Advertisement
০৭ মে ২০২৪

প্রতিবন্ধতাকে হার মানিয়ে সফল দেবমাল্য

খড়্গপুরের ইন্দা বাজারে দেবমাল্যর বাবা প্রবীরকুমার বসাকের ছোট দোকান রয়েছে। মা রীতাদেবী গৃহবধূ। সর্বশিক্ষা মিশন থেকে এতদিন ভাতা পেতেন খড়্গপুরের ইন্দার বিদ্যাসাগরপুরের বাসিন্দা দেবমাল্য।

লড়াই: বাবা-মার হাত ধরেই সংগ্রাম দেবমাল্যর।- নিজস্ব চিত্র

লড়াই: বাবা-মার হাত ধরেই সংগ্রাম দেবমাল্যর।- নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৭ ০১:৪৫
Share: Save:

দু’পায়ে জোর নেই। ডান হাতেও কোনও কাজ করতে পারেন না তিনি। যদিও প্রতিবন্ধকতাকে কোনও দিন জীবনে বাধা মনে করেননি দেবমাল্য বসাক। উচ্চ মাধ্যমিকে ৩৫৮ নম্বর পেয়েছে খড়্গপুরের ইন্দা কৃষ্ণলাল শিক্ষা নিকেতনের

ছাত্র দেবমাল্য।

খড়্গপুরের ইন্দা বাজারে দেবমাল্যর বাবা প্রবীরকুমার বসাকের ছোট দোকান রয়েছে। মা রীতাদেবী গৃহবধূ। সর্বশিক্ষা মিশন থেকে এতদিন ভাতা পেতেন খড়্গপুরের ইন্দার বিদ্যাসাগরপুরের বাসিন্দা দেবমাল্য। অভাবের কথা জানতে পেরে স্কুলের ফি নিতেন না প্রধান শিক্ষকও। এ বার স্নাতকস্তরে কী ভাবে পড়াশোনো চলবে তা নিয়ে চিন্তায় দেবমাল্য। প্রবীরবাবু বলছেন, “জন্ম থেকেই আমার ছেলে প্রতিবন্ধী। আমি কোনওরকমে ওকে স্কুলে নিয়ে যেতাম। এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ওঁর এই ফলে আমরা গর্বিত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমার ছোট দোকানের অল্প আয়ে কোনও মতে সংসার চলে। আগামীদিনে ছেলের পড়াশোনার খরচ কী ভাবে চালাব তা নিয়েই ভাবছি। তবে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব।”

দেবমাল্যের ফলে খুশি স্কুলের শিক্ষকেরাও। প্রধান শিক্ষক পার্থ ঘোষ বলছেন, “পঞ্চম শ্রেণি থেকেই দেখেছি ওর পড়াশুনোর প্রতি খুব আগ্রহ। ওঁদের অভাবের কথা জেনে স্কুলের ফি নিতাম না। ও ইংরেজি অনার্স নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। আমার বিশ্বাস ও জীবনে সাফল্য পাবেই।” নিজের লক্ষ্যে অটল দেবমাল্য বলছেন, “আমার কথা জড়িয়ে যায় বলে উচ্চ মাধ্যমিকে লেখক নিইনি। নিজেই লিখেছি। তাই সব প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলেও সময়ের অভাবে লিখে শেষ করতে পারিনি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এখন বাড়িতে লেখা অভ্যাস করছি। আগামী দিনে নিশ্চয় সকলের মতো লিখতে পারব। আর পড়াশোনা করে বাবা-মার কষ্ট দূর করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE