Advertisement
E-Paper

প্রচারে শীর্ষ নেতৃত্বকে চাইছে সব দলই

পুরভোটের মনোনয়নপর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে শনিবার। নির্বাচন আগামী ২৫ এপ্রিল। অর্থাৎ, হাতে আর বেশি সময় নেই। এপ্রিলের গোড়া থেকেই তাই পুরোদমে প্রচারে নেমে পড়তে চলেছে সব রাজনৈতিক দলই। প্রচারের রণকৌশল তৈরিও শুরু হয়ে গিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৫ ০১:২৫
প্রচারের ফাঁকে দেওয়াল লিখনে ব্যস্ত  ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার।

প্রচারের ফাঁকে দেওয়াল লিখনে ব্যস্ত ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার।

পুরভোটের মনোনয়নপর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে শনিবার। নির্বাচন আগামী ২৫ এপ্রিল। অর্থাৎ, হাতে আর বেশি সময় নেই। এপ্রিলের গোড়া থেকেই তাই পুরোদমে প্রচারে নেমে পড়তে চলেছে সব রাজনৈতিক দলই। প্রচারের রণকৌশল তৈরিও শুরু হয়ে গিয়েছে।

পশ্চিম মেদিনীপুরের যে ৬টি পুরসভায় ভোট হচ্ছে, তার মধ্যে খড়্গপুর অন্যতম। তৃণমূল সূত্রে খবর, এখানে দলের প্রচার কর্মসূচিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। নেতৃত্ব মনে করছেন, রেলশহরে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত রুখতে মমতার প্রচারই ‘মাস্টার স্ট্রোক’ হতে পারে।প্রচারে বামেদের ‘তুরুপের তাস’ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। বাম-নেতৃত্বের মতে, ধারাবাহিক রক্তক্ষরণ ঠেকাতে আলো দেখাতে পারেন নারায়ণগড়ের বিধায়কই। ইতিমধ্যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্তবাবুর একটি কর্মসূচিও চূড়ান্ত হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, আগামী ১০ এপ্রিল রেলশহরের টাউন হলের মাঠে জনসভা করবেন তিনি। সভায় উপস্থিত থাকবেন সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক প্রবোধ পণ্ডাও। দলের এক সূত্রে খবর, প্রচারে সাংসদ মহম্মদ সেলিম, সিপিএম নেতা মানব মুখোপাধ্যায়দেরও চাইছেন নেতৃত্ব।

পিছিয়ে নেই অন্য দলগুলো। টানা এক সপ্তাহ রেলশহরে প্রচার করার কথা প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়ার। বিজেপির প্রচারে আসতে পারেন দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ, তারকা-সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।

ভোটারের মুখোমুখি। খড়্গপুরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী মধুসূদন রায়।

এখন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। তাই মাইক-প্রচার বন্ধ। প্রার্থীরা দলের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করছেন, পাড়ায় পাড়ায় প্রচারে বেরোচ্ছেন। পুরোদমে দেওয়াল লেখাও শুরু হয়েছে। কোথাও কোথাও প্রার্থীর নাম বাদ রেখে দলের নাম আর প্রতীক আঁকা হয়েছিল। এখন সেখানে প্রার্থীর নাম লেখা হচ্ছে। ৩১ মার্চ উচ্চ মাধ্যমিক শেষ হচ্ছে। তাই ১ এপ্রিল থেকেই পুরোদস্তুর প্রচারে নেমে পড়তে চলেছে সব রাজনৈতিক দল, নির্দল প্রার্থীরাও। প্রচারের রণকৌশল তৈরি যে শুরু হয়ে গিয়েছে, তা মানছেন নেতারা। সিপিআইয়ের জেলা সহ-সম্পাদক বিপ্লব ভট্ট বলেন, “কী ভাবে প্রচার এগোবে, তা নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনা চলছে। কিছু সিদ্ধান্তও হয়েছে।” সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য তথা রেলশহরের বিদায়ী কাউন্সিলর অনিতবরণ মণ্ডলের কথায়, “এপ্রিল মাসের গোড়া থেকেই প্রচার-সভা শুরু হবে।”

প্রচারের কাজ কী ভাবে এগোবে? তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “কী ভাবে এগোবে, তা নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। রাজ্য থেকে অনেকেই আসবেন। তার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।” কর্মীরা তো প্রচারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাইছেন? প্রদ্যোৎবাবুর জবাব, “কর্মীরা তো চাইবেনই। দিদিই (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) তো আমাদের আদর্শ-প্রেরণা।” দলের এক সূত্রে খবর, তৃণমূল নেত্রীর প্রচার কর্মসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তিনি পুরভোটের প্রচারে পশ্চিম মেদিনীপুরে আসবেন কি না, তা-ও ঠিক হয়নি। আগামী মাসের গোড়ায় এটা ঠিক হতে পারে। তবে দলের প্রচারে আসতে পারেন তারকা-সাংসদ দেব, সন্ধ্যা রায়। আসতে পারেন সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমরাও।

রেলশহরে বিজেপি প্রার্থীর প্রচার।

হেভিওয়েটদের এনে প্রচারে ঝড় তুলতে মরিয়া বিজেপিও। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য থেকে অনেকেই প্রচারে আসবেন। আর দিন কয়েকের মধ্যে প্রচার-কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে।” দলের এক সূত্রে খবর, রেলশহরের প্রচারে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়কে চাইছেন নেতৃত্ব। কী পরিস্থিতি কংগ্রেসের? খড়্গপুরের ক্ষেত্রে দলের তরফে নির্বাচনী কাজকর্ম দেখভালের দায়িত্ব ইতিমধ্যে সঁপে দেওয়া হয়েছে প্রবীণ বিধায়ক জ্ঞান সিংহ সোহন পালকে। খড়্গপুর শহর কংগ্রেস সভাপতি অমল দাস বলেন, “আগামী মাসের গোড়া থেকেই পুরোদমে প্রচার শুরু হয়ে যাবে। মানস ভুঁইয়া-সহ অনেকে আসবেন। মানসদা টানা সাত দিন শহরে প্রচার করবেন।”

রেলশহরের পুরভোটকে এ বার ‘পাখির চোখ’ করছে সব দলই। ২০১০ সালের পুরভোটে এখানে একক ভাবে সবথেকে বেশি আসন পায় তৃণমূল। তবে পুরবোর্ড তারা ধরে রাখতে পারেনি। ফলে, রেলশহরের মানুষ স্থায়ী পুরবোর্ড পাননি। প্রথমে তৃণমূল বোর্ড গড়লেও পরে অনাস্থা ভোটে জিতে কংগ্রেস বোর্ড গড়ে। অন্য দিকে, গত লোকসভা ভোটের নিরিখে রেলশহরের ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯টি ওয়ার্ডে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। গেরুয়া- শিবিরও বিনাযুদ্ধে জমি ছাড়তে নারাজ। প্রার্থী-তালিকায় নতুন মুখ এনে এলাকায় নতুন করে জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছে বামেরাও।

প্রচার যুদ্ধে কে কাকে টেক্কা দেয়, সেটাই এখন দেখার।

—নিজস্ব চিত্র।

municipal election cpm trinamool tmc congress BJP suryakanta mishra Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy