Advertisement
০১ মে ২০২৪

৯০ বছরের পুরনো রেল ইঞ্জিনের প্রেমে ব্রিটিশ পর্যটকেরা

একদল ব্রিটিশ পুরুষ-মহিলা রেলের কারখানা চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। খোশমেজাজে শুনছেন রেল আধিকারিকদের কথা। এর মাঝেই ধোঁয়া উড়িয়ে বাঁশি বাজিয়ে এসে দাঁড়াল বাষ্পচালিত ‘বেয়ার গ্যারেট লোকোমোটিভ ইঞ্জিন’।

ইঞ্জিনের ছবি তুলছেন ব্রিটিশ প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র

ইঞ্জিনের ছবি তুলছেন ব্রিটিশ প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪২
Share: Save:

একদল ব্রিটিশ পুরুষ-মহিলা রেলের কারখানা চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। খোশমেজাজে শুনছেন রেল আধিকারিকদের কথা। এর মাঝেই ধোঁয়া উড়িয়ে বাঁশি বাজিয়ে এসে দাঁড়াল বাষ্পচালিত ‘বেয়ার গ্যারেট লোকোমোটিভ ইঞ্জিন’। একে-একে ইঞ্জিনে উঠলেন ওই বিদেশি পর্যটকেরা। এর পরে ইঞ্জিনের চাকা গড়াতেই উচ্ছ্বাসে ভেসে গেলেন তাঁরা।

সোমবার খড়্গপুর রেল কারখানা চত্বরে এমনই দৃশ্য দেখা গেল। এ দিন হাওড়া-যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে খড়্গপুরে পৌঁছয় ১৮ সদস্যের এই ব্রিটিশ প্রতিনিধি দল। স্টেশন চত্বরে সংবর্ধনার পরে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় রেল কারখানায়। একসময়ে ইংল্যান্ডেই তৈরি হয়েছিল এই বেয়ার গ্যারেট ইঞ্জিন। মূলত ‘লোকোমোটিভ ক্লাব অফ গ্রেট ব্রিটেনে’র সদস্য এই প্রতিনিধিরা বিভিন্ন দেশের বাষ্পচালিত রেল ইঞ্জিন পরিদর্শন করেন। এ দিন তাঁরা এসেছিলেন খড়্গপুর রেল কারখানায় থাকা দেশের ঐতিহ্যবাহী এই বেয়ার গ্যারেট ইঞ্জিন দেখতে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের প্রিন্সিপাল চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জয়ন্তকুমার সাহা বলেন, “দিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানে এই ইঞ্জিন সম্পর্কে একটি উপস্থাপনা করেছিলাম। সেটাই ভাইরাল হয়ে যায়। তার পরেই এই ব্রিটিশ ক্লাবের সদস্যেরা জানতে পেরে বিদেশ মন্ত্রকের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। আমরা বোর্ডের অনুমতি নিয়ে ওঁদের এই ইঞ্জিন ঘুরিয়ে দেখানোর ব্যবস্থা করেছি।” ইঞ্জিনে চড়ার পরে ওই প্রতিনিধি দলের সদস্য ক্যারেন হ্যামিল্টন রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। তিনি বললেন, “আমি তো এই বেয়ার গ্যারেট ইঞ্জিনের প্রেমেই পড়ে গেলাম!’’

হার্বাট উইলিয়াম গ্যারেট এবং চার্লস ফেব্রিক বেয়ারের যৌথ উদ্যোগে ১৯২৬ সালে তৈরি হয় এই ইঞ্জিন। ১৯২৯সাল থেকে বেঙ্গল নাগপুর রেলপথে এই ইঞ্জিনে দাপিয়ে চলেছিল। ১৯৭৯ সালের পরে আর এই ইঞ্জিন চলেনি। তবে ২০০৬ সালে শেষবার একদিনের হেরিটেজ যাত্রায় শালিমার থেকে কোলাঘাট পর্যন্ত এই ইঞ্জিন চালানো হয়েছিল। তার পর থেকে খড়্গপুর রেল কারখানায় পড়ে ছিল ইঞ্জিনটি। ২০১৬ সাল থেকে এই খড়্গপুর রেল কারখানার উদ্যোগেই এই ইঞ্জিনটি নতুন করে মেরামত করে চালানোর চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই গত সেপ্টেম্বরের পরে দু’বার পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছে এই ইঞ্জিন। শেষে মিলেছে সাফল্য। এ বার সর্বসাধারণের জন্য মূল রেলপথে এই ইঞ্জিনকে চালাতে রেল বোর্ডের অনুমতি চেয়েছে খড়্গপুর রেল কারখানা। তার আগেই ‘লোকোমোটিভ ক্লাব অফ গ্রেট ব্রিটেনে’র সদস্যেরা দেখলেন ঐতিহ্যবাহী রেল ইঞ্জিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tourists British Heritage Rail Engine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE