ডেঙ্গির হানা পশ্চিম মেদিনীপুরে।
দিন কয়েক আগে গড়বেতা-৩ ব্লকের নবকোলায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুই কিশোরীর মৃত্যু হয়েছিল। বেশ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তিও হন। আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে যে ১৮ জনের রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছিল, তার মধ্যে ১১ জনের রক্তেই ডেঙ্গির জীবাণু পাওয়া গিয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘এটা প্রাথমিক রিপোর্ট। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার মধ্যে কয়েকজনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে।’’ এই রিপোর্টে উদ্বিগ্ন জেলার স্বাস্থ্য-কর্তারা। যদিও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে। দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’’
কলকাতা থেকে ওই রিপোর্ট আসার পরে জেলায় অবশ্য হইচই পড়ে গিয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্য-কর্তার মতে, নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার না হওয়ায় মশার উপদ্রব বাড়ছে। শহর থেকে গ্রাম— সর্বত্র এক ছবি। বৃষ্টিতে জঞ্জাল ধুয়ে নর্দমায় পড়ছে, জল জমছে। নোংরা জলে ডিম পাড়ছে মশা। আর তা থেকেই ডেঙ্গির মতো মশাবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাই সচেতনতায় জোর দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতা কর্মসূচির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এই রোগের উপসর্গ, কী ভাবে রোগ ছড়াতে পড়ে, সাবধানতায় কী করণীয় সে সব জানানো হচ্ছে।’’ তিনি আরও জানান, নবকোলা এলাকায় মশা তাড়ানোর জন্য ধোঁয়া দেওয়া হচ্ছে। মশার লার্ভা মারতে ছড়ানো হচ্ছে তেল। মশা-নাশক রাসায়নিকও স্প্রে করা হচ্ছে।
গত বছরও পশ্চিম মেদিনীপুরে শতাধিক মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। এক কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুও হয়। এই রোগ ঠেকাতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ, ডেঙ্গির লক্ষ্মণ দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। জেলার এক স্বাস্থ্য-কর্তা বলেন, “এডিস ইজিপ্টাই প্রজাতির মশা এই রোগের বাহক। এরা সাধারণত দিনের বেলায় কামড়ায়। ফলে, সতর্ক থাকতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy