বন্ধে পরিবহণ ব্যবস্থা সচল রাখতে বাস মালিক ও সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। সেখানে বন্ধেও বাস চালানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন বাস মালিকেরা। কিন্তু সেই আশ্বাসের প্রতিফলন বুধবার তেমন দেখা গেল না বলেই অভিযোগ। সমস্যায় পড়লেন যাত্রীরা।
এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরে বেশির ভাগ দোকানপাট অফিস, স্কুল, কলেজ খোলা ছিল। কিন্তু সকালে কাজে বেরিয়ে রাস্তায় বাসের জন্য অপেক্ষা করে হায়রানির শিকার হয়েছেন জেলা সদর তমলুক-সহ পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। সকাল থেকেই মেচেদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে রাজ্য ও জাতীয় সড়কে হলদিয়া, দিঘাগামী বেসরকারি বাস চলাচল শুরু হলেও অধিকাংশ বাস গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই থেমে যায়। হলদিয়া থেকে মেচেদা এবং তমলুক থেকে পাঁশকুড়াগামী বেসরকারি বাসের দেখাও না মেলেনি।
এদিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ তমলুক শহরে মানিতকতলা মোড়ে গিয়ে দেখা যায় মেচেদাগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করা মানুষের ভিড়। বাস না পেয়ে যাত্রীদের অনেকেই ম্যাটাডোর, যন্ত্রচালিত ভ্যানরিকশা এবং টোটো চেপে কর্মস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় সড়ক এবং দিঘা-কলকাতা সড়কে কিছু সরকারি বাস চললেও বেসরকারি বাস প্রায় বন্ধ ছিল।
শোভন গুছাইত নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘নন্দীগ্রাম এবং দিঘা রুটের বাসে চেপে যাতায়াত করি। প্রশাসনের আশ্বাস মেলায় ভেবেছিলাম অন্য দিনের মত বাস পেয়ে যাব। কিন্তু অনেকক্ষণ বাসই আসছে না। কীভাবে যাব বুঝতে পারছি না।’’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের ডাকা বৈঠকে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়ায় দুই বাস মালিক সংগঠন নেতারা বাস চালানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন।
মানিকতলা বাসস্ট্যান্ডে বসে বাস চলাচল তদারকিতে নেমেছিলেন জেলা বাস ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক মহম্মদ সামসের আরেফিন এবং ‘বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র সম্পাদক সুকুমার বেরা। বাস চলাচল কম হওয়ার কথা মেনে নিয়ে তারা বলেন, ‘‘সকালে সব রুটে বাস চালানো শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় অবরোধের জেরে আটকে যাওয়ায় বাস চালানো যাচ্ছে না। তবুও আমরা চেষ্টা চালিয়েছি।’’
জেলার পরিবহণ আধিকারিক সজল অধিকারী অবশ্য বলেন, ‘‘সকাল থেকেই জেলার সব রুটে কমবেশি বাস চলেছে। তবে কী পরিস্থিতিতে বাস চলাচল কম হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’
বন্ধে পর্যটকদের উপরেও প্রভাব পড়েছে। এ দিন তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস দিঘায় পৌঁছয় প্রায় আড়াই ঘণ্টা দেরিতে। অপেক্ষা করতে করতে বহু পর্যটক প্ল্যাটফর্মেই বসে পড়েন। বেহালার তমাল পোদ্দার বলেন, “পরিবারকে নিয়ে সকাল ১০টায় দিঘার হোটেল ছেড়ে স্টেশনে এসে বসে রয়েছি। ট্রেনের দেখা নেই। অসুবিধা তো হচ্ছেই।’’
অন্য দিকে, পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ডে ঘাটাল, তমলুক, দিঘা, শ্রীরামপুর ইত্যাদি রুটের বাস থাকলেও যাত্রী অভাবে সেগুলি চলেনি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাসকর্মীরা বাড়ি চলে যান।