E-Paper

দ্রুত সেরে ফেলা প্রয়োজন কর সংক্রান্ত সব কাজকর্ম

প্রথমেই ঠিক করতে হবে নতুন নাকি পুরনো, কোন কর কাঠামোর আওতায় থাকতে চান। পুরনোতে সব ছাড় বহাল। নতুনে আছে মূলত স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন। সেই সঙ্গে হাতে গোনা কয়েকটি।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৪ ০৭:৫৮

—প্রতীকী চিত্র।

এখন চলছে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ। গোটা দেশের নজর ভোটে। ফলাফল কী হবে, অর্থনীতির জন্য কোনটা ভাল, বাজারের প্রতিক্রিয়া— এই সব নিয়েই সরগরম চারপাশ। তবে এই চাঞ্চল্যের মধ্যেও কর সংক্রান্ত কাজগুলোয় এ বার মন দিতে হবে।

প্রথমেই ঠিক করতে হবে নতুন নাকি পুরনো, কোন কর কাঠামোর আওতায় থাকতে চান। পুরনোতে সব ছাড় বহাল। নতুনে আছে মূলত স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন। সেই সঙ্গে হাতে গোনা কয়েকটি। যাঁরা বেশি ছাড় পাওয়ার যোগ্য, তাঁরা লাভজনক মনে করলে পুরনোটিকেই বেছে নিতে পারেন। না বাছলে ধরে নেওয়া হবে আপনি নতুন কাঠামোয় থাকতে আগ্রহী।

পুরনোকে বেছে নিলে চলতি অর্থবর্ষের জন্য এখন থেকেই বিভিন্ন কর সাশ্রয় প্রকল্পে টাকা জমাতে শুরু করা ভাল। তা হলে বছর শেষে কোনও চাপ থাকবে না। কর রিবেট ধরে পুরনোতে ৫ লক্ষ টাকা এবং নতুনে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর দিতে হবে না। ব্যবসা অথবা পেশাগত রোজগার না থাকলে যত বার খুশি কাঠামো পাল্টানো যাবে।

শুরু করে দিতে হবে চলতি অর্থবর্ষের রিটার্ন দাখিল করার কাজও। আশা করা যায়, ৩১ মে-র মধ্যে বিভিন্ন সূত্রে আয় এবং উৎসে কাটা করের (টিডিএস) তথ্য ফর্ম ২৬এএস এবং অ্যানুয়াল ইনফর্মেশন স্টেটমেন্টে (এআইএস) তোলা হবে। তা ভাল করে দেখে নিয়ে সব ঠিক থাকলে উদ্যোগী হতে হবে রিটার্ন জমায়। এর মধ্যে লিখিয়ে নিতে হবে ব্যাঙ্কের পাসবই অথবা জোগাড় করতে হবে ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট। হিসেব করে দেখতে হবে কর দেওয়ার আছে কি না। দেওয়ার থাকলে, তা ‘সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট ট্যাক্স’ হিসেবে রিটার্ন দাখিল করার আগেই জমা করে দিতে হবে। রিটার্ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ৩১ জুলাই। তবে ওই পর্যন্ত অপেক্ষা না করাই ভাল। জুনের মধ্যে জমা করে দিতে পারলে কর ফেরত (রিফান্ড) পাওয়ার থাকলে, তা দ্রুত পাওয়া যেতে পারে। রিটার্নের বিভিন্ন ফর্ম এ বার অনেক আগেই প্রকাশিত হয়েছে। অর্থাৎ আর দেরি না করে এখনই কাজ শুরু করে দেওয়া যায়।

এ দিকে, গত সপ্তাহে শেয়ার সূচক বাড়লেও অস্থিরতা কমেছে তা কিন্তু বলা যাবে না। শনিবারের বিশেষ লেনদেনে অস্থিরতা সূচক ‘ইন্ডিয়া ভিক্স’ ৩.৬৭% বেড়ে পৌঁছেছে ২০.৫৩ পয়েন্টে। বৃহস্পতিবার বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স ৬৭৭ (০.৯৩%) উঠেছিল বটে। তবে তা সকালে গোত্তা খেয়েছিল ০.৬%। উত্থানের নিরিখে ভারতীয় বাজার বিশ্বের অন্যান্য প্রধান বাজারগুলির তালিকায় এখন একদম নীচের দিকে। গত এক মাসে হংকং-এর হ্যাং সেং এবং আমেরিকার ন্যাসড্যাক ও ডাউ জোন্স যেখানে ৫ থেকে ৯ শতাংশের বেশি চড়েছে, সেখানে সেনসেক্স উঠেছে মাত্র ২.১%। নির্বাচন সংক্রান্ত নানা খবরে ৪ জুন পর্যন্ত বাজার চঞ্চল থাকতে পারে। দিশা পাবে ফলাফল ঘোষণার পরে নতুন সরকারের চেহারা কেমন হয় তা দেখে। ৭৫,০৩৮ পয়েন্টে উঠে সেনসেক্স শেষ নজির গড়েছিল ১০ এপ্রিল। এখন সেখান থেকে ১০৩২ পয়েন্ট পিছনে। আজ দেশে পঞ্চম দফার নির্বাচন। মুম্বইয়ে ভোট থাকায় আজ শেয়ার বাজার বন্ধ।

দেশের অর্থনীতির ভিত অবশ্য এই মুহূর্তে মজবুত। ফলে শক্তিশালী সরকার পেলে সূচক ফের দৌড়বে বলেই আশা। যদিও ফলাফল মনের মতো না হলে নামার আশঙ্কাও থাকছে। ভোট নিয়ে কোনও অনুমান ছাড়াও অনেক শেয়ার ওঠানামা করছে গত অর্থবর্ষের এবং তার চতুর্থ ত্রৈমাসিকে (জানুয়ারি-মার্চ) আর্থিক ফলের নিরিখে।

এপ্রিলে খুচরো এবং পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার নিয়ে উৎসাহিত হওয়ার কিছু নেই। বরং খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ভাবাচ্ছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক এবং ভারত সরকারকে। খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ০.০২% কমলেও, খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রে ০.১৮% বেড়ে পৌঁছেছে ৮.৭০ শতাংশে। যা চার মাসে সর্বোচ্চ। নির্বাচনকে ঘিরে খরচ হওয়া বিপুল টাকা পণ্যের দামকে আরও ঠেলে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা। তার উপর, অন্যান্য কয়েকটি অঞ্চলের পরে এ বার প্রবল তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। আগামী দিনে এরও প্রভাব পড়তে পারে খাদ্যপণ্যের দরে।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tax Taxpayers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy