Advertisement
১৯ মে ২০২৪

সিসিটিভি ফুটেজে ধৃত বাইক চোর

ক’দিন আগে রেলশহরের শপিং মলে এক ব্যবসায়ীর মোটরবাইক চুরি হয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল, একদল কিশোর-তরুণ ওই বাইক নিয়ে চলে যাচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৭ ০১:১৫
Share: Save:

ক’দিন আগে রেলশহরের শপিং মলে এক ব্যবসায়ীর মোটরবাইক চুরি হয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল, একদল কিশোর-তরুণ ওই বাইক নিয়ে চলে যাচ্ছে। পরে তদন্তে নেমে ৯জন কিশোর-তরুণকে গ্রেফতার করল পুলিশ। উদ্ধাপ করা হল দু’টি স্কুটি ও একটি বাইক।

বুধবার রাত থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েজনকে পাকড়াও করেছিল পুলিশ। শুক্রবার তাদের মধ্যে ৯ জনকে গ্রেফতার করে মেদিনীপুর জেলা আদালতে হাজির করা হয়। ধৃতদের মধ্যে ইন্দার বছর আঠারোর চন্দন সিংহ ও বছর উনিশের সুমন মাইতি ছাড়া সকলেরই বয়স ১৫ থেকে ১৭বছরের মধ্যে। ধৃতদের মধ্যে জনা তিনেক দশম শ্রেণির ছাত্রও রয়েছে। তাদেরই একজনের বাবা বলছিলেন, “ছেলের এ দিন থেকে পরীক্ষা ছিল। বন্ধুদের সঙ্গদোষেই আমার ছেলে এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছে।”

এই কিশোর-তরুণরা বাইক চুরির চক্র তৈরি করে ফেলেছিল বলেই মনে করছে পুলিশ। খড়্গপুরের এসডিপিও সন্তোষ মণ্ডল বলেন, “একটি শপিং মলের সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের এই বাইক চুরির চক্রকে ধরতে সাহায্য করেছে। সব চেয়ে বড় কথা এই চক্রের প্রায় সকলেই নাবালক। আমরা ৯জনকে গ্রেফতার করেছি।”

রেলশহরে বেপরোয়া বাইক আরোহীদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ট শহরবাসী। এদের বেশিরভাগই অল্পবয়সী যুবক। কিন্তু বাইক চুরিতেও শহরের কিশোর-তরুণরা জড়িত হওয়ায় হতবাক শহরবাসী। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক ভাবে চন্দন চক্রের মূল পান্ডা বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এর পিছনে আরও বড় চক্রের যোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, এই কিশোর-তরুণরা প্রাথমিকভাবে বাইক চুরি করে অন্য কোনও চক্রের মাধ্যমে গ্রামে-গঞ্জে তার যন্ত্রাংশ বিক্রি করে দিত। পাকড়াও হওয়া যুবকদের একজন দ্রুত আস্ত একটি বাইকের সব যন্ত্রপাতি খুলতে সিদ্ধহস্ত বলেও জেনেছে পুলিশ।

কী ভাবে বাইক চুরি করত এই কিশোর-তরুণরা?

তদন্তকারীরা জানান, শপিংমল, বাজার, এমনকী বাড়ির উঠোনে রাখা বাইকও নাগালে পেলেই চুরি করত এরা। ‘মাস্টার চাবি’ দিয়েই হত কেল্লাফতে। আবার শপিং মলে একসঙ্গে অনেক বাইক নিয়ে ঢুকে সেখানে থাকা অন্য বাইকের নম্বর বলে পার্কিংয়ের টিকিট কেটে নিত। তারপর মাস্টার চাবি দিয়ে সেই বাইক চালু করে চম্পট দিত। যাঁর খোওয়া যাওয়া বাইক উদ্ধার করতে গিয়ে এই চক্রের হদিস মিলেছে, সুভাষপল্লির সেই সত্যসাঁই প্রসাদের বাইকটিও চুরি গিয়েছিল শপিং মল থেকে। তিনি বলেন, “টিকিট কেটে মলের পার্কিংয়ে বাইক রেখেছিলাম। পরে না পাওয়ায় নিরাপত্তারক্ষীদের প্রশ্ন করি। তার পরেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’’ এত কমবয়সীরা এই কাজ করছে ভেবে সত্যসাঁইবাবুও অবাক।

নাবালদের এই অপরাধ প্রবণতা ভাবাচ্ছে পুলিশকেও। এসডিপিও সন্তোষবাবুর কথায়, “আর্থ-সামাজিক অবস্থা এর জন্য কিছুটা দায়ী। প্রাথমিক জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, এক বন্ধুর বাইক রয়েছে, অন্যের নেই। তাই নিজের বাইক পেতেই টাকার জন্য ওরা এ সব করত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CCTV Camera Bike Thief
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE