Advertisement
১৯ মে ২০২৪
ডেবরা

পূর্ত দফতরের জমিতেই বালিচক উড়ালপুল

উড়ালপুল-জট কাটার ইঙ্গিত। ডেবরার বালিচক উড়ালপুল তৈরি নিয়ে জট কাটাতে বুধবার বিকেলে সর্বদল বৈঠক ডাকে প্রশাসন। রায়ত জমি বাদ দিয়ে পূর্ত দফতরের জমিতেই উড়ালপুল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বৈঠকে। পুজোর পরেই উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হবে বলে খবর।

এই ছবি কি এ বার বদলাবে? ফাইল ছবি।

এই ছবি কি এ বার বদলাবে? ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৪২
Share: Save:

উড়ালপুল-জট কাটার ইঙ্গিত।

ডেবরার বালিচক উড়ালপুল তৈরি নিয়ে জট কাটাতে বুধবার বিকেলে সর্বদল বৈঠক ডাকে প্রশাসন। রায়ত জমি বাদ দিয়ে পূর্ত দফতরের জমিতেই উড়ালপুল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বৈঠকে। পুজোর পরেই উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হবে বলে খবর।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার বালিচক স্টেশনের অনতিদূরে রেলগেটে যানজট প্রতিদিনের ঘটনা। সবং-ডেবরা রাস্তায় যানজটে নাভিশ্বাস ওঠে নিত্যযাত্রীদের। সমস্যা মেটাতে ২০১১ সালে রেল ও রাজ্য যৌথ উদ্যোগে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বালিচকে উড়ালপুল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ২০১২ সালে মুকুল রায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন উড়ালপুলের কাজের অনুমোদনও হয়ে যায়। ওই বছর ৪ জুন ডেবরার হরিমতি হাইস্কুল ময়দানে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বালিচক উড়ালপুলের শিলান্যাস করেন। তারপরে চার বছর কেটে গেলেও উড়ালপুলের কাজ আর এগোয়নি।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, উড়ালপুলের রেল লাইনের ওপরের অংশ নির্মাণের দায়িত্ব রেলের। উড়ালপুলের দু’দিকের সংযোগকারী রাস্তা গড়তে হবে রাজ্যকে। ডেবরা-সবং রাস্তার দু’ধারে বালিচক এলাকায় রয়েছে রায়ত জমি। এই জমিতে অনেক দোকানপাট থাকায় জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। গত বছর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জমি অধিগ্রহণের কথা বলা হয়। তারপরে জমিদাতাদের অধিকাংশই জমি দিতে রাজি না হওয়ায় পিছিয়ে আসে পূর্ত দফতর। কয়েকজন জমিদাতাকে বুঝিয়ে জমির সম্মতিপত্রও পাওয়া যায়। তবে তারপরেও অনেকে জমি দিতে আগ্রহ প্রকাশ না করায় নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করে পূর্ত দফতর। ফের সমীক্ষাও করা হয়।

এরপরে এ দিন ব্লক অফিসে সর্বদল বৈঠকে পূর্ত দফতর জানিয়ে দেয়, উড়ালপুলের জন্য রায়ত জমি নেওয়া হচ্ছে না। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বালিচক এলাকায় পূর্ত দফতরের ১৮ মিটার জমির উপরেই তৈরি হবে উড়ালপুল। এ ক্ষেত্রে উড়ালপুল আগের নকশার তুলনায় সঙ্কীর্ণ ও খাড়াই হবে বলে জানানো হয়েছে। খুব দ্রুত উড়ালপুলের কাজের টেন্ডারও ডাকা হবে। পুজোর পর শুরু হবে নির্মাণ কাজ।

জানা গিয়েছে, উড়ালপুল তৈরিতে প্রায় দেড় বছর সময় লাগবে। নির্মাণ কাজ চলাকালীন ওই রাস্তা দিয়ে ভারী যান চলাচল বন্ধ করা হবে। সে ক্ষেত্রে বালিচকের পরিবর্তে রাধামোহনপুর ও শ্যামচক হয়ে ঘুরে গাড়িগুলিকে সবংয়ে যেতে হবে। বালিচক দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে ছোট গাড়ি।

উড়ালপুলের কাজ শুরুর খবর শুনে খুশি এলাকার বাসিন্দা ও বালিচক স্টেশন উন্নয়ন কমিটি। কমিটির পক্ষ থেকে এ দিনের বৈঠকে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তাঁদের দাবি, উড়ালপুল গড়ার সময়ে বালিচক স্টেশন পর্যন্ত বাস চলাচল করার বন্দোবস্ত করতে হবে। একইসঙ্গে, এলাকায় নিকাশির সুব্যবস্থা, ছাত্রছাত্রী ও নিত্যযাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াত সুনিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বালিচক স্টেশন উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “পূর্ত দফতরের জমিতে উড়ালপুল গড়ার সিদ্ধান্তে আমরা সহমত। দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়েছি। মনে হচ্ছে, এ বার বালিচকবাসী সুদিন দেখতে পাবে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আগের নকশার তুলনায় উড়ালপুল একটু সঙ্কীর্ণ ও খাড়াই হবে। তবে উড়ালপুল হবে এটাই বড় কথা। আমরা যে প্রস্তাব রেখেছি আশা করি সেগুলি পূরণ করা হবে।” এ দিন জেলা পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “আমাদের ১৮ মিটার জমির ওপরেই উড়ালপুল গড়া হবে। কোনও জমি কেনা হচ্ছে না। এলাকার মানুষ আমাদের সঙ্গে সহমত হয়েছেন। টেন্ডার করে পুজোর পরেই কাজ শুরু করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Balichak Flyover PWD
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE