E-Paper

যুবকের অপমৃত্যু, রহস্য ফোনের তদন্তে পুলিশ

কোন মহিলার ফোন এসেছিল অতিথিশালায়? তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দেবাশিস বিবাহিত। তাঁর ১৪ বছরের এক মেয়ে ও আট বছরের এক ছেলে রয়েছে।

রঞ্জন পাল

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৪৫
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

অতিথিশালার মোবাইল নম্বরে ফোন করে এক মহিলা কেঁদে কেঁদে জানিয়েছিলেন, দেবাশিস আত্মহত্যা করার চেষ্টা করছে। ওকে বাঁচান। প্রথমে অতিথিশালা কর্তৃপক্ষ হতচকিত হয়ে গেলেও সঙ্গে সঙ্গে কর্মীদের পাঠিয়ে দেখেন, দেবাশিস গাঁতাইতের (৩৩) ঘরের দরজা বন্ধ। অতিথিশালা কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দেন। পুলিশের অনুমতি নিয়েই দরজা ভাঙতে ঝুলন্ত অবস্থায় অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায় দেবাশিসকে। পরে তাঁকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানার শালিকগড়চক উত্তরপাড়ার বাসিন্দা দেবাশিসকে মৃত ঘোষণা করেন।

কোন মহিলার ফোন এসেছিল অতিথিশালায়? তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দেবাশিস বিবাহিত। তাঁর ১৪ বছরের এক মেয়ে ও আট বছরের এক ছেলে রয়েছে। পুলিশের অনুমান, দেবাশিস বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন। যার জেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন। এখনও নিশ্চিত ভাবে জানা না গেলেও এ সম্ভাবনাও পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না, হয়তো আত্মহত্যা করার আগে দেবাশিস ফোন করে তাঁর প্রেমিকাকে অতিথিশালার নাম বলেছিলেন। ওই প্রেমিকাই অতিথিশালার নম্বর নিয়ে ফোন করেছিলেন।

সোমবার ভোর ৫টা নাগাদ তমলুক পুলিশের মারফত দেবাশিসের মৃত্যুর খবর পান তাঁর পরিজনেরা। এ দিন ঝাড়গ্রামে আসেন। দেবাশিসের শ্বশুর অলক কর বলেন, ‘‘রবিবার সকাল ১১টার সময় মেয়ের সঙ্গে জামাইয়ের শেষ কথা হয়েছিল। জামাই এমনকি মেয়ের অ্যাকাউন্টে ৬ হাজার টাকা পাঠিয়েছিল। তারপর আর মেয়ের সঙ্গে কথা হয়নি। তবে বিকেল পর থেকে ফোন অফ হয়ে যায়।’’ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দেবাশিস ভিন্ রাজ্যে ফুলের কাজ (অনুষ্ঠান বাড়িতে ফুলের কাজ) করতেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন দেবাশিস। বাড়িতে অশান্তি চলছিল তা নিয়ে। সম্প্রতি এ নিয়ে গ্রামে সালিশি সভা বসেছিল।

গত ২৬ জুলাই দেবাশিস বাড়ি থেকে বেরিয়ে ভিন্ রাজ্যে কর্মক্ষেত্রে যান। তারপর গত ১ অগষ্ট ফের বাড়ি উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু বাড়ি আসেননি। রবিবার দুপুরে শহরের একটি বেসরকারি অতিথিশালায় আসেন দেবাশিস। এ দিন মর্গে দাঁড়িয়ে দেবাশিসের দুই ভাগ্নে বিজয়কৃষ্ণ দিন্দা ও রবীন্দ্রনাথ সাউ বলেন, ‘‘মামার সঙ্গে কোনও মেয়ের সম্পর্ক ছিল। সেই টানেই মামা ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন।’’ দেবাশিসের প্রতিবেশী মোহন প্রামানিক জানান, "দেবাশিস বিবাহ বহির্ভুত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ। ঝামেলা মেটানোর জন্য আমরা সালিশি করেছিলাম।’’ ঝাড়গ্রামের এসডিপিও শামিম বিশ্বাস বলেন, ‘‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suicide Jhargram

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy