুক্রবার মান্নান প্রদেশ কংগ্রেসের যে বৈঠকে গিয়েছিলেন, সেখানে মানসবাবুকে নিয়ে আলাদা করে কোনও আলোচনা হয়নি। মানস-অনুগামী বলে পরিচিত প্রদেশ কংগ্রেসের দুই সাধারণ সম্পাদক অজয় ঘোষ, মনোজ পাণ্ডে এবং প্রদেশ সংখ্যালঘু শাখার চেয়ারম্যান খালেদ এবাদুল্লা উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও। তবে দুই বিধায়ক শঙ্কর মালাকার ও মোহিত সেনগুপ্ত বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, যিনি দলের শৃঙ্খলা মানছেন না, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না কেন? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীই তাঁদের নিরস্ত করেছেন এই বলে যে, এটা এই বৈঠকের আলোচ্য নয়। পরে প্রশ্নের জবাবে অধীর অবশ্য বলেছেন, ‘‘কোনও শৃঙ্খলাভঙ্গ মানব না। যথাসময়েই ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।’’ এর পরে পিএসি-র বৈঠকে কি কংগ্রেস বিধায়কেরা যাবেন? অধীরের জবাব, ‘‘পিএসি কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়! রাজনৈতিক অধিকারেই সদস্যেরা কমিটিতে যেতে পারেন। কিন্তু কংগ্রেস যাকে চাইছে না, তাকে সরে যেতে হবে।’’

কংগ্রেসের অবস্থানেই পরিষ্কার, তারা মানসবাবুকে আপাতত গুরুত্বহীন করে রাখতে চাইছে। আবার মানসবাবুও নির্বিকার। বিধানসভার দো’তলায় পিএসি চেয়ারম্যানের ঘর তৈরির কাজে তাগাদা করেছেন। অধীরকে পাঠানো তাঁর যে লম্বা এসএমএস আগের দিন ডেলিভারিই হচ্ছিল না, তার জবাবে প্রদেশ সভাপতির ই-মেল পেয়েও বেশ নির্লিপ্তই আছেন। অধীর তাঁকে জানিয়েছেন, মানসবাবু চাইলে দিল্লি গিয়ে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন। সবংয়ে খুনের ঘটনায় তাঁর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা বেরোলেও অধীর-মান্নানেরা কেন প্রতিবাদী কর্মসূচি নিলেন না, তা নিয়ে মানসবাবুর রাগ এখনও গরগরে। ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, কংগ্রেসে তাঁর নেতা শুধু দু’জন— সনিয়া আর রাহুল গাঁধী!

পথে দেখা হয়ে গিয়ে আলিঙ্গনটা বোধহয় বৃথাই গেল!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mannan manas bhunia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE