উন্নয়নকে রাস্তা ছেড়ে দিল বিরোধী দল।
রাস্তা দখল করে তৈরি হয়েছিল সিপিআইয়ের দলীয় কার্যালয়। রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য ভাঙতেই হত সেই কার্যালয়। পুরসভা সোমবার তা ভেঙে দিল। উন্নয়নের স্বার্থে সে কাজে বাধা দিল না সিপিআই। বিরোধী দলের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাল শাসক দল।
গত বছর অগষ্ট মাসে ঝাড়গ্রামের নতুন জেলা কালেক্টরেট চালু হয়েছে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বতন রাজ কলেজের মাঠে। জেলা কালেক্টরেট হওয়ার পর ওই এলাকায় মানুষজনের যাতায়াত ও গাড়ির আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে। এ জন্য ঝাড়গ্রাম শহরের কলেজ মোড় থেকে জামবনি মোড় পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি সম্প্রসারণ করেছে পূর্ত দফতর। কিন্তু ওই রাস্তার দু'ধারে ছিল জবরদখল। তার বেশ কিছু সরানো হয়েছে। কিন্তু রাজ কলেজ সংলগ্ন শনি মন্দির থেকে জেলাশাসকের কার্যালয়ের দিকে যাওয়ার মোড়ে কয়েকটি দোকান ও সিপিআইয়ের একটি পার্টি অফিস ছিল। জবরদখল করেই গড়ে উঠেছিল দোকানগুলি। এবং পার্টি অফিসও। জবরদখলের ফলে ওই রাস্তা দিয়ে জেলাশাসকের কালেক্টরেট ও জেলাশাসকের বাংলোয় যাতায়াতের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছিল। তাই পুরসভার তরফ থেকে ওই পার্টি অফিসটি ভেঙে ফেলার জন্য জানানো হয়।
এ দিন সকালে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি গৌতম মাহাতো নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পার্টি অফিসটি পে-লেডার দিয়ে ভেঙে দেন। পুরপ্রতিনিধি গৌতম বলেন, ‘‘এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে ওই রাস্তাটি চওড়া প্রয়োজন। রাস্তাটি চওড়ার জন্য পূর্ত দফতরকে হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু রাস্তার মোড়ে কয়েকটি দোকান ও সিপিআইয়ের পার্টি অফিসটি জবরদখল ছিল। পার্টি অফিসটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।’’ গৌতম মানছেন, ‘‘উন্নয়নের জন্য সিপিআই সাহায্য করেছে। এ জন্য বিরোধী দলকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।’’ ঝাড়গ্রাম পুরসভার একমাত্র বিরোধী দল সিপিআই। শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআইয়ের পুরপ্রতিনিধি হলেন ছবি দাস। দেবজ্যোতি ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা ঝাড়গ্রাম পুরসভা একমাত্র বিরোধীদল। উন্নয়নে কোনও বিরোধিতা নেই। উন্নয়নের স্বার্থে পার্টির মধ্যে আলোচনা করে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল।’’ পূর্ত দফতরের ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘রাস্তাটি এখন পুরসভার রয়েছে। হস্তান্তর প্রক্রিয়া হলেই রাস্তাটি ১৮ ফুট চওড়া করা হবে।’’
বিরোধী দলের এরকম আচরণ যে নজিরবিহীন তা স্বীকার করেছেন শাসক দলের নেতারা। শহর তৃণমূলের সভাপতি নবু গোয়ালা বলেন, ‘‘উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে বিরোধীরা যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)