বন্ধ এটিএমের ঝাঁপ। নিজস্ব চিত্র।
পেরিয়ে গেল পঞ্চাশ দিন। নোটের আকাল ঘুচল কই? — প্রশ্নটা ঘুরে বেড়াচ্ছে মুখে মুখে।
ঘাটালে এখনও ব্যাঙ্কিং পরিষেবায় কোনও উন্নতি হয়নি। টাকা তুলতে গিয়ে এখনও হয়রানির শিকার হচ্ছেন আমজনতা। আর সমবায়গুলির অবস্থা আরও খারাপ। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানতে চাইছেন পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে? কিন্তু উত্তর দেবে কে! ঘাটাল স্টেট ব্যাঙ্কের চিফ ম্যানেজার সুব্রত বিশ্বাস অবশ্য এই পরিস্থিতিতেও আশ্বাস দিচ্ছেন, “পরিস্থিতি ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে। গ্রাহকের চাহিদা মতো টাকা দেওয়ার চেষ্টা করছি। দ্রুত এটিএম চালু বিষয়েও উদ্যোগী হচ্ছি।” প্রায় উল্টো কথা শোনালেন তমলুক-ঘাটাল সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের সহ-সভাপতি কৌশিক কুলভী বলেন, “নগদের অভাবে সমবায়গুলি থেকে চাষিদের দাদন দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সমবায় গ্রাহকরা এখনও দু’চার হাজার টাকার বেশি পাচ্ছেন না। বন্ধ ঋণ আদায়ও।’’ স্বাভাবিক ভাবেই একাধিক সমবায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
তবে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই ঘাটাল শহর-সহ মহকুমার বিভিন্ন এলাকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে ভিড় কমতে শুরু করেছিল। নভেম্বরের লম্বা লাইন আর চোখে পড়ছে না। কিন্তু তা বলে নগদ সঙ্কট মিটে গিয়েছে তা মানতে চাইছেন না ব্যাঙ্ক কর্মীরাও। ঘাটাল শহরের এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী বললেন, ‘‘ভিড় কমছে, কারণ যাঁরা পুরোনো নোট জমা করতে চাইছিলেন, এখন তাঁরা আর আসছেন না। নোট বদলানোর গল্প তো আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন শুধু টাকা তুলতে আসছেন গ্রাহকেরা। বেশিরভাগই ফিরে যাচ্ছেন টাকা না-পেয়ে।’’ স্বাভাবিক হয়নি এটিএম-গুলিও। দু’একটি ব্যাঙ্কের এটিএমে টাকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু চোখের নিমেষে তা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ঘাটাল শহরের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বলেন, “নোট বাতিলের পর থেকে মোট তিন দিন এটিএমে টাকা ভরেছিলাম। তারপর থেকে এটিএম বন্ধ করে দিয়েছি। নিরাপত্তা রক্ষীদের ছুটি দিয়ে দিয়েছি। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বুঝতে পারছি না।’’ ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কে ঋণ দেওয়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সমবায়ের ম্যানেজারেরা বলছেন, প্রতি মাসে সমবায় গুলিতে গড়ে ১৫-২০ লক্ষ শুধু ঋণের টাকাই আদায় হতো। দু’মাস হতে চলল ঋণের টাকা আদায় প্রায় বন্ধ। সরকার নজর না দিলে এ বার সমবায় গুলি লাটে উঠবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy