Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

শুকিয়ে মরছে ঝাউ বন, নজর দেবে কে!

জেলা সফরে দিঘায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্থানীয় প্রশাসন, দলের নেতাদের সতর্ক করে দিয়েছেন যে, দিঘায় পরিবেশ নষ্ট করতে দেওয়া যাবে না। সবুজ রক্ষা করতে হবে।

দিঘার ঝাউ বন। ফাইল চিত্র

দিঘার ঝাউ বন। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দিঘা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৯ ০০:০২
Share: Save:

এক সময়ে দু’চোখ মেলে তাকালেই দেখা যেত বালিয়াড়ি আর বিস্তৃত ঝাউবন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দিঘার সেই চেনা ছবিটা পাল্টেছে। কমেছে ঝাউবন। তাতেও চোখ সয়ে গিয়েছিল পর্যটকদের। কিন্তু সম্প্রতি তাঁদের এবং স্থানীয়দের একাংশ অভিযোগ করছেন, সৈকত শহরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ঝাউ বনেও অনেক গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি, ঝাউ বাগান জুড়ে ডাবের খোলা এবং আবর্জনার স্তূপ জমছে বলেও অভিযোগ।

জেলা সফরে দিঘায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্থানীয় প্রশাসন, দলের নেতাদের সতর্ক করে দিয়েছেন যে, দিঘায় পরিবেশ নষ্ট করতে দেওয়া যাবে না। সবুজ রক্ষা করতে হবে। কিন্তু দিঘার বিভিন্ন অংশে সবুজ পরিবেশের অন্যতম ঝাউ গাছের অকাল মৃত্যু ঘটছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি দিঘায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, নিউ দিঘার পুলিশ হলিডে হোম সংলগ্ন এলাকায় সৈকতের পাশে থাকা ঝাউ গাছের অধিকাংশই এখন শুকিয়ে গিয়েছে। ঝাউ গাছের নীচে আবর্জনার স্তূপ। শুধু ওই অংশ নয়, নিউ দিঘার আরও বেশ কিছু এলাকা, দত্তপুর, রতনপুর, উদয়পুর সংলগ্ন এলাকার ছবিটাও একই।

দিঘার বাসিন্দা দেবরূপ জানা বলেন, ‘‘ঝাউ বাগানগুলি নিয়মিত পরিষ্কারের ব্যবস্থা নেই। বাগানের মধ্যে আবর্জনার স্তূপ জমে থেকে গাছের গোড়ায় জল ঠিক মত পৌঁছাচ্ছে না। বহু ঝাউ গাছ ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন এবং বন দফতরের নজরদারির অভাব রয়েছে।’’ আর এক পর্যটক বলেন, ‘‘ঝাউ গাছের সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনই দেখছি, বহু গাছ কেমন যেন শুকিয়ে গিয়েছে। কেন এমন হয়েছে জানি না।’’

কেন শুকিয়ে যাচ্ছে ঝাউ গাছ?

জেলা বন দফতরের আধিকারিক স্বাগতা দাস বলেন, ‘‘সৈকত এলাকায় লবণতা বেড়েছে। সে কারণে অনেক ক্ষেত্রে ঝাউ গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। কোন এলাকায় ঝাউ গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’ আবার, এ ব্যাপারে রামনগর কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক অচিন্ত্য সামন্তের ব্যাখ্যা, ‘‘শুধু লবণতা বৃদ্ধি পেলে এমনটা হয় না। একই সঙ্গে জলবায়ুগত পরিবর্তন, বাতাসের গতিপথ পরিবর্তন এবং ঝাউগাছের অভিযোজন ক্ষমতা হ্রাস পেলেও গাছ শুকিয়ে যায়।’’ অচিন্ত্য জানিয়েছেন, কলেজ পড়ুয়াদের নিয়ে দিঘায় ঝাউ গাছের বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার তাঁদের একটা পরিকল্পনা রয়েছে।

ঝাউ বাগানে আবর্জনা এবং গাছ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা মেনে নিয়েছেন দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘ঝাউ বাগান চত্বরে যাতে আবর্জনা না ফেলা হয়, সে জন্য আমরা মাঝেমাঝেই সতর্ক করি। আবর্জনা সাফাই করা হয়। ঝাউ গাছ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE