ফের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলে রদবদল ঘটতে চলেছে। বুধবরাই তার ইঙ্গিত মিলল। এ দিন কলকাতায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের জয়ী কাউন্সিলরের সঙ্গে নেতা-কর্মীদের নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠক করেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে তিনি জেলার সাংগঠনিক কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষের কথা গোপন রাখেননি। দলনেত্রী জেলায় দলীয় সংগঠনের সামগ্রিক রিপোর্ট সংগ্রহ করছেন বলেও জানিয়েছেন। রিপোর্ট সংগ্রহ শেষ হলে সংগঠনে যে বদল ঘটাবেন তাও জানিয়ে রেখেছেন।
এটা যে শুধু কথার কথা নয়, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন বৈঠকেই। কারণ, এ দিনই দলে এক নেতার কার্যকরী সভাপতি হিসাবে অভিষেক ঘটল। প্রবীণ নেতা তথা জেলা পরিষদের দলনেতা অজিত মাইতিকে জেলার কার্যকরী সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব দেন। এই নিয়ে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতির সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ-এ। প্রধানমন্ত্রীর সফরের জন্য আপাতত জেলা সফর বাতিল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শীঘ্রই তাঁর জেলা সফরে আসার কথা। দলের এক নেতার কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী জেলার সাংগঠনিক কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ গোপন করেননি। একইসঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, সাংগঠনের পুনর্গঠনও জরুরি। প্রধানমন্ত্রীর সফর শেষে জেলায় এসে তা করবেন বলেই মনে হচ্ছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর পুরসভা ত্রিশঙ্কু অবস্থায় রয়েছে। রামজীবনপুরে পুরবোর্ড গঠন নিয়ে টালবাহানা অব্যাহত। ঘাটাল, ক্ষীরপাই, খড়ার, চন্দ্রকোনা পুরসভা শাসক দলের দখলে এসেছে। তবে ওই পুরসভাগুলিতেও পুরপ্রধান কে হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এমনকি ত্রিশঙ্কু পুরসভাগুলিও নিজেদের পক্ষে আনতেও ব্যর্থ হয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এ বার জেলার বিভিন্ন পুরসভার পুরপ্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী, শুভেন্দু অধিকারী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে দুই জেলা নেতা থাকছেন। তাঁরা হলেন দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় ও কার্যকরী সভাপতি আশিস চক্রবর্তী।
তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে ব্লকস্তরেরও দলের কাজকর্ম সম্পর্কে সাংগঠনিক রিপোর্ট সংগ্রহ করছেন দলনেত্রী। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি ব্লকের খবর পৌঁছে গিয়েছে। সেখানে দলের কাজকর্ম যে গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। জেলা থেকেও যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে মদত দেওয়া হয়, তাও বুঝে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে ব্লক স্তরে তো বটেই জেলা স্তরেও এবার কিছু রদবদল ঘটতে পারে। জেলাতে এসেই সেই বদল ঘটাবেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন বৈঠকে নব নির্বাচিত কাউন্সিলরদের পাশাপাশি জেলা পরিষদ সদস্য, কর্মাধ্যক্ষ, জেলা সভাধিপতি, বিধায়ক, সাংসদ, সংগঠনের জেলা সভাপতি, জেলা কার্যকরী সভাপতিদের ডাকা হয়েছিল।
দলীয় সূত্রে খবর, জেলার বিভিন্ন পুরসভায় পুরপ্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে এ বার মুকুল রায়ের অনুগামীদের ডানা ছাঁটা হবে। এ ব্যাপারে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন দলের নেতারা। জেলা কার্যকরী সভাপতি আশিস চক্রবর্তীর সংক্ষিপ্ত জবাব, “সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার উপরেই জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দলের অনুগত সৈনিক হিসাবে দায়িত্ব পালন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy