Advertisement
E-Paper

নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফুল, বসন্ত উৎসবে ভরসা কৃত্রিম রঙেই

স্থানীয় সূত্রের খবর, রাজ্যের ফুল চাষের মানচিত্রে দ্বিতীয় স্থানে পূর্ব মেদিনীপুর। পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, শহীদ মাতঙ্গিনী ও তমলুক ব্লকে ফুলের চাষ হয়।

দিগন্ত মান্না

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৯ ০৭:৪৫
আর ফুলেল দোল নয়! নিজস্ব চিত্র

আর ফুলেল দোল নয়! নিজস্ব চিত্র

দিন দু’য়েক পরেই দোল। বসন্তোৎসবে মেতে উঠতে পাড়ার মোড়ে, দোকানে রঙের পসার সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের ঝুলিতে রয়েছে রঙবেরঙের আবির। কিন্তু তার মধ্যে ভেষজ আবিরের পরিমাণ খুবই কম। বেশিরভাগই কৃত্রিম ভাবে তৈরি রাসায়নিক মিশ্রিত আবির। এতেই কিছুটা ‘মনোক্ষুণ্ণ’ পাঁশকুড়া, কোলাঘাট এলাকার ফুলচাষিদের একাংশের। তাঁদের বক্তব্য, বিক্রি না হওয়ায় রাশি রাশি ফুল পড়ে নষ্ট হয়। সেই ফুল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনে তো ভেষজ উপায়ে আবির তৈরি করাই যায়। তাতে এক দিকে যেমন ফুল চাষিরা লাভবান হবেন, তেমনই উপকৃত হবেন আবির ব্যবকারীরাও।

স্থানীয় সূত্রের খবর, রাজ্যের ফুল চাষের মানচিত্রে দ্বিতীয় স্থানে পূর্ব মেদিনীপুর। পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, শহীদ মাতঙ্গিনী ও তমলুক ব্লকে ফুলের চাষ হয়। জেলায় গোলাপ, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, রজনীগন্ধা, করণ, বেল, জুঁই-সহ ২০ ধরনের ফুলের চাষ হয়। বিভিন্ন উৎসবের মরসুমে ফুলের প্রবল চাহিদা থাবে। তবে সব মরসুমে ফুলের দাম সমান থাকে না। সাধারণত দেখা যায়, যখন বাজারে ফুলের যোগান অঢেল থাকে তখন দাম থাকে না ফুলের। বাজারে দাম না পেয়ে চাষিরা অনেকসময় রাস্তার ধরে ফুল ফেলে দেন। ক্ষতির মুখে পড়েন চাষিরা।

চাষিরা জানাচ্ছেন, ওই ফুল থেকে আতর, আবির, রংয়ের মতো উপজাত সামগ্রী তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু রাজ্যে তা তৈরির পরিকাঠামো না থাকায় ফুল নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ। উল্লেখ্য, প্রায় দেড় দশক আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ফুল থেকে আবির ও রং তৈরি করা হয়। সে সময় সরকারি উদ্যোগে হাওড়ার ঘোড়াঘাটায় একটি স্কুলের বৃত্তিমূলক বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের দ্বারা ফুল থেকে আবির ও রং তৈরির কাজ শুরু হয়। তবে সেই প্রকল্প বেশি দিন স্থায়ী হয়নি বলে অভিযোগ।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ফুল থেকে প্রাকৃতিক আবির তৈরির কারখানা গড়ে তুলতে বছর দুয়েক আগে সারা বাংলা ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধারমণ সিংহকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তবে আজ পর্যন্ত সরকারি পদক্ষেপ নজরে পড়েনি বলে কৃষকদের অভিযোগ।

জেলার ফুল চাষিদের একাংশের দাবি, সরকারি উদ্যোগে ফুল থেকে উপজাত সামগ্রী বানানোর পরিকাঠামো গড়ে তোলা হলে সারা বছরই ফুলের দাম ভাল পাওয়া যাবে এবং অনেকে ফুল চাষে উৎসাহিত হবেন। কোলাঘাটের বক্সীতলা গ্রামের কৃষকমোহন দাস বলেন, ‘‘বছরের যে সময়গুলিতে ফুলের দাম থাকে না, তখন আমরা ফুল ফেলে দিতে বাধ্য হই। ফুল থেকে উপজাত সামগ্রী বানানোর ব্যবস্থা থাকলে ফুল ফেলতে হত না। অন্যদিকে প্রাকৃতিক আবির, রং, আতরও সহজলভ্য হত।’’

সারা বাংলা ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘দোলের সময় ফুল থেকে তৈরি আবির ও রঙের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। কিন্তু জোগান থাকে ন্যূনতম। আমরা চাই ফুলচাষের জেলাগুলিতে সরকার ফুলের উপজাত সামগ্রী বানানোর পরিকাঠামো গড়ে তুলুক।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘‘সরকার স্ব-সহায়ক দলগুলির মাধ্যমে ফুল থেকে আবির তৈরির কাজ করিয়ে থাকে। তবে বাজারে ওই আবিরের দাম অন্য আবিরের তুলনায় অনেক বেশি। ফলে এর চাহিদা কম। আগামী দিনে চাহিদা বাড়লে সরকার ফুল থেকে আবির, রং তৈরির পরিকাঠামো গড়ে তুলতে নিশ্চয় চিন্তাভাবনা করবে।’’

Basanta Utsav Organic Colour
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy