E-Paper

সহবাস-মামলা, গ্রেফতার তিন বিজেপি নেতা

শনিবার তাঁদের তমলুকের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হলে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে সকলকে দুই দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৪ ০৯:২৩
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

এক বিজেপি নেত্রীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস এবং তাঁর উপর নির্যাতনের অভিযোগে তিন বিজেপি নেতাকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছে তমলুক থানার পুলিশ।

এর আগে ওই মামলা প্রত্যাহারের জন্য ওই বিজেপি নেত্রীকে চাপ দেওয়া এবং অস্ত্র দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডল সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ বেরাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ফলে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট চার বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ

বিজেপির মহিলা মোর্চার জেলা কমিটির এক সদস্যা বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক দেবকমল দাস-সহ ৮ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তমলুক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযুক্তের তালিকায় দেবকমল ছাড়াও ছিলেন জেলা কোষাধ্যক্ষ আনন্দ নায়েক, তমলুক নগর মণ্ডল সহ-সভাপতি শঙ্কর জানা, তমলুক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য স্বরূপ ভৌমিক ও দলের জেলা কমিটি সদস্য সমরেশ ধাড়া প্রমুখ। অভিযুক্ত নেতারা এলাকা ছাড়া হয়েছিলেন।

তাঁদের গ্রেফতারের দাবিতে তৃণমূলের তরফে তমলুক শহরে মিছিল করে থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। আর গত ৪ মার্চ তমলুকের নিমতৌড়িতে প্রশাসনিক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ঘটনা প্রসঙ্গ তুলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। শুক্রবার রাতে হাওড়া জেলার ধূলাগড় এলাকা থেকে শঙ্কর জানাকে ধরা হয়। সমরেশ ধাড়াকে নদিয়ার শান্তিপুর থেকে ও স্বরূপ ভৌমিককে তমলুকের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার তাঁদের তমলুকের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হলে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে সকলকে দুই দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

অন্যদিকে, অভিযুক্ত ওই বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা প্রত্যাহারের জন্য ওই বিজেপি নেত্রীকে চাপ দেওয়া এবং অস্ত্র দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডল সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ বেরাকে আগেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে লোকসভা ভোটের আগে এমন অভিযোগ ওঠায় অসস্তিতে পড়েছেন বিজেপি জেলা নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে অভিযুক্ত দেবকমল দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তবে তিনি গ্রেফতার না হওয়ায় এবং বিজেপি জেলা নেতৃত্ব তাঁর বিরুদ্ধে এখনও কড়া পদক্ষেপ করেনি বলে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব।

শনিবার একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা বিধায়ক উত্তম বারিক। তিনি বলেন, ‘‘মূল অভিযুক্ত দেবকমল দাস এবং আনন্দ নায়েক এখনও গ্রেফতার হননি। আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়েছি, তাঁরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় দিল্লিতে রয়েছেন। সন্দেশখালি নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি নেতৃত্বকে অনেক কিছুই বলতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সেই বিজেপির এক নেত্রী প্রতারিত ও নির্যাতিত হয়েছেন, তা নিয়ে কেউ কিছু বলছেন না।’’

যদিও তৃণমূলের তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল বলেন, ‘‘এই ঘটনায় যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে তাঁরা ব্যক্তিগতভাবে আইনি লড়াই লড়ছেন। তাই দলীয় ভাবে ওই অভিযোগ নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে অভিযোগ ওঠার পরেই দেবকমল দাসকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ এছাড়া তাপসীর দাবি, ‘‘দলের ওই নেত্রী আমাদের কাছে এ বিষয়ে কিছু জানাননি। তৃণমূল ষড়যন্ত্র করে আমাদের দলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP Tamluk

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy