Advertisement
১৮ মে ২০২৪

স্বীকৃতি মিললেও মেলেনি ঋণ, সমস্যায় শঙ্খ শিল্পীরা

হস্তশিল্পী হিসেবে সরকারিভাবে পরিচয়পত্র মিলেছে চার বছর আগে। সরকারি কার্ড পেয়ে ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে ব্যবসা বাড়বে, আশায় ছিলেন কোলাঘাটের যোগীবেড় ও কুমারহাট গ্রামের শঙ্খ শিল্পীরা। কিন্তু চার বছরেও মেলেনি ব্যাঙ্ক ঋণ। ফলে হতাশ শঙ্খশিল্পীরা।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৭ ০০:৫০
Share: Save:

হস্তশিল্পী হিসেবে সরকারিভাবে পরিচয়পত্র মিলেছে চার বছর আগে। সরকারি কার্ড পেয়ে ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে ব্যবসা বাড়বে, আশায় ছিলেন কোলাঘাটের যোগীবেড় ও কুমারহাট গ্রামের শঙ্খ শিল্পীরা। কিন্তু চার বছরেও মেলেনি ব্যাঙ্ক ঋণ। ফলে হতাশ শঙ্খশিল্পীরা।

জেলা শিল্প কেন্দ্র ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বস্ত্র মন্ত্রকের অধীন হস্তশিল্প উন্নয়ন কমিশনারের দফতর থেকে কুটির শিল্পীদের আর্টিসান ফটো আইডেনটিটি কার্ড দেওয়া শুরু হয়েছিল ২০১২ সাল নাগাদ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মাদুর, শঙ্খশিল্প, কাঁসা-পিতল ও চিত্রকর মিলিয়ে প্রায় ৩৭ হাজার ৮০০ হস্তশিল্পীকে এই পরিচয় পত্র দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোলাঘাট এলাকার যোগীবেড়, কুমারহাট ও পটাশপুরের অমর্ষি এলাকার শঙ্খ শিল্পীরা রয়েছেন। কোলাঘাটের যোগীবেড় গ্রামে ২৫ টি পরিবার ও পাশের কুমারহাট গ্রামের ৫ টি পরিবার শঙ্খ শিল্পের সাথে বংশপরম্পরায় জড়িত। মূলত সামুদ্রিক শাঁখ থেকে মেয়েদের হাতে পরার শাঁখা ও বাজানোর শাঁখ তৈরি করে বিক্রি করেন শিল্পীরা। বর্তমানে শাঁখার চাহিদা আগের চেয়ে কমে যাওয়ায় শিল্পীরা আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন বলে অভিযোগ।

যোগীবেড়ের শঙ্খ শিল্পী ৮২ বছরের ফণীভূষণ দত্ত, ৬২ বছরের তপন দত্ত এই পেশায় যুক্ত। তপনবাবু বলেন, ‘‘পারিবারিক সূত্রে পেশায় এসেছি। একসময় ভাল আয় হলেও গত ৫-৬ বছরে আয় কমেছে। ব্যবসার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ না পাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।’’ ওই গ্রামের বাসিন্দা প্রণব হাজারি শঙ্খ শিল্পী হিসেবে কাজ করছেন ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে। প্রণববাবু বলেন, ‘‘আশায় ছিলাম ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে ব্যবসা বৃদ্ধি করব। কিন্তু ২ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক ঋণের জন্য আবেদন করার পর কয়েক বছর কেটে গেল। কিছুও তো হাতে পেলাম না।’’

অভিযোগ মানছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার শমিত চট্টৈপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘হস্তশিল্পী হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন প্রোগ্রাম স্কিমে শঙ্খ শিল্পীদের ব্যাঙ্ক ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ হয়েছিল। কিন্তু এই প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক ঋণে ভর্তুকি বা সুদে ছাড়ের সুযোগ না থাকায় অনেকেই ঋণ নিতে আগ্রহ দেখাননি।’’ তবে শমিতবাবুর আশ্বাস, ‘‘হস্তশিল্পীদের আগে দেওয়া পরিচয়পত্রের বদলে আধার নম্বর যুক্ত করে নতুন পরিচয়পত্র দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনায় ব্যাঙ্ক ঋণ দিয়ে সাহায্য করার জন্য উদ্যোগী হবে প্রশাসন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Conch artist Loan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE