Advertisement
২০ মে ২০২৪
গোলবাজারের মন ভার

ব্যবসা জমেনি, কোপ কালীপুজোতেও

দোকান খুললেও খদ্দেরের দেখা নেই। শনিবার খড়্গপুর গোলবাজারের ছবি তুলেছেন রামপ্রসাদ সাউ।

দোকান খুললেও খদ্দেরের দেখা নেই। শনিবার খড়্গপুর গোলবাজারের ছবি তুলেছেন রামপ্রসাদ সাউ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ০১:০০
Share: Save:

দুর্গাপুজোর আগে ভরা বাজারে খুন হয়েছিল এক তরুণ। সেই ঘটনার জেরে বেশ কিছু দিন বন্ধ ছিল খড়্গপুরের প্রাণকেন্দ্র গোলবাজার। এ বার দীপাবলি। তার আগে গত সপ্তাহে ফের গোলমালের জেরে দোকানের ঝাঁপ বন্ধ হয়। অশান্তি থিতোনোয় ক’দিন হল বাজার খুলেছে। কিন্তু ক্রেতাদের দেখা নেই। ফলে, কালীপুজো-ভাইফোঁটার আগে ব্যবসায়ীদের কপালে ভাঁজ।

মন্দার এই বাজারে গোলবাজারের ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে যে দু’টি কালীপুজো হয়, তার আয়োজনেও ভাটার টান। সাতদিন আগেও খুঁটি পোঁতা হয়নি, তৈরি হয়নি বাজেট, এমনকী পাওয়া যায়নি প্রশাসনিক অনুমতি। ক্রেতাদের বক্তব্য, বাজারে গেলেও চাহিদামতো জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। পুরনো স্টকের ভরসায় বাজার চলছে। সে কথা মানছেন ব্যবসায়ীরাও। গোলবাজারের পোশাক ব্যবসায়ী সঞ্জয় সাহা, অনিকেত গুপ্তদের কথায়, “বাজার অনেকটা ছন্দে ফিরেছে। তবে পুজোর আগে যে জামাকাপড় তোলা হয়েছিল, সেই দিয়ে চালাতে হচ্ছে। টাকার অভাবে সমস্যা হচ্ছে। মহাজনদের টাকা দিতে না পারায় তাঁরা নতুন জিনিস দিতে চাইছেন না।’’

পুজোর আগে থেকে এই মন্দার ধাক্কা সামলে ওঠাটাই এখন ব্যবসায়ীদের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীপাবলি, ভাইফোঁটার কেনাকাটার বেশিরভাগ ভিড়টাই টেনে নিচ্ছে খড়্গপুরের শপিং মল অথবা পাশের শহর মেদিনীপুরের দোকান। ব্যবসায়ীদের আবেদন, আতঙ্ক কাটিয়ে ক্রেতারা আসুন। চাহিদা বাড়লেই পছন্দসই জিনিসের জোগান বাড়বে। যদিও গোলবাজারে ভাইফোঁটার বাজার করতে আসা সঞ্চিতা ভৌমিকের বক্তব্য, “ভাইয়ের জন্য জামা কিনতে এসেছিলাম। সত্যি বলতে যে বাজারে এতদিন শপিং মলের থেকেও বেশি পছন্দসই জিনিস পাওয়া যেত, সেখানে এখন ভাল জিনিসই নেই। তবে ব্যবসায়ী ভাইদের পাশে দাঁড়াতে আমি এখান থেকে নিজের ভাইয়ের জামা কিনেছি। আমি চাইব সকলে ওঁদের পাশে দাঁড়াক। তবেই তো বাজার স্বাভাবিক হবে।’’

প্রতি বছর গোলবাজারের ব্যবসায়ীরা দু’টি কালীপুজোর আয়োজন করেন। গোলবাজারের হকার্স মার্কেট শ্যামাপুজো কমিটির পুজোর এ বার ৪৫তম বর্য। আর গোলবাজার নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কালীপুজো এ বার ৪০ বছরে পা দিল। দু’টি পুজোই জাঁকজমকের জন্য খ্যাত। নিউ মার্কেটের কালীপুজোর তো গত বছর বাজেট ছিল দেড় লক্ষ টাকা।। কিন্তু এ বার দু’টি পুজোতেই মন্দার ছাপ। প্রতিবার দিন কুড়ি আগে থেকেই মণ্ডপ তৈরি শুরু হয়। এ বার সাত দিন আগেও বাঁশ পড়েনি। হকার্স মার্কেটের কালীপুজোর কর্মকর্তা কালাচাঁদ সাহার কথায়, “ব্যবসায়ীদের মন-মেজাজ ভাল নেই। কারও কাছে পুজোর জন্য টাকা চাইতে যেতেও খারাপ লাগছে। শুধু বলতে পারি প্রতিমার উচ্চতায় কোনও ফারাক হবে না। তবে মণ্ডপের জাঁক থেকে আলোকসজ্জার খরচ অনেক কমিয়ে আনা হবে।’’

নিউ মার্কেট কালীপুজো কমিটির সম্পাদক ব্যবসায়ী শ্যামল সাহাও একই সুরে বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের হাতে টাকা নেই। বিকিকিনি হচ্ছে না। এ বার পুজোর বাজেট ৫০ হাজার টাকা হবে কি না সন্দেহ। স্বাভাবিকভাবেই জাঁক কমে যাবে।’’ আতঙ্ক ঝেড়ে শহরবাসী কালীঠাকুর দেখতে আসবে কিনা, ব্যবসায়ীদের সেই সংশয়ও রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

golabjar business
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE