Advertisement
E-Paper

বাড়িতে প্রসব নিরাপদ নয়, পিকনিকে পরামর্শ হবু মায়েদের

বছর কয়েক আগে প্রসূতিদের সচেতনতা বাড়াতে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর হাসপাতালে পিকনিকের আয়োজন হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি গ্রামীণ হাসপাতালে পিকনিকের আয়োজন হয়েছে।

সৌমেশ্বর মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:২০
সচেতনতা: খুঁটিনাটি বোঝানো হচ্ছে অন্তঃসত্ত্বাদের। নিজস্ব চিত্র

সচেতনতা: খুঁটিনাটি বোঝানো হচ্ছে অন্তঃসত্ত্বাদের। নিজস্ব চিত্র

বাড়িতে নয়, সন্তান প্রসবের জন্য প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার বার্তা দিয়ে প্রচার হয়েছে বিস্তর। যদিও এখনও বাড়িতে সন্তান প্রসব সম্পূর্ণ ঠেকানো যায়নি। এ বার তাই সচেতনতা বাড়াতে গর্ভবতী মহিলা ও তাঁর শাশুড়িকে নিয়ে ‘মাদার পিকনিক’ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এই পিকনিকে আড্ডা-খাওয়াদাওয়ার মাঝেই প্রসূতি ও তাঁর পরিজনেদের বোঝানো হচ্ছে, বাড়িতে প্রসবে ক্ষতি কী। বোঝানো হচ্ছে হাসপাতালে প্রসবের উপযোগিতাও।

বছর কয়েক আগে প্রসূতিদের সচেতনতা বাড়াতে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর হাসপাতালে পিকনিকের আয়োজন হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি গ্রামীণ হাসপাতালে পিকনিকের আয়োজন হয়েছে। সোমবার কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতালেও আয়োজন হয় ‘মাদার পিকনিক’-এর। পিকনিকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলছে আড্ডার ছলে প্রচার। থাকছে খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও। আড্ডার মাঝেই এলাকার গর্ভবতী মহিলাদের বোঝানো হচ্ছে, এই সময়ে কোন কোন বিষয়ে নজর রাখতে হবে। প্রসূতির খাদ্যতালিকায় কোন কোন খাবার রাখা প্রয়োজন। দিনে কতক্ষণ বিশ্রাম নিতে হবে। কী ভাবে গর্ভস্থ শিশুর দিকে নজর রাখতে হবে।

গ্রামের মায়েরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রক্তাল্পতার সমস্যায় ভোগেন। প্রসূতি ও মার শরীরে ক্যালসিয়াম ও আয়রনের অভাবও দেখা দেয়। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে কী কী করা উচিত তাও বোঝানো হচ্ছে আলোচনায়। প্রসূতির পরিজনেদের বোঝানো হচ্ছে, গর্ভবতী মহিলার হাত পা ফুলে গেলে, ব্লাড প্রেসার বেড়ে গেলে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

প্রসূতির বাড়ির লোকেদের বোঝানো হচ্ছে, বাড়িতে প্রসব হলে অনেক জটিলতা তৈরি হতে পারে। যা থেকে মা ও শিশু উভয়ের প্রাণ সংশয়ও হতে পারে। শিশুর জন্মের পর অনেক বিষয়ে নজর রাখা প্রয়োজন। যেমন, বাচ্চার জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হেপাটাইটিস বি ইঞ্জেকশন দিতে হয়। বাড়িতে প্রসব হলে অনেকক্ষেত্রেই তা দেওয়া হয় না। হাসপাতালে প্রসবের পর ৪৮ ঘণ্টা মা ও শিশুকে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তারপরই মা ও বাচ্চাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়। বাড়িতে প্রসব হলে এ সব দিকে নজর রাখা সম্ভব নাও হতে পারে।

প্রসূতিদের জানানো হচ্ছে, বাড়ি থেকে প্রসূতিকে আশা কর্মীরাই গাড়িতে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। প্রসবের পর মা ও বাচ্চাকেও গাড়ি করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়। বাচ্চার মাকে নগদ এক হাজার টাকাও দেওয়া হয়। বাড়িতে যাওয়ার পরও কোনও সমস্যা হলে বাচ্চা ও মাকে গাড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থাও রয়েছে। অনেকে হাসপাতালে আসতে ভয় পান। তাই পিকনিকে আলোচনার পর গর্ভবতী মহিলাকে হাসপালের প্রসূতি ওয়ার্ড ঘুরিয়ে দেখানো হয়।

অনেক মা হাসপাতালে আসতে ভয় পান। তাই পিকনিকে আলোচনার পর মায়েরদের হাসপালের প্রসুতি ওয়ার্ড ঘুরিয়ে দেখানো হচ্ছে। গর্ভবতী অবস্থায় কী কী খেতে হয়, তা বোঝাতে হাসপাতালে বিভিন্ন রকম পদ রান্না করে মহিলাদের খাওয়ানোও হচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘বাড়িতে প্রসব কমাতেই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্লক হাসপাতালে বছরে চারবার পিকনিক হবে।’’

Pregnant women Pregnancy Health Department পশ্চিম মেদিনীপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy