Advertisement
E-Paper

ডিসেম্বরে ১ কোটি ছুঁয়ে ফেলবে জগন্নাথ ধামের দর্শানার্থীসংখ্যা! পর্যটনস্থল দিঘা ৮ মাসের মধ্যে এখন সফল তীর্থস্থানও

জগন্নাথ ধামে ভিড় কেমন হচ্ছে, তার একটি আভাস পাওয়া যাচ্ছে মন্দিরের দানপাত্র থেকেও। তিন-চার দিন পর গত সোমবার মন্দিরের দানপাত্র খুলেছিলেন কর্তৃপক্ষ। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রণামীর পরিমাণ ৭ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা। প্রণামী ছাড়াও মন্দির কর্তৃপক্ষের আয়ের আরও একটি উৎস ভোগ।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:২৬
Digha Jagannath Dham

গত এপ্রিলে উদ্বোধনের পর থেকে রাজ্যের অন্যতম আকর্ষণ দিঘার জগন্নাথ ধাম। —নিজস্ব চিত্র।

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে নির্মিত দিঘার জগন্নাথ ধাম তথা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধনের আট মাস এখনও কাটেনি। তার মধ্যে নিজস্ব মাইলফলক তৈরি করতে চলেছে এই মন্দির। কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে দর্শনার্থী তথা পুণ্যার্থীর সংখ্যা ৯৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। যে সংখ্যক দর্শনার্থী প্রতি দিন জগন্নাথদর্শনে আসছেন, তাতে ডিসেম্বরে কোটির গণ্ডি ছুঁয়ে ফেলা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।

এক বছর আগেও পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূল ছিল শুধুই পর্যটনকেন্দ্র। তবে প্রসিদ্ধ এবং পরিচিত। তার বড় কারণ, সপ্তাহান্তে ঝটিকা সফরের জন্য অন্যতম আদর্শ স্থান। সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখা, সমুদ্রস্নান, ইলিশ-কাঁকড়ার বিবিধ পদ দিয়ে ভোজন, সমুদ্রের জলে পা ভিজিয়ে সৈকতে হাঁটাহাঁটি— নিরুপদ্রব এবং নিখাদ ছুটি কাটানো যায়। অক্ষয়তৃতীয়ার দিন থেকে দিঘার সমুদ্রের ‘টানের’ সঙ্গে জুড়েছে মন্দিরের আকর্ষণ। সমুদ্র এবং দেবদর্শন একই সঙ্গে। ‘ফুল প্যাকেজ’ এবং ‘বাজেট ফ্রেন্ডলি।’

স্থানীয় বাসিন্দা থেকে ছোট-বড় ব্যবসায়ী, টোটোচালক থেকে হোটেল কর্তৃপক্ষ, সকলেই একযোগে স্বীকার করে নিচ্ছেন, গত আট মাসে লক্ষণীয় ভাবে ভিড় বেড়েছে দিঘায়। আরও উপার্জনের পথ খুলেছে। একই কথা বলছেন দিঘা জগন্নাথ ধাম ও কালচারাল সেন্টার ট্রাস্টের সদস্য তথা কলকাতা ইসকনের প্রতিনিধি রাধারমণ দাস। তাঁর কথায়, ‘‘মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই ভক্তদের ভিড় ছিল। সেই ধারাবাহিকতাই বজায় আছে। বিশেষ করে ছুটির দিন এবং পুজোর দিনগুলোয় দর্শনার্থীদের ঢল নামে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গোটা ডিসেম্বর জুড়ে পর্যটকদের যে ভিড় দেখা যাচ্ছে, তাতে আমরা নিশ্চিত দ্রুত এক কোটির মাইলফলক (পদার্পণের) ছোঁয়া যাবে।’’

জগন্নাথ ধামে ভিড় কেমন হচ্ছে, তার একটি আভাস পাওয়া যাচ্ছে মন্দিরের দানপাত্র থেকেও। তিন-চার দিন পর গত সোমবার মন্দিরের দানপাত্র খুলেছিলেন কর্তৃপক্ষ। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রণামীর পরিমাণ ৭ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা। প্রণামী ছাড়াও মন্দির কর্তৃপক্ষের আয়ের আরও একটি উৎস ভোগ।

জগন্নাথ দর্শনে ভিড় দিঘার ধামে।

জগন্নাথ দর্শনে ভিড় দিঘার ধামে। —নিজস্ব চিত্র।

জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলরামের দর্শন সেরে চাইলে ভোগ খেতে পারেন দর্শনার্থীরা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চার বেলা ভোগের ব্যবস্থা রয়েছে। খিচুড়ি ভোগ খেলে থালা প্রতি মূল্য ১০০ টাকা। এ ছাড়া ‘মিষ্টি মহাপ্রসাদ’ ৫০ টাকা, ‘পেঁড়া মহাপ্রসাদ’ ১০০ টাকা, ‘পুরিভাজি মহাপ্রসাদ’ ৫০ টাকা, দুপুরের ‘মহাপ্রসাদ’ ১০০ টাকা এবং দুপুরের ‘স্পেশ্যাল মহাপ্রসাদ’-এর দাম ১৫০ টাকা। সন্ধ্যার ‘মহাপ্রসাদ’ মেলে ১০০ টাকায়। এখন প্রতি দিন গড়ে ৫০০ থেকে ৫৫০টি ‘থালি’ তৈরি হয়। প্রসাদ পেতে হলে নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বরে আগাম বুকিং করা বাধ্যতামূলক। সকাল এবং দুপুরের প্রসাদের জন্য আগের দিন সন্ধ্যা থেকে ওই দিন সকাল ১০টার মধ্যে এবং রাতের প্রসাদের জন্য সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে বরাত দিতে হয়। অল্প টাকায় দিঘার হোটেলে বসেও প্রসাদ পেয়ে যেতে পারেন। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ধামে এক হাজার মানুষের বসে খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। সম্প্রতি হিডকোর চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মন্দির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তিনি ওই আসনসংখ্যা বাড়িয়ে দু’হাজার করতে বলেছেন। সেইমতো পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে।

সামনেই বড়দিন। বর্ষশেষের সপ্তাহে বরাবরই আলাদা করে ভিড় টানে দিঘা। তাই জগন্নাথ ধাম খোলার আট মাসের মধ্যে দর্শনার্থীর সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে যেতে কোনও সমস্যাই হবে না বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।

Jagannath Dham Digha Tourism mandir in digha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy