Advertisement
২৭ জুলাই ২০২৪

দেবের কর্মিসভার দখল নিল পড়ুয়ারা

নতুন সাংসদের প্রথম কর্মিসভা। দলীয় কর্মী-সমর্থকরা জড়ো হবেন, এমনটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সাংসদ সামনে তাকিয়ে দেখলেন, গিজগিজ করছে স্কুলের পোশাক! সভার দখল চলে গিয়েছে স্কুলপড়ুয়াদের হাতে! তার মধ্যে অন্তত শ’তিনেক আবার ছাত্রী! সাংসদ নিজেই অবাক! বলে ফেললেন, “তোমাদের আজ স্কুল নেই?” উত্তর যেটা এল, তার উপরে আর কথা চলে না! হাসির রোল তুলে ছাত্রীরা জানাল, “দিদিমণিরাও সঙ্গে এসেছেন!”

দেব-দর্শন। খড়্গপুরের মাওয়ায় অভিনেতা-সাংসদকে ঘিরে পড়ুয়াদের উল্লাস। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ

দেব-দর্শন। খড়্গপুরের মাওয়ায় অভিনেতা-সাংসদকে ঘিরে পড়ুয়াদের উল্লাস। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ

দেবমাল্য বাগচি
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১০
Share: Save:

নতুন সাংসদের প্রথম কর্মিসভা। দলীয় কর্মী-সমর্থকরা জড়ো হবেন, এমনটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সাংসদ সামনে তাকিয়ে দেখলেন, গিজগিজ করছে স্কুলের পোশাক!

সভার দখল চলে গিয়েছে স্কুলপড়ুয়াদের হাতে! তার মধ্যে অন্তত শ’তিনেক আবার ছাত্রী!

সাংসদ নিজেই অবাক! বলে ফেললেন, “তোমাদের আজ স্কুল নেই?”

উত্তর যেটা এল, তার উপরে আর কথা চলে না! হাসির রোল তুলে ছাত্রীরা জানাল, “দিদিমণিরাও সঙ্গে এসেছেন!”

সোমবার পিংলায় দেবের কর্মিসভা উপছে পড়ল এমনতর ‘কর্মী’দের ভিড়েই।

শুধু পিংলা কেন? এ দিন সবং-পিংলা ও ডেবরা বিধানসভার যে চারটি এলাকায় কর্মিসভা করেছেন দেব, সর্বত্রই তাঁকে ঘিরে স্কুলপড়ুয়া ও অল্পবয়সীদের হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। এলাকার অভাব-অভিযোগের কথা সাংসদের কানে তোলার ইচ্ছে থাকলেও সেই সুযোগই পাননি দলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মী।

সবংয়ের শ্বেতচক, পিংলার কালীতলা, খড়্গপুর-২ ব্লকের মাওয়া ও ডেবরা বাজারে এ দিন সাংসদের প্রথম কর্মিসভা ছিল। বেলা ১১টা নাগাদ প্রথম সভা হয় সবংয়ে। একমাত্র সেখানেই স্কুলপড়ুয়া ও অল্পবয়সীদের ভিড় ছিল তুলনায় কম। পিংলার কর্মিসভা কার্যত দখলই করে নিয়েছিল স্থানীয় একটি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষিকা-সহ কয়েক জন শিক্ষিকাও।

মাওয়ার কর্মিসভাতেও পড়ুয়াদের হুড়োহুড়ি। কেউ ফুল ছুড়ছে, কেউ চাইছে অটোগ্রাফ। ছাত্রছাত্রীদের উচ্ছ্বাস দেখে দেবও সিনেমা নিয়েই কথা বললেন তাদের সঙ্গে। কেউ আবদার করল, “নাচ হবে না?” কারও দাবি, “যোদ্ধার গান হয়ে যাক একটা।” হাসিমুখে সে সবই সামলালেন দেব। গলার ফুলের মালা খুলে ছুড়ে দিলেন। অনুশ্রী জানা, আলাপন মহাপাত্র, পৌলমী পালরা ভারী খুশি। “দেবকে কাছ থেকে দেখব বলে স্কুলের অনুমতি নিয়েই এসেছি। হেডস্যারও এসেছেন সঙ্গে,” জানাল ওরা।

কিন্তু স্কুলপড়ুয়াদের উচ্ছ্বাসের চোটে সাংসদের সঙ্গে কথা বলতে না পেরে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-নেত্রীদের অনেকেই হতাশ। খড়্গপুর ২ ব্লকের চকমকরামপুর অঞ্চলের সভানেত্রী ঝর্না জানা, মাওয়া-২ বুথের সভাপতি বলরাম পড়িয়ার আক্ষেপ, “সাংসদকে অনেক কথাই বলার ছিল। কিন্তু স্কুলের ছেলেমেয়েদের জন্য সুযোগই পেলাম না।” দেবের সঙ্গী জেলা পরিষদের পরিষদীয় নেতা অজিত মাইতি বলেন, “কর্মিসভাগুলিতে সাংসদকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা ছিল। সঙ্গে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কিছু প্রস্তাব দেওয়ার ছিল। তাই সভা নিয়ে প্রচার হয়নি। তবু পড়ুয়ারা জানতে পেরে ভিড় করেছে।”

তবে দেবকে সামনে থেকে দেখার টানেই তাঁরা এসেছিলেন, এমনটা অন্তত বলছেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পিংলার বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কাকলি ভট্টাচার্য এবং মাওয়া-র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শম্ভুনাথ বিশাই দু’জনেরই বক্তব্য, “স্কুলের উন্নয়নে অর্থ প্রয়োজন। পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়ে সে কথাই সাংসদকে জানাতে গিয়েছিলাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE