Advertisement
E-Paper

রক্তাল্পতায় ভুগছে ঘাটালের ব্লাডব্যাঙ্ক

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে থানায় থানায় রক্তদান শিবির হওয়ায় জুলাইয়ের প্রথমেও ব্লাডব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত রক্ত মজুত ছিল। মাসখানেকের মধ্যে বদলে গিয়েছে ছবিটা।

অভিজিৎ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০৭:৩০
ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে নোটিস। নিজস্ব চিত্র

ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে নোটিস। নিজস্ব চিত্র

দিনে রক্তের চাহিদা গড়ে ৩৫-৪০ ইউনিট। সেখানে সব গ্রুপ মিলিয়ে শুক্রবার রক্ত ছিল সাকুল্যে আট ইউনিট! ছবিটা ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কের। রক্তের অভাবে হাসপাতাল থেকে অন্যত্র রেফার করা হচ্ছে রোগীদের।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে থানায় থানায় রক্তদান শিবির হওয়ায় জুলাইয়ের প্রথমেও ব্লাডব্যাঙ্কে পর্যাপ্ত রক্ত মজুত ছিল। মাসখানেকের মধ্যে বদলে গিয়েছে ছবিটা। টানা বৃষ্টি ও শিলাবতীর বাঁধ ভেঙে ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় একে একে বাতিল হয়ে গিয়েছে রক্তদান শিবির। ফলে ফের রক্তের অভাবে ধুঁকছে ব্লাড ব্যাঙ্ক।

ভাঁড়ারে টান পড়ায় জল নামতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দু’টি শিবিরের আয়োজন করেন। মাত্র ৩২ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ হয়। পরিস্থিতি সামলাতে এ বার ক্লাবগুলির কাছে শিবির আয়োজনের আবেদন জানানো হচ্ছে। ঘাটাল হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “রক্তের আকাল মেটাতে প্রচার করছি। ক্লাব ও প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে আর্জি জানানো হচ্ছে।” রাজ্যের নানা ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে বলে জানান পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা।

ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন হাসপাতালের রোগীরা। হাসপাতালে ভর্তি চন্দ্রকোনার ঘোলা গ্রামের বাসিন্দা ছিয়াশি বছরের বৃদ্ধা অনিমা বসাকের রক্তের প্রয়োজন। যদিও সেই রক্ত জোগাড় করতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন তাঁর পরিজনেরা। অনিমাদেবীর আত্মীয় প্রসেনজিৎ বসাক বলছিলেন, “দু’দিন ধরে ঘুরেও ঠাকুমার জন্য রক্ত জোগাড় করতে পারিনি। ব্লাডব্যাঙ্কেও রক্ত নেই। ঠাকুমাকে কী ভাবে বাঁচাব বুঝতে পারছি না।” রক্ত না মেলায় ঘাটালের হরিসিংহপুরের বাসিন্দা অদ্বৈত সামন্তের শরীরও ক্রমে খারাপ হচ্ছে। অদ্বৈতবাবুর কথায়, “দু’বোতল রক্ত লাগবে। আত্মীয়েরা চেষ্টা করলেও এখনও রক্ত জোগাড় হয়নি। শরীর ক্রমশ খারাপ হচ্ছে।” পরিস্থিতি মেনে নিয়ে ঘাটাল হাসপাতালের এক চিকিৎসকও বলেন, “রোগীদের রক্তের বন্দোবস্ত করা যাচ্ছে না। অথচ বেশ কিছু রোগীকে এখনই রক্ত না দিলে অঘটনও ঘটতে পারে। বাধ্য হয়ে রোগীদের রেফার করে দিতে হচ্ছে।”

ঘাটাল হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের মেডিক্যাল অফিসার শিবরাম হাঁসদা বলেন, “সংগ্রহের পরে ৩৫ দিনের মধ্যে সেই রক্ত ব্যবহার করতে হয়। না হলে তা নষ্ট হয়ে যায়। সম্প্রতি বাড়তি রক্ত তমলুক, বাঁকুড়া-সহ নানা ব্লাডব্যাঙ্কে সরবরাহ করেছিলাম। এখন আমাদেরই রক্তের অভাব।” ব্লাডব্যাঙ্কে এক ইউনিট রক্ত চাইলে পাল্টা রক্ত দিতে বলা হচ্ছে। অনেকে রক্ত জোগাড়ের জন্য ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তদানও করছেন। ব্লাড ব্যাঙ্কের এক কর্মী বলেন, “ঘাটালের বহু এলাকা এখনও জলমগ্ন। একাধিক শিবির বাতিল হয়ে যাওয়ায় রক্তের জোগান বাড়া সমস্যার।”

Blood bank Blood Blood Crisis Ghatal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy