Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সুরক্ষার আশা দিয়ে বাড়ছে ম্যানগ্রোভ, বাঁচবে কি না প্রশ্ন

শহরাঞ্চলে তো সবুজ কোণঠাসা। ফরেস্ট সার্ভে অব ইন্ডিয়া জানাচ্ছে, ২০১৫ এবং ২০১৭ সালের মধ্যে রাজ্যের সংরক্ষিত বনাঞ্চলেও সবুজের পরিমাণ কমেছে।

সমীক্ষা বলছে, ২০১৫ এবং ২০১৭ সালের মধ্যে রাজ্যে ম্যানগ্রোভের সংসার বেড়েছে।

সমীক্ষা বলছে, ২০১৫ এবং ২০১৭ সালের মধ্যে রাজ্যে ম্যানগ্রোভের সংসার বেড়েছে।

কৌশিক ঘোষ ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০২:৫৯
Share: Save:

শহরাঞ্চলে তো সবুজ কোণঠাসা। ফরেস্ট সার্ভে অব ইন্ডিয়া জানাচ্ছে, ২০১৫ এবং ২০১৭ সালের মধ্যে রাজ্যের সংরক্ষিত বনাঞ্চলেও সবুজের পরিমাণ কমেছে। তবে তাদেরই সমীক্ষা বলছে, ওই সময়কালের মধ্যে রাজ্যে ম্যানগ্রোভের সংসার বেড়েছে। আয়তনের দিক থেকে সেই বৃদ্ধি প্রায় আট বর্গকিলোমিটার। রাজ্যের বৃহত্তম ‘রামসর’ তালিকাভুক্ত এলাকা বলে চিহ্নিত সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভের ক্ষেত্রে এই সমৃদ্ধি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বন দফতরের অনেকে।

তবে এই বৃদ্ধি আদৌ কতটা কাজে দেবে, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। তাঁরা বলছেন, সুন্দরবনে নানা কারণে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে। ফলে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল বাড়লেও তা কমে যেতে পারে অচিরেই। ‘‘ঝড়খালিতে ইদানীং ইকো-টুরিজ়ম বা পরিবেশ-পর্যটনের নামে প্রচুর ম্যানগ্রোভ কাটা হয়েছে। সুন্দরবনের মতো পরিবেশগত দিক থেকে সংবেদনশীল এবং রামসর তালিকাভুক্ত এলাকায় এটা মানা যায় না,’’ বলছেন কলকাতা

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানের শিক্ষক পুনর্বসু চৌধুরী।

সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর সঙ্গে যুক্ত পরিবেশকর্মী অজন্তা দে-র অভিযোগ, ভেড়ি তৈরির জন্য কৌশলে হেক্টরের পর হেক্টর ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করা হচ্ছে। এটাও পরিবেশের ক্ষতি করছে। তাঁর বক্তব্য, সুন্দরবনে শুধু ম্যানগ্রোভের চারা লাগিয়েই অরণ্য বাঁচানো যাবে না। অরণ্যের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকেও সংরক্ষণ করে যেতে হবে।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঝড়খালি এলাকায় পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের জন্য কিছু গাছ কাটা হয়েছে। তবে পরিবেশবিধি মেনে সমপরিমাণ গাছ লাগানো হবে।’’ বস্তুত, জাতীয় পরিবেশ আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে দায়ের করা সুন্দরবন সংক্রান্ত মামলাতেও উঠে এসেছিল ঝড়খালির কথা। আদালতবান্ধব হিসেবে নিযুক্ত পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের রিপোর্টেও সেই প্রসঙ্গ উঠেছিল।

পরিবেশবিদেরা বলেন, ম্যানগ্রোভ শুধু সুন্দরবনের জন্য নয়, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের নিরাপত্তার জন্যও জরুরি। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের ঝাপটা অনেকটাই রুখে দেয় ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ‘ঢাল’। পরিবেশবিদেরা বলেন, ম্যানগ্রোভ না-থাকলে ২০০৯ সালে আয়লার ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়ত। তা ছাড়া ম্যানগ্রোভ অরণ্যের উপরে শুধু বাঘ নয়, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র এবং বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য নির্ভরশীল। সেই ঢাল নষ্ট হলে শুধু সুন্দরবন নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হবে কলকাতাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mangrove Forest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE