ইফতারের খাওয়াদাওয়ার পরেই গ্রামের ৬১ জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হলেন। সোমবার রাত থেকে পিংলার মালিগ্রাম পঞ্চায়েতের নয়া এলাকার মোট ৩১ জনকে ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের চিকিৎসা চলছে বাড়িতে।
রবিবার রাতে ইফতারের খাওয়া-দাওয়া হয়েছিল। সোমবার সকাল থেকেই ওই ইফতার পার্টিতে যোগদানকারীদের একাংশের পেটে যন্ত্রণা ও বমি শুরু হয়। রাতে অবস্থার অবনতি হলে অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মঙ্গলবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা এলাকায় যান। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ওই এলাকার কিছু মানুষ বিরিয়ানি খেয়েছিলেন। আবার অনেকে একই পুকুরের জলে বাসন ধুয়েছেন। তাই ঠিক কোত্থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে তা খুঁজতে জল ও বমির নমুনা সংগ্রহ করা হবে।”
পিংলার নয়া এলাকার একটি অংশে মুসলিম সম্প্রদায়ের বসবাস। রবিবার রাতে নয়া মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় ইফতার পার্টি থেকে বিরিয়ানি বিলি করা হয়েছিল। সেই বিরিয়ানি খেয়েছিলেন অনেকেই। সোমবার সকাল থেকেই তাঁদের কয়েকজনের পেটে যন্ত্রণা ও বমি শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় আনোয়ারি বিবি, মুসকান খাতুন, শেখ সেলিমদের পিংলা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার সকালে এলাকায় পৌঁছন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। আসেন পিংলার জেলা পরিষদ সদস্য অজিত মাইতি। তিনি বলেন, “এলাকায় যথেষ্ট সংখ্যক নলকূপ রয়েছে। তাই জল থেকে এই সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা কম। ইফতারের পরে অনেকেই বিরিয়ানি খেয়েছিল। সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’’ পিংলা হাসপাতালে ভর্তি থাকা শেখ সফিউল রহমান, হাসিবুল মল্লিকরা বলেন, “রবিবার রাতে রোজা শেষে সামান্য বিরিয়ানি খেয়েছিলাম। পরদিন সকালে অসুস্থ হয়ে পড়ি।’’
বাড়িতে চিকিৎসা চলছে জনা তিরিশেকের। এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছেন আশাকর্মীরা। দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধ। এ দিন দুপুরে এলাকায় যান জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা সংক্রমিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান। তিনি বলেন, “আমরা এলাকার লোককে নিয়ে আলোচনায় বসেছি। একটা সচেতনতা শিবির করছি। মূলত স্বাস্থ্যবিধি ও খাদ্যবিধির অনিয়মে এই ঘটনা ঘটে। তাই এমন পরিস্থিতিতে কী করণীয় তা বলা হচ্ছে।’’ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক উৎপল রায়ও একই উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকেও এ দিন চার বোতল স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। উৎপলবাবু বলেন, “আসলে আমি একই সংক্রমণের একাধিক রোগী দেখছিলাম। কোথাও স্বাস্থ্যবিধি পালনে হয়তো ত্রুটি ছিল। তাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম।’’