Advertisement
E-Paper

দক্ষিণে দাপট দহনের, দুর্যোগে দুর্ভোগ উত্তরে

বর্ষা এখনও দূরেই। তবে হঠাৎই সমুদ্র থেকে ধেয়ে দখিনা বাতাসের দৌলতে দুঃসহ গরম থেকে কিঞ্চিৎ স্বস্তির সূচনা হয়েছিল রবিবার। কিন্তু আজ, সোমবার থেকেই তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা আবার বাড়তে থাকবে এবং অস্বস্তিও বাড়বে বলে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস। তাপপ্রবাহে ভুগতে থাকা বীরভূম, বর্ধমানে এক পশলা বৃষ্টি এ দিন তাপমাত্রা কমিয়ে দেয় বেশ কিছুটা। বৃষ্টি বাঁকুড়াকে সামান্য স্বস্তি দিলেও ঝড়ে গাছ পড়ে, বাড়ি ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে জেলার কয়েকটি ব্লক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৫ ০৪:২৮
তপ্ত দুপুর। জিরোচ্ছেন ট্যাক্সিচালকেরা। রবিবার দক্ষিণ কলকাতায় বিশ্বনাথ বণিকের তোলা ছবি।

তপ্ত দুপুর। জিরোচ্ছেন ট্যাক্সিচালকেরা। রবিবার দক্ষিণ কলকাতায় বিশ্বনাথ বণিকের তোলা ছবি।

বর্ষা এখনও দূরেই। তবে হঠাৎই সমুদ্র থেকে ধেয়ে দখিনা বাতাসের দৌলতে দুঃসহ গরম থেকে কিঞ্চিৎ স্বস্তির সূচনা হয়েছিল রবিবার। কিন্তু আজ, সোমবার থেকেই তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা আবার বাড়তে থাকবে এবং অস্বস্তিও বাড়বে বলে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস।

তাপপ্রবাহে ভুগতে থাকা বীরভূম, বর্ধমানে এক পশলা বৃষ্টি এ দিন তাপমাত্রা কমিয়ে দেয় বেশ কিছুটা। বৃষ্টি বাঁকুড়াকে সামান্য স্বস্তি দিলেও ঝড়ে গাছ পড়ে, বাড়ি ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে জেলার কয়েকটি ব্লক।

প্রাকৃতিক কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন উত্তরবঙ্গের বাসিন্দারাও। তবে তার কারণ দক্ষিণবঙ্গের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। আসলে এই মুহূর্তে দুই বঙ্গের হাওয়ার চরিত্রই পুরোপুরি আলাদা। দক্ষিণে অত্যধিক তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতাই মূল সমস্যা। উত্তরবঙ্গে খলনায়ক কিন্তু প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি। শনিবার রাতের প্রচণ্ড ঝড়ে উত্তরবঙ্গের ছ’টি জেলায় প্রচুর গাছ পড়েছে, বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎহীন হয়ে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। কোচবিহার, তুফানগঞ্জে অজস্র কাঁচাবাড়ি মুখ থুবড়ে পড়েছে। বঙ্গের দু’প্রান্তে আরও দুর্ভোগের ইঙ্গিত দিয়েছেন আবহবিজ্ঞানীরা। বাতাসের চারিত্র অনুযায়ী ভোগান্তিটাও হবে দুই বঙ্গে দু’রকম। উত্তরবঙ্গে আরও ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। আর দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ফের অস্বস্তি চেপে বসার ইঙ্গিত রয়েছে।

কয়েক দিনের প্রচণ্ড দহনের পরেএ দিন মহানগরীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে আসে ৩৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর্দ্রতাও কমে যায় কিছুটা। তবে দখিনা হাওয়া হঠাৎ তার গতি বাড়িয়েদিল কেন, তার ব্যাখ্যা নেই হাওয়া অফিসের কাছে। তারা বলছে, আজ, সোমবার থেকে দখিনা বাতাসের তীব্রতা কমে যেতে পারে। ফের বাড়বে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা। এবং অস্বস্তিও।

দখিনা বাতাসের দাক্ষিণ্যে যে-সামান্য স্বস্তি মিলেছে, তাতে আবহবিদদের মতো চিকিৎসকেরাও আশ্বস্ত হতে পারছেন না। পরিস্থিতি খারাপ বুঝেই সতর্ক হতে বলছেন তাঁরা। বাতাসে ভরপুর আর্দ্রতার কথা মাথায় রেখে ডাক্তারেরা বেশি করে জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে বলছেন ভাজাভুজি এড়িয়ে চলার কথাও। নিতান্ত নিরুপায় না-হলে দুপুরে রাস্তায় বেরোতেও নিষেধ করছেন চিকিৎসকেরা। গরমের সময় তীব্র তৃষ্ণায় অনেকেই রাস্তাঘাটের লেবুজল, ঘোল বা শরবতের মতো পানীয় কিনে খান। সে-দিক থেকেও সতর্ক থাকতে বলেছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা বলছেন, রাস্তাঘাটের দূষিত জলে তৈরি শরবত, ঘোল বা অন্যান্য পানীয় হয়তো তাৎক্ষণিক পিপাসা মেটাবে। কিন্তু আখেরে তা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। কারণ, ওই ধরনের পানীয় থেকে জন্ডিস কিংবা পেট খারাপের আশঙ্কা প্রবল। অর্থাৎ চটজলদি তেষ্টা মেটাতে গিয়ে শরীরকে আরও বিপদে ফেলে দেওয়ার আশঙ্কা থাকছে। “এই অবস্থায় বাড়ি থেকে জলের বোতল নিয়ে বেরোনোই ভাল,” বিধান দিলেন এক চিকিৎসক।

গরমের দাপট প্রভাব ফেলছে নাগরিক পরিষেবাতেও। জলের পাইপ সারানোর এক ব্যবসায়ী জানালেন, এই তীব্র গরমে মিস্ত্রিদের দিয়ে সারা দিন কাজ করানো যাচ্ছে না। যতটুকু যা করা সম্ভব, ভোরের দিকেই সেরে ফেলতে হচ্ছে। ধাক্কা খাচ্ছে পরিবহণও। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা থেকে মানুষজনের মতোই কমে যাচ্ছে যানবাহন। দুপুরে ট্যাক্সিচালকদের ছাড় দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছে সিটু। তাতে সমর্থনও পেয়েছেন তাঁরা। দুপুরে ট্যাক্সি প্রত্যাখ্যান করলে চালকদের জরিমানা না-করার জন্য আর্জি জানিয়েছে তৃণমূল প্রভাবিত বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন।

north bengal thunderstorm south bengal heatwave south bengal hot west bengal weather state weather latest abpnewsletters
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy