ঝাড়গ্রাম বিশেষ দায়রা আদালত থেকে প্রিজন ভ্যানে ওঠার সময় রাজেশ মাহাতো। নিজস্ব চিত্র debraj ghosh
মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলার মামলায় ফের আদালতে হোঁচট খেল সিআইডি। রাজেশ মাহাতো, শিবাজী মাহাতো-সহ কুড়মি আন্দোলনের ৯ নেতা-কর্মীকে জেরা করতে হেফাজতে চেয়েছিল সিআইডি। কিন্তু বুধবার তা খারিজ করে দিলেন ঝাড়গ্রাম বিশেষ দায়রা আদালতের বিচারক জীমূতবাহন বিশ্বাস। ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশের হাত থেকে মামলার তদন্তভার নিয়ে এর আগেও রাজেশ-সহ ৭ অভিযুক্তকে হেফাজতে চেয়েছিল সিআইডি। গত ২৯ মে সেই আবেদনও খারিজ করেছিল এই আদালত।
এফআইআর-এ দুই অভিযুক্তের নাম না থাকায় জেলে তাঁদের টিআই প্যারেড করিয়ে ঘটনায় জড়িত থাকার স্বপক্ষে আদালতে প্রমাণ দাখিল করেছিল তদন্তকারী সংস্থা। তারপর রাজেশ-সহ ৯ জনকে হেফাজতে নিতে সোমবার আদালতে আবেদন করে সিআইডি। শুনানি ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু কুড়মিদের প্রতিবাদ জমায়েতের কারণে সংশোধনাগার থেকে রাজেশদের আদালতে আনা যায়নি। তাই আদালতের নির্দেশ মতো বুধবার রাজেশ মাহাতো, শিবাজী মাহাতো, অনুপ মাহাতো-সহ ৯ জেলবন্দি অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করা হয়। সরকারি আইনজীবী প্রশান্ত রায় জানান, তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তদের জেরা করা প্রয়োজন। অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী অশ্বিনীকুমার মণ্ডল পাল্টা আদালতে জানান, পুলিশের সুয়োমোটো মামলার ভিত্তিতে তদন্ত করছে সিআইডি। অথচ মন্ত্রীর গাড়ির চালকও ঝাড়গ্রাম থানায় পৃথক অভিযোগ করেছেন। তিনি অজ্ঞাতপরিচয় কিছু লোকজন গাড়িতে পাথর ছুড়েছিল বলে অভিযোগ করেন। তারও তদন্ত করছে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ। এর প্রতিলিপিও জমা দেন অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী। সব শুনে সিআইডি হেফাজতের আবেদন খারিজ করে ৯জনকেই ৬ দিনের জন্য জেল হাজতে পাঠায় আদালত।
অভিযুক্তপক্ষের অন্যতম আইনজীবী দেবনাথ চৌধুরী বলেন, ‘‘বিচারক তাঁর আদেশনামায় জানিয়েছেন, এই আদালতে আগে সাত অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন খারিজ হয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থা সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করেনি। পুনরায় সেই সাতজন সহ ৯ অভিযুক্তকে হেফাজতে চাওয়া হয়েছে। ফলে আইনের বিধান অনুযায়ী বিশেষ দায়রা আদালত সিআইডি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।’’ গ্রেফতার হওয়ার পর অভিযুক্তকে ১৪ দিনের মধ্যে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা যায়। রাজেশ-সহ ৯ অভিযুক্তকে পুলিশ ও সিআইডি পর্যায়ক্রমে গ্রেফতার করার পর ১১-১২ দিন কেটে গিয়েছে। এই ঘটনার মোট ১১ জন অভিযুক্তের অন্যতম জয় মাহাতো সিআইডি হেফাজত শেষে জেল হাজতে রয়েছেন। আরেক অভিযুক্ত কৌশিক মাহাতোকে সিআইডি হেফাজত শেষে আজ, বৃহস্পতিবার বিশেষ দায়রা আদালতে তোলা হবে।
এ দিন আদালত থেকে বেরিয়ে প্রিজন ভ্যানে ওঠার সময় রাজেশ ও শিবাজী বলেন, ‘‘ঘাঘর ঘেরা আন্দোলন চলছে, চলবে।’’ রাজেশ জোড়েন, ‘‘মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামে বিপুল জমায়েত প্রমাণ করেছে আন্দোলন ঠিক পথে চলছে।’’ রাজেশদের মুক্তির দাবিতেই ওই প্রতিবাদ জমায়েত করেছিল আদিবাসী কুড়মি সমাজ। তবে ভিড়ে ঠাসা সভায় সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা অজিতপ্রসাদ মাহাতো জানিয়েছিলেন, ‘ঘাঘর ঘেরা’র দরকার নেই। ‘কুটুম কুটমালি ভায়াদি জিয়াউ’ নামে নয়া কর্মসূচি ঘোষণা করেন অজিত।
ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা অভিজিৎ কাটিয়ার অবশ্য বলেন, ‘‘ঘাঘর ঘেরা আন্দোলন মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে। খারিজ বললেই সেটা খারিজ হবে না।’’ অভিজিতের দাবি, ১ মে ঘাঘর ঘেরা আন্দোলনের ১২ টি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। মঙ্গলবারের সভায় নাম বদলে যে সব কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলি তারই অন্তর্ভুক্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy