E-Paper

ঝড়ে ক্ষতি আম, লিচু, তেঁতুলেও

মেদিনীপুর সদর মহকুমার প্রায় প্রতি ব্লকেই ইতিউতি আম গাছ রয়েছে। ব্যবসায়িক ভিত্তিতেও আম চাষ করা হয় অনেক জায়গায়। অনেক গাছে ফলনও শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে মুকুল এবং ফলন দু’টোরই।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫ ০৮:০৮
আবহাওয়ার খামখেয়ালিপোনায় গাছ থেকে ঝরে গিয়েছে ছোট ছোট আম। ঘাটালে।

আবহাওয়ার খামখেয়ালিপোনায় গাছ থেকে ঝরে গিয়েছে ছোট ছোট আম। ঘাটালে। —নিজস্ব চিত্র।

ঝড়বৃষ্টিতে কেবল খেতের আনাজ কিংবা আলুই নয়, বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছে আম-সহ নানা ফলের ফলনও। দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের বহু গাছে মুকুলের পর আমের গুটি চলে এসেছিল। প্রবল ঝড়ে ঝরেছে গুটি। এমন পরিস্থিতিতে কম-বেশি তিন জেলার বাজারেই বিক্রি হতে শুরু করেছে ঝড়ে পড়ে যাওয়া কাঁচা আম। আবার ঝাড়গ্রাম জেলায় লিচু চাষ হয় বেশ কিছু জায়গায়। ঝড়ে লিচুরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির খোঁজ নিচ্ছে উদ্যানপালন দফতর।

মেদিনীপুর সদর মহকুমার প্রায় প্রতি ব্লকেই ইতিউতি আম গাছ রয়েছে। ব্যবসায়িক ভিত্তিতেও আম চাষ করা হয় অনেক জায়গায়। অনেক গাছে ফলনও শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে মুকুল এবং ফলন দু’টোরই। মেদিনীপুরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ঝড়বৃষ্টির মুকুলের ক্ষতি হচ্ছে। আমের গুটিও ঝরে যাচ্ছে।’’ গড়বেতার বাসিন্দা অমিয় রায়ের আমের বাগান রয়েছে। মুকুল ঝরেছে তাঁর বাগানেও। অমিয় বলছেন, ‘‘ঝড়ে উন্নত প্রজাতির আম গাছের মুকুল ঝরে পড়েছে।’’

ঘাটাল মহকুমার চিত্রটা প্রায় একই। এলাকার গাছ ভরেছিল মুকুলে। ফলনের সম্ভাবনাও ছিল ভালই। ঝড়বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় মুকুল ঝরে পড়েছে। ঘাটালের বাসিন্দা জয়দেব পাল বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে দু’টি গাছে প্রচুর আম হয়েছিল। ঝড় গাছের একটি আমও রাখেনি।’’

শিলাবৃষ্টিতে খড়্গপুর-১ ব্লকের বড়কোলা, গোকুলপুর, গোপালি এলাকার আম গাছেরও ক্ষতি হয়েছে। দাঁতনের দু’টি ব্লক ও মোহনপুর ব্লকে শিলাবৃষ্টির পর এলাকার পান চাষে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে। শনিবার দাঁতনের বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি মানছেন, ‘‘শিলাবৃষ্টিতে ভীষণ ক্ষতি হয়েছে।’’ দাঁতন ২ বিডিও অভিরূপ ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘ক্ষতির পরিমাণ জানতে তদন্ত চলছে।’’

ক্ষতির মুখে পূর্ব মেদিনীপুরের আম বাগানও। মুকুল থেকে গুটি এসে গিয়েছে চণ্ডীপুর ও ভগবানপুর এলাকার আমের বাগানগুলিতে। শেষ পর্যন্ত কতখানি আমের ফলন পাওয়া যাবে, তা নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। পরিতোষ পাত্র নামের এক বাগানের মালিক বলেন, ‘‘ঝড়ে যে পরিমাণ আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে, তাতে ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।’’ আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দানা জাতীয় শস্য চাষ করা কৃষকেরা। প্রবল রোদে পেকে গিয়েছিল মুগ, মুসুর, বিরি কলাই জাতীয় দানা শস্য। সেগুলিকে ঘরে তোলার কাজ চলছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে তা ঘরে তুলতে পারছেন না পাঁশকুড়ার, কোলাঘাট, মহিষাদল, ময়না এলাকার চাষিরা। অনুপ হাজরা নামে এক বিরি কলাই চাষির কথায়, ‘‘বৃষ্টির জন্য কলাই তুলতে পারা যাচ্ছে না।’’ ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে ঝাড়গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকার আম ও লিচু চাষ। গড়শালবনি এলাকার বাসিন্দা শ্যামসুন্দর মাহাতোর সাত একর জায়গা জুড়ে আম, লিচু, তেঁতুল বাগান রয়েছে। শ্যামসুন্দর বলছেন, ‘‘ঝড়বৃষ্টির জেরে সদ্য ধরা আমের গুটি ও লিচুর ফল যথেষ্ট পরিমাণে পড়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়েছে তেঁতুলও।’’

ঝাড়গ্রাম শহরের নুননুনগেড়িয়া এলাকার বাসিন্দা স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘দু’দিনের ঝড়বৃষ্টিতে ৭০ শতাংশ আম ঝরে পড়ে গিয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

storm sudden rainfall Mango Lichi Tamarind

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy