Advertisement
০৪ মে ২০২৪

প্রাথমিকে প্রতারণা চক্র জেলায়

পিংলার এই ঘটনার সূত্র ধরেই প্রাথমিকে জাল নিয়োগ চক্রের বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। জেলার ওই শিক্ষাকর্তা বলছিলেন, “ভাল করে খুঁটিয়ে দেখার পরে বুঝি, ওই নিয়োগপত্র জাল। তা সংসদ থেকে দেওয়া হয়নি। সংসদের নামে অন্য কেউ দিয়েছে।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০০:৩১
Share: Save:

নিয়োগপত্র পেয়ে পিংলার এক প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক পদে যোগ দেওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছিলেন এক যুবক। স্কুলে যাওয়ার আগে তিনি জেলার এক শিক্ষাকর্তার কাছে আসেন। শিক্ষাকর্তা তো হতবাক। মাস কয়েক আগেই তো জেলায় ১,৪০০ শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। এখন আবার নিয়োগ কীসের! ওই শিক্ষাকর্তা যুবকের কাছে নিয়োগপত্র দেখতে চান। আর তা দেখে সন্দেহ আরও বাড়ে। কারণ, সেখানে যে স্কুলের নাম লেখা, সেখানে মাস খানেক আগেই নতুন শিক্ষক নিয়োগ হয়ে গিয়েছে।

পিংলার এই ঘটনার সূত্র ধরেই প্রাথমিকে জাল নিয়োগ চক্রের বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। জেলার ওই শিক্ষাকর্তা বলছিলেন, “ভাল করে খুঁটিয়ে দেখার পরে বুঝি, ওই নিয়োগপত্র জাল। তা সংসদ থেকে দেওয়া হয়নি। সংসদের নামে অন্য কেউ দিয়েছে।’’ ওই যুবককে তিনি ক’দিন পরে আসতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি আর আসেননি। শিক্ষাকর্তার কথায়, “ওই যুবক বোধহয় বুঝে গিয়েছিল যে তিনি প্রতারণা চক্রের শিকার। তাই পরে আর আসেননি।’’

শুধু এই একটি ঘটনা নয়। পরপর এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। জাল নিয়োগপত্রের খবর এসে পৌঁছনোয় নড়ে বসেছেন জেলার শিক্ষাকর্তারা। পিংলার ঘটনার কথা মানছেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান নারায়ণ সাঁতরা। তাঁর কথায়, “এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। এর পিছনে বড়সড় কোনও দুষ্টচক্র রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।”

টাকার বিনিময়ে প্রাথমিকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে দুষ্টচক্রের সক্রিয় হয়ে ওঠা নতুন নয়। আগেও এমন অভিযোগ উঠেছে অন্য জেলায়। গত মাসে মালদহের গাজলে জাল নিয়োগপত্র নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষক পদে যোগ দিতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন এক যুবক। ওই ক্ষেত্রে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানের সই করা নিয়োগপত্র নিয়ে সার্কেল অফিসে গিয়েছিলেন ওই যুবক। বাঁকুড়াতেও মাস কয়েক আগে এমন ঘটনা ঘটেছে। সে ক্ষেত্রে টেটের কাউন্সেলিংয়ে এসে এক যুবতী জানতে পারেন, যে চিঠি নিয়ে তিনি এসেছেন, সেটি জাল। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ থেকে আদৌ তাঁকে কাউন্সেলিংয়ের কোনও চিঠি পাঠানো হয়নি।

এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে জাল নিয়োগপত্রের হদিস মেলায় শোরগোল পড়েছে শিক্ষা দফতরে। জেলার এক শিক্ষাকর্তার কথায়, “নিয়োগপত্র এক ঝলকে দেখে বোঝা কঠিন যে সেটি জাল। হুবহু আসলের মতো করে বানানো হয়েছে। চেয়ারম্যানের সই জাল করেই ভুয়ো নিয়োগপত্র তৈরি করছে ওই চক্র।’’

এ ক্ষেত্রে সংসদ কি কোনও ব্যবস্থা নেবে? জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান নারায়ণবাবুর জবাব, “আমরা খোঁজখবর শুরু করেছি। নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলেই উপযুক্ত পদক্ষেপ করব। বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনে জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE