Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Mamata Banerjee

মমতার সফরের মুখে চর্চায় ডিএমের বদলি

প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এটি রুটিন বদলি। তবে জেলাশাসক বদল নিয়ে চর্চা চলছেই বিভিন্ন মহলে। রাজনৈতিক চাপানউতোরও অব্যাহত।

Chief Minister Mamata Banerjee

বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩১
Share: Save:

সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগেই কাল, বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সভা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নানা মহলের মতে, জেলায় এসে সরকারি পরিষেবা প্রদানের পাশাপাশি পঞ্চায়েত ভোটের আগে জনসংযোগের কাজটিও সেরে ফেলতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই মধ্যে দিন কয়েক আগে জেলাশাসক পদে রদবদল হয়েছে। আয়েষা রানির বদলি হয়েছে। দায়িত্বে এসেছেন খুরশিদ আলি কাদেরী।

প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এটি রুটিন বদলি। তবে জেলাশাসক বদল নিয়ে চর্চা চলছেই বিভিন্ন মহলে। রাজনৈতিক চাপানউতোরও অব্যাহত। মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের খোঁচা, ‘‘ওঁকে (পূর্বতন জেলাশাসককে) বোধহয় পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এসে জেলাশাসকের জায়গা দেখছেন।’’ বদলির বিষয়টি ‘প্রশাসনিক ব্যাপার’ জানিয়ে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো- অর্ডিনেটর অজিত মাইতির পাল্টা মন্তব্য, ‘‘দিলীপবাবু না বুঝেই উল্টোপাল্টা কথাবার্তা বলেন।’’

উল্লেখ্য, জেলায় আয়েষা রানির কার্যকাল ছিল প্রায় ৮ মাস। একাধিক মহল মনে করাচ্ছে, তৃণমূল আমলের গত এক দশকে এই জেলায় এর আগে কোনও জেলাশাসকের কার্যকাল এত কম ছিল না। বাম আমলের শেষ দিকে এ জেলার জেলাশাসক হয়েছিলেন সুরেন্দ্র গুপ্ত। ২০১০ এর অক্টোবরে এসেছিলেন তিনি। ছিলেন ২০১৩ এর অগস্ট পর্যন্ত। পরে পরে জেলাশাসক হয়ে এ জেলায় এসেছেন গুলাম আলি আনসারি, জগদীশপ্রসাদ মিনা, পি মোহনগান্ধী, রশ্মি কমল। গুলাম আলির কার্যকালের মেয়াদ ছিল প্রায় ১০ মাস। জগদীশপ্রসাদের প্রায় ৩ বছর ১১ মাস। মোহনগান্ধীর প্রায় ১১ মাস। রশ্মির প্রায় ২ বছর ১১ মাস। আয়েষা বদলি হয়েছেন ৮ মাসের মাথায়। কেন এত কম সময়ে বদলি, সেই নিয়েও জল্পনা নানা মহলে।

দিলীপের অনুযোগ, তিনি মেদিনীপুরের সাংসদ। অথচ, তাঁর সঙ্গে আয়েষা রানি একদিনও দেখা করেননি। একবার তাঁকে বৈঠকে ডেকেও পরে সেই বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। তৃণমূল বিধায়ক অজিতের দাবি, ‘‘সে দিন জেলাশাসকের জরুরি কাজ পড়ে গিয়েছিল কলকাতায়। তাই একদিন আগে বৈঠকটা বাতিল হয়েছিল। সেই বৈঠকটা এখনও পর্যন্ত হয়নি।’’ সঙ্গে খোঁচা, ‘‘দিলীপবাবুরা গুজরাতে গিয়ে দেখুন না, ওখানে বিরোধী নেতাদের উপরে কী করা হয়!’’

গত ৪ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছিলেন সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কেশপুরে জনসভা ছিল তাঁর। এর ক’দিন পরেই, ৮ ফেব্রুয়ারি জেলাশাসক পদে রদবদলের নির্দেশ বেরোয়। একাধিক মহল মনে করাচ্ছে, যে দিন জেলাশাসক পদে রদবদলের নির্দেশ বেরিয়েছিল, সে দিনই জানা গিয়েছিল যে মুখ্যমন্ত্রী ফের পশ্চিম মেদিনীপুরে আসছেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুরে তিনি প্রশাসনিক সভা করবেন। সাংসদের সভার প্রস্তুতিতে কি প্রত্যাশিত ‘প্রশাসনিক সহযোগিতা’ মেলেনি, এমন কিছু নিয়ে কি কোথাও ক্ষোভ-অসন্তোষ ছিল— জল্পনা রয়েছে। একাধিক মহল অবশ্য মনে করাচ্ছে, এই জল্পনা অপ্রাসঙ্গিক। কারণ, ওই সভার আয়োজক ছিল তৃণমূলই।

শোনা যায়, শুরুতে ঠিকঠাকই ছিল। ক্রমে না কি একাংশ তৃণমূল বিধায়ক, নেতার ‘বিরাগভাজন’ হয়ে উঠতে শুরু করেছিলেন আয়েষা। ‘দুর্নীতি’ ঠেকাতে গিয়েও একটি মহলের রোষের মুখে পড়ে থাকতে পারেন তিনি বলে জল্পনা রয়েছে। এক তৃণমূল বিধায়ক অবশ্য শোনাচ্ছেন, ‘‘রুটিন বদলি। এ নিয়ে জল্পনা- কল্পনার কিছুই নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE