Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
লোয়াদা সেতু

আলোচনায় খোদ দেব, জমি জট কাটার আশা

১৪ বছরেও চালু হয়নি সেতু। জমি জটে আটকে রাস্তা তৈরির কাজ। সমস্যা মেটাতে এ বার আসরে নামলেন তৃণমূলের তারকা-সাংসদ দেব।

অন্য ভূমিকায়... ডেবরায় তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে খোশমেজাজে তারকা সাংসদ দেব। শনিবার রামপ্রসাদ সাউয়ের তোলা ছবি।

অন্য ভূমিকায়... ডেবরায় তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে খোশমেজাজে তারকা সাংসদ দেব। শনিবার রামপ্রসাদ সাউয়ের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডেবরা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৪৭
Share: Save:

১৪ বছরেও চালু হয়নি সেতু। জমি জটে আটকে রাস্তা তৈরির কাজ। সমস্যা মেটাতে এ বার আসরে নামলেন তৃণমূলের তারকা-সাংসদ দেব।

লোয়াদা সেতুর জমি জট কাটাতে শনিবার ডেবরা চকে সাংসদ কার্যালয়ে আলোচনায় বসেন দেব। ডেবরা অডিটোরিয়ামে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দেওয়ার পরে ছিল ওই কর্মসূচি। লোয়াদার নরহরিপুর মৌজার বেশ কয়েকজন জমিদাতার সঙ্গে সাংসদের কথা হয়। লোয়াদা সেতুর সংযোগকারী সড়কের জন্য জমি দিতে আগ্রহী নন্দবাড়ি ও ফতেবাড় মৌজার বাসিন্দারা। তবে জমির দাম নিয়ে আপত্তি রয়েছে নরহরিপুরের বসিন্দাদের। স্থানীয় তৃণমূল নেতা, দলের জেলা নেতা থেকে জেলা পরিষদের প্রতিনিধিরা বারবার আলোচনা করেও সমস্যা মেটাতে পারেননি। এ দিন আলোচনার পরে ঘাটালের তারকা সাংসদ বলেন, ‘‘এটা তো মানতে হবে যে দেব নামটা মানুষের মনে কিছুটা হলেও রেখাপাত করে। আমার তো ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। কিন্তু আমি আসায় যদি ওঁদের মনে হয় ওঁরা গুরুত্ব পেলেন, তাহলে নিশ্চয়ই ওঁরাও নমনীয় হবেন। সেই সঙ্গে আমি চাইব ওঁদের যাতে লোকসান না হয়।’’

২০০২ সালে ডেবরার লোয়াদায় কাঁসাইয়ের উপরে সেতু তৈরি শুরু হয়। বরাদ্দ প্রায় ৯ কোটি টাকায় কাজ এগোয়। ২০০৭ সালে নদীর উপরের অংশের কাজ হয়ে গেলেও রায়ত জমির জটে সংযোগকারী রাস্তার কাজ থমকে যায়। সম্প্রতি কাঁসাইয়ের উত্তর অংশে নন্দবাড়ি ও দক্ষিণ অংশে ফতেবাড় মৌজার বাসিন্দারা জমি দিতে আগ্রহী হয়েছে। কিন্তু বেঁকে বসেছে নরহরিপুর মৌজা। তাদের অভিযোগ, ফতেবাড় মৌজায় জমির দর যেখানে প্রতি ডেসিমেল প্রায় ৬ লক্ষ টাকা, সেখানে নরহরিপুরে প্রতি ডেসিমেলে দাম মাত্র ৯৫ হাজার টাকা। জমিদাতারা এই দরে রাজি নন। কিন্তু কয়েকজন জমিদাতার সঙ্গে কথা বলে কি সমস্যার সমাধান সম্ভব? দেবের জবাব, ‘‘যাঁরা এসেছেন তাঁরা জমিদাতাদের প্রতিনিধি। ওঁরা সকলের হয়েই কথা বলবেন বলে আশা। ওঁরাও চান সেতু তাড়াতাড়ি চালু হোক। আমার কাজ ওঁদের দাবিগুলি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছনো।”

এ দিনের পরে সমস্যার সমাধান নিয়ে আশাবাদী তারকা সাংসদ। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলার মানুষের কাছে টাকার থেকেও মানসম্মান বেশি দামী। তাই এখানে আসা। ওঁদের দাবি আমি দিদির কাছে পৌঁছে দেব। প্রয়োজনে আমরাও এলাকায় যাব।’’ দেবের সঙ্গে কথার পরে জমিদাতাদেরও কিছুটা নমনীয়। আলোচনায় আসা জমিদাতা প্রতিনিধি জয়ন্ত শাসমল বলেন, “সাংসদ আমাদের কথা শুনেছেন। আমাদের বিশ্বাস তিনি কিছু একটা করবেন। আমরা চাইছি একটা রফাসূত্র তৈরি হোক। তবে যে দাম এখন দেওয়া হচ্ছে তাতে জমি দেব না।”

দেবের উপস্থিতিতে এ দিনের বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে আবার ছায়া ফেলেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন তৃণমূলের ডেবরা ব্লক সভাপতি রতন দে-র বিরোধী বলে পরিচিত জেলা সাধারণ সম্পাদক অলোক আচার্য। মঞ্চে দেব, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি হাজির হওয়ার পরেও ব্লক সভাপতি রতনবাবু, স্থানীয় বিধায়ক সেলিমা খাতুনকে দেখা যায়নি। অনেক পরে তাঁরা এসেছেন জেলা কার্যকরী সভাপতি নির্মল ঘোষের সঙ্গে। নিজের ব্লকের বিজয়া সম্মিলনীতে রতনবাবু বক্তব্যও রাখেননি। পরে তিনি বলেন, ‘‘আমি রক্তদান শিবিরে ছিলাম। তাই দেরি হয়েছে।’’ এ দিন মঞ্চে ছিলেন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, বিধায়ক ফিরোজা বিবি, শিউলি সাহা, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ।

বৃষ্টির জন্য অবশ্য দেব এ দিন ঘাটাল শহরে আসেননি। কুশপাতার বিবেকানন্দ পল্লিতে শিশু উদ্যানের শিলান্যাস করার কথা ছিল তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

loyada bridge issue deb
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE