Advertisement
২৩ মে ২০২৪

কেএলও-র ছায়া সামলাতে বৈঠক আলিপুরদুয়ারে

ভুটান সীমান্তে সেনা অভিযানের পরে কেএলও-এর কোমর ভেঙে গিয়েছিল। তাতে কিছুটা স্বস্তিতেই ছিলেন এ রাজ্যের পুলিশ ও গোয়েন্দারা। কিন্তু, স্বাধীনতা দিবসের ১০ দিন আগে অসমের কোকরাঝাড়ে জঙ্গি হামলার পরে রাতের ঘুম উবে গিয়েছে তাঁদের।

সীমান্তে হ্যালোজেনের আলো লাগানোর তোড়জোড়। —নিজস্ব চিত্র।

সীমান্তে হ্যালোজেনের আলো লাগানোর তোড়জোড়। —নিজস্ব চিত্র।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৬ ০১:৪৩
Share: Save:

ভুটান সীমান্তে সেনা অভিযানের পরে কেএলও-এর কোমর ভেঙে গিয়েছিল। তাতে কিছুটা স্বস্তিতেই ছিলেন এ রাজ্যের পুলিশ ও গোয়েন্দারা। কিন্তু, স্বাধীনতা দিবসের ১০ দিন আগে অসমের কোকরাঝাড়ে জঙ্গি হামলার পরে রাতের ঘুম উবে গিয়েছে তাঁদের।

ঘটনার পরে তদন্তে নেমে অসম পুলিশের আশঙ্কা, সন্দেহভাজন হামলাকারী সংগ্রামপন্থী এনডিএফবি জঙ্গিরা কেএলওকে সামনে রেখে উত্তরবঙ্গে আত্মগোপনের ছক কষেছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের গোয়েন্দাদের একাংশের আশঙ্কা, স্বাধীনতা দিবসের আগে একই কায়দায় উত্তরবঙ্গ ও অসম লাগোয়া এলাকায় নাশকতার ছক কষছে কেএলও। তাই নিয়ে তথ্য আদানপ্রদান জোরদার করতে চলতি সপ্তাহেই দুই রাজ্যের একাধিক পুলিশ সুপার, আইজি, এডিজিরা আলিপুরদুয়ারে বৈঠকে বসবেন।

সব ঠিক থাকলে ওই বৈঠক হতে পারে আজ, বৃহস্পতিবার। জলদাপাড়ায়। তবে স্বাধীনতা দিবসের আর মাত্র ৪ দিন বাকি থাকায় শুধু বৈঠকের উপরে ভরসা না রেখে অসম লাগোয়া এলাকায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া অসমের বরোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল স্বশাসিত পর্ষদের এডিজি এল কে বিশনই বলেন, ‘‘একাধিক জঙ্গি সংগঠনের যোগসাজশে শক্তি বাড়াতে চাইছে কেএলও। আমরা তা হতে দেব না। তাই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানো হয়েছে।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, কোথাও ভুটান সীমান্ত বা অসমের সীমানা লাগোয়া এলাকায় রাতারাতি বসানো হয়েছে হ্যালোজেন আলো। আবার কোথাও জরুরি ভিত্তিতে কেনা হয়েছে শক্তিশালী সার্চ লাইট। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় টং-ঘর তৈরি করে শক্তিশালী দূরবীন নিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এমনকী, নবান্নের নির্দেশে কোচবিহার-আলিপুরদুয়ারে এমন সীমান্ত ও সীমানাবর্তী এলাকায় রাতে আচমকা টহল দিচ্ছেন উত্তরবঙ্গের এডিজি তথা আইজি এন রমেশবাবু। তিনি বলেছেন, ‘‘সব আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই অসম লাগোয়া কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের নিরাপত্তার ফাঁকফোকর যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে ভরাট করা হচ্ছে।’’

কোকরাঝাড় ও ধুবুরিতে ইদানীং যে কেএলও জঙ্গিদের আনাগোনা বেড়েছে, সেটা পুলিশ সূত্রই মেনে নিচ্ছে। ৮ মাস আগে দু’জন সন্দেহভাজন কেএলও জঙ্গিকে কোকরাঝাড়ে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, ওই দুই জঙ্গি জেরায় জানিয়েছে, মায়ানমার সীমান্ত এনডিএফবি-র ক্যাম্পে তাদের প্রশিক্ষণ হয়েছে। সেখানে গত ১ বছরে উত্তরবঙ্গের আরও অন্তত ২০ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছে বলে ধৃতের কাছ থেকেই পুলিশ জেনেছে।

টম, মিল্টন-সহ কেএলও নেতাদের কয়েক জন ধরা পড়ার ফলে তাদের যে শক্তি কমে গিয়েছিল, তা কাটিয়ে উঠতে এখন এই জঙ্গি গোষ্ঠী এনডিএফবি-র সাহায্য নিচ্ছে বলেই ধারণা পুলিশের। কোকরাঝাড়ে জঙ্গি হানার পরে তাই পশ্চিমবঙ্গের লাগোয়া এলাকাতেও আশঙ্কার মেঘ দেখা যাচ্ছে।

তাই জঙ্গি সামলানোর কাজে সমন্বয় বাড়াতেই আজ বসছেন দু’রাজ্যের শীর্ষ স্তরের অফিসারেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Alipurduar Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE