সবংয়ে ছাত্র পরিষদ কর্মী খুনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর তিন কর্মী-সমর্থক গ্রেফতার হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় আসরে নামল শাসক দল। সোমবার সবংয়ের তেমাথানিতে সভা করে জেলা তৃণমূল নেতারা ঘটনার সঙ্গে দলীয় যোগ ঝেড়ে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা চালালেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত এবং সবংয়ের মানুষের কথা শুনে মনে হচ্ছে ঘটনায় দলের কেউ যুক্ত নয়। ধৃত তিনজনও যুক্ত নয় বলেই মনে করছি। পুলিশ তদন্ত করছে।’’ টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরির বক্তব্য, “কোনও তৃণমূল কর্মী খুনের মতো পাপ করেছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি না।’’
গত ৭ অগস্ট সবং সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয় চত্বরেই ছাত্র পরিষদ কর্মী কৃষ্ণপ্রসাদ জানাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার ১২ ঘন্টার বাংলা বন্ধ ডেকেছে কংগ্রেস। এ দিনের সভা থেকে বন্ধ ব্যর্থ করার আহ্বান জানান তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষ বলেন, “ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠী কোন্দলে কৃষ্ণকান্ত জানার মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। আর সেই মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে মানস ভুঁইয়ারা রাজনীতি করছেন।’’ এ দিনের সভায় তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব ছিলেন না। দলীয় সূত্রে খবর, তদন্ত শেষের আগে এই সভায় তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব উপস্থিত থাকতে চাননি।
সবংয়ে তৃণমূলের সভা
সবংয়ে সিপিএমের সঙ্গে আঁতাত নিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূল বরাবর পরস্পরের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে অভিযোগের মাত্রা আরও বেড়েছে। এ দিনের সভাতেও সেই সুর শোনা গিয়েছে সবংয়ের তৃণমূল নেতা তথা জেলা কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির গলায়। তিনি বলেন, “এই সবংয়ে মানস ভুঁইয়ারা বন্ধ ডাকলে সিপিএম সমর্থন করে। আর সিপিএমের ডাকা বনধে মানস ভুঁইয়ারা সমর্থন করেন। এই ঘটনায় সবংয়ে কংগ্রেস-সিপিএমের সখ্য ফের প্রমাণিত হল।’’ জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অজিত মাইতিও বলেন, “তদন্ত হলেই আসল দোষীদের নাম জানা যাবে।’’
এ দিনের সভার জেরে তীব্র যানজট হয় সবংয়ের প্রবেশদ্বার তেমাথানি মোড়ে। আটকে পড়ে বহু বাস। বাসযাত্রী মুণ্ডমারির বিনয় মাল, কাঁটাখালির সৌরিন মাইতিরা বলেন, “প্রায় আধ ঘন্টা আটকে রয়েছি। এ ভাবে রাস্তার উপরে সভা করলে মানুষের দুর্ভোগ তো হবেই।’’ এ দিন সভা চলাকালীন বসা নিয়েও বিশৃঙ্খলা হয়। বলপাইয়ের তৃণমূল কর্মী অনন্ত ধারা বলেন, “রাস্তার উপরে সভা করলে তো দাঁড়ানোর জায়গা থাকবে না। মাঠে সভা করলে ভাল হত।’’