Advertisement
০৭ অক্টোবর ২০২৪

নির্দল ও তৃণমূলের সংঘর্ষ, নালিশ ছাপ্পারও

এদিন সকালে ধলহরা পশ্চিমপাড়া ১৩৫ নম্বর বুথে ভোট দিতে যাওয়ার পথে তৃণমূল সমর্থকদের হাতে মার খেয়ে জখম হন শেখ ইমতিয়াজ আলম, শেখ সেলিম আখতার, মুখতারা বিবি নামে তিন নির্দল প্রার্থীর সমর্থক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০০:৪১
Share: Save:

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা পর্বেই বিরোধী প্রার্থীদের আক্রমণের অভিযোগ উঠেছিল শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভোট গ্রহণের দিন সকাল থেকেই শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধী ও নির্দল প্রার্থীর সমর্থকদের গোলমালে উত্তপ্ত হল তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের ধলহরা এলাকা। এদিন সকালে ধলহরা পশ্চিমপাড়া ১৩৫ নম্বর বুথে ভোট দিতে যাওয়ার পথে তৃণমূল সমর্থকদের হাতে মার খেয়ে জখম হন শেখ ইমতিয়াজ আলম, শেখ সেলিম আখতার, মুখতারা বিবি নামে তিন নির্দল প্রার্থীর সমর্থক। আহতদের তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইমতিয়াজের অভিযোগ, ‘‘ভোট দিতে বুথের কাছে যেতেই তৃণমূল কর্মীরা হকি স্টিক, লাঠি, রড, ভোজালি নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।’’

এদিন ওই ব্লকেরই শান্তিপুর-১ গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার সব বুথে ঢুকে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই পঞ্চায়েতের বড়গাছিয়া বুথে তৃণমূলের লোকজন ছাপ্পা ভোট দেওয়ায় ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখান। কাখরদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাড়শিউরি গ্রামে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ তুলে ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা ব্যালট বাক্স ভাঙচুর করে পুকুরে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। খাড়ুই-১ পঞ্চায়েতে বাঁপুর গ্রামেও একই অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী বুথে ভাঙচুর চালায়, ব্যালট পেপার ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ। ওই গ্রামপঞ্চায়েতের খারুই, গোবরা ও জামিত্যা গ্রামে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ তুলে ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখায় বলে অভিযোগ। খাড়ুই-২ পঞ্চায়েতে উত্তর মির্জাপুর গ্রামে সিপিএম প্রার্থীর স্বামীকে অপহরণ করার পরেই ছাপ্পা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে

সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অমল কুইল্যার অভিযোগ, ‘‘শান্তিপুর–১, খাড়ুই-১, খাড়ুই -২ গ্রামপঞ্চায়েতের বিভিন্ন বুথ সহ ব্লকের বিভিন্ন এলাকার বুথে তৃণমূলের লোক ছাপ্পা ভোট দিয়েছে। কিছু এলাকায় মানুষ প্রতিরোধ করলেও পুলিশ –প্রশাসন সাহায্য করেনি।’’ ব্লক তৃণমূল আহ্বায়ক শরৎ মেট্যার অবশ্য দাবি, ‘‘ব্লকের সব বুথে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে। ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’

এদিন তৃণমূল ও নির্দল প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয় ময়না ব্লকের বরুণা গ্রামে ১২৫ নম্বর বুথে। সকালে ভোট শুরুর কিছু পরেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বুথ দখলের অভিযোগে সরব হন নির্দল প্রার্থীর অনুগামীরা। তৃণমূলের অভিযোগ, নির্দলদের মারে তাঁদের কয়েক জন কর্মী জখম হন। জখম হন তৃণমূল প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট নিখিল ভৌমিক। আহত হন দুই পুলিশ কর্মীও। এই ঘটনা ঘিরে দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বোমাবাজি চলে বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত নিখিল ভৌমিককে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার জেরে বেশ কিছুক্ষণ ভোট বন্ধ ছিল। পরে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করে ভোট নেওয়া হয়।

নিখিলবাবুর অভিযোগ, ‘‘নির্দল প্রার্থীর সমর্থকেরা লাঠি, রড, ভোজালি ও বোমা নিয়ে বুথে হামলা চালিয়ে প্রথমে পুলিশকে মারে। তারপর আমাকে মারধর করে।’’ এ দিন নির্দল সমর্থকদের হাতে তমলুক পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চঞ্চল খাঁড়া-সহ ৫ জন তৃণমূল কর্মীও মার খান বলে অভিযোগ। তাঁদের তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে নির্দল প্রা‌র্থীদের পাল্টা অভিযোগ, ওরা পিপুলবেড়িয়া-২ পঞ্চায়েতের বইচাঁড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে তৃণমূলের হয়ে ছাপ্পা ভোট দিতে এসেছিলেন। ভোটাররাই তাতে বাধা দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE