Advertisement
E-Paper

একশো দিনে গতি আনতে নির্দেশ

গত পাঁচ বছরে জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দাবি করেছেন, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে রাজ্য সেরা। তবে পরিসংখ্যান বলছে, জঙ্গলমহলের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কয়েকটি ব্লক এই প্রকল্পে পিছিয়ে রয়েছে। কয়েকটি ব্লক আবার জঙ্গলমহলের। দেখা যাচ্ছে, এই সব ব্লকে কয়েকশো মানুষ আবেদন করেও কাজ পাননি। পরিস্থিতি দেখে নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৬ ০২:৪৬

গত পাঁচ বছরে জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দাবি করেছেন, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে রাজ্য সেরা। তবে পরিসংখ্যান বলছে, জঙ্গলমহলের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কয়েকটি ব্লক এই প্রকল্পে পিছিয়ে রয়েছে। কয়েকটি ব্লক আবার জঙ্গলমহলের। দেখা যাচ্ছে, এই সব ব্লকে কয়েকশো মানুষ আবেদন করেও কাজ পাননি।

পরিস্থিতি দেখে নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন। দিন কয়েক আগেই ব্লকের প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে মেদিনীপুরে বৈঠক করেছেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা। পিছিয়ে পড়া ব্লকগুলোকে কাজে গতি আনার নির্দেশ দেওয়া হয়। এ বার ঝাড়গ্রামেও গিয়েও বৈঠক করার কথা ভাবছেন জেলাশাসক। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, শীঘ্রই ঝাড়গ্রামে ওই বৈঠক হবে।

কেন একশো দিনের কাজে পিছিয়ে জেলার বেশ কয়েকটি ব্লক?

সদুত্তর এড়িয়ে জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে জেলায় বৈঠক হয়েছে। প্রকল্পের পর্যালোচনা হয়েছে। ব্লকগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’’ জেলা পরিষদেরই এক কর্তা অবশ্য মানছেন, ‘‘কিছু ব্লকে কাজে একটু গতি বাড়ানো গেলে ভাল হত। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা চলছে।’’ জেলা পরিষদের এক কর্তার বক্তব্য, বিধানসভা ভোটের জন্য কিছু এলাকায় কাজ ব্যাহত হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গড়বেতা, জামবনি, কেশিয়াড়ি, মোহনপুরের মতো কয়েকটি ব্লক তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। ওই সূত্র জানাচ্ছে, ২০১৫-’১৬ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরে জব-কার্ড দেওয়া হয়েছে ৯,৪৭,৩৭৯টি পরিবারকে। কাজ চেয়ে আবেদন করেছেন ৫,৭৭,৭১৮টি পরিবার। আর কাজ দেওয়া সম্ভব হয়েছে ৫,৫০,৭৯৬টি পরিবারকে। এই জেলায় গড়ে ব্লক পিছু একশো দিন কাজ পেয়েছেন ২,৪৬৪টি পরিবার। এমন পরিবারের সংখ্যা গড়বেতা, জামবনি, কেশিয়াড়ি, মোহনপুরের মতো ব্লকে তুলনায় কম। গড়বেতায় ৮৭৭টি, জামবনিতে ৯৪৯টি, কেশিয়াড়িতে ৭১৯টি, মোহনপুরে ৯৭৬টি পরিবার একশো দিন কাজ পেয়েছে।

সংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত নন, এমন কেউ জব কার্ড পাওয়ার আবেদন করতে পারেন। তিনি পঞ্চায়েতে আবেদন করলে সরকার ১৫ দিনের মধ্যে কাজ দিতে বাধ্য। কাজ না পেলে মিলবে বেকার ভাতা। কিন্তু এই কার্ড বিলি এবং কাজ দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। কাজ প্রাপকদের নামের তালিকায় (মাস্টার রোল) প্রচুর ভুয়ো নাম ঢোকানো হয় বলে অভিযোগ। যে টাকায় যতখানি কাজ হওয়ার কথা বাস্তবে তার থেকে কম কাজ হয় বলেও অভিযোগ। কর্মকাণ্ড চলে শাসক দলের তত্ত্বাবধানে।

এই জেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা দাবি করেছেন, তাঁরা চান জঙ্গলমহলের ভাই-বোনেরা ১০০ দিনের প্রকল্পে ২০০ দিন কাজ করুন। তাঁর এই দাবি ঘিরে কম চাপানউতোর হয়নি। বামেদের বক্তব্য, একশো দিনের প্রকল্পে এ জেলা সাফল্য পেয়েছিল তাদের আমলেই। শাসক দলের অবশ্য বক্তব্য, এই দাবির ভিত্তি নেই। জেলার এক বাম নেতার মন্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী কখন কী বলেন, তা উনি নিজেও জানেন না! একশো দিনের প্রকল্পে কেন্দ্র যে অর্থ বরাদ্দ করে তাতে কখনওই সব পরিবারকে ১০০ দিন কাজ দেওয়া সম্ভব নয়।’’

তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘আমাদের সরকারের আমলেই একশো দিনের কাজ ভাল ভাবে এগোচ্ছে। আগে কাজের পরিস্থিতি ভাল ছিল না।’’

CM Mamata Banerjee work
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy