Advertisement
E-Paper

ভারী গাড়ি থেকে টোল নেবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ

নতুন রাস্তা তৈরি হয়, কিন্তু পুরনো রাস্তার মেরামতি হয় না। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ও গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (আরআইডিএফ)-এর বরাদ্দে তৈরি বহু রাস্তার দশা তাই বেহাল। মেরামতির টাকার জোগান দিতে এ বার টোল আদায়ের পরিকল্পনা নিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। মঙ্গলবার জেলা পরিষদের অর্থ স্থায়ী সমিতির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মালবাহী ও ভারী গাড়ির থেকে কর আদায় করা হবে।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৩৩
চন্দ্রামেড় থেকে শান্তিপুর বেহাল প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা।

চন্দ্রামেড় থেকে শান্তিপুর বেহাল প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা।

নতুন রাস্তা তৈরি হয়, কিন্তু পুরনো রাস্তার মেরামতি হয় না। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ও গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (আরআইডিএফ)-এর বরাদ্দে তৈরি বহু রাস্তার দশা তাই বেহাল। মেরামতির টাকার জোগান দিতে এ বার টোল আদায়ের পরিকল্পনা নিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ। মঙ্গলবার জেলা পরিষদের অর্থ স্থায়ী সমিতির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মালবাহী ও ভারী গাড়ির থেকে কর আদায় করা হবে। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর, কিছু পুরসভা টোল কর আদায় করলেও, এই প্রথম কোনও জেলা পরিষদ সব গ্রামীণ পাকা রাস্তার মেরামতির জন্য এই ব্যবস্থা নিয়েছে।

পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল বলেন, “জেলায় গ্রামীণ পাকা সড়কগুলির মেরামতির জন্য যে টাকা দরকার, তা জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে বহন করা সম্ভব নয়।” তিনি জানান, কী হারে এবং কী প্রক্রিয়ায় টোল আদায় হবে, তা ঠিক করতে ‘টেকনিক্যাল কমিটি’ তৈরি করা হয়েছে এদিনই। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরার নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটিতে জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার-সহ অন্যান্য আধিকারিকরাও আছেন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাঁরা রিপোর্ট জমা দেবেন, জানান সোমনাথবাবু।

পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “কর আদায় করার অধিকার জেলা পরিষদের রয়েছে। কিন্তু তার আগে অর্থ দফতরের অনুমতি নিতে হবে।” চতুর্থ রাজ্য অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ গুহঠাকুরতা বলেন, “কর আদায়ের ক্ষমতা পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেরই রয়েছে। জনপ্রিয়তা হারানোর ভয়ে নেতারা কর বসাতে চান না।” তবে টোল যাঁদের থেকে নেওয়া হয়, সেই গাড়ি চালকরা সাধারণত এলাকার বাসিন্দা নন। তাই গাড়ির থেকে কর আদায়ের ঝুঁকি তুলনায় কম, বলেন তিনি। তিনি জানান, অর্থ কমিশন পঞ্চায়েতগুলিকে যে নিঃশর্ত অনুদান দেয়, তার একটি অংশ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট করা হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তা করছে অর্থ কমিশন।

রাজ্য এনআরইজিএস কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার অবশ্য জানান, রাস্তা মেরামতির জন্য প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পের অধীনে আলাদা বরাদ্দ আছে। এ রাজ্যের জন্য ৩০০ কোটি টাকা ধরা আছে, জানান তিনি। জেলা পরিষদের ‘পিএমজিএসওয়াই সেল’ এই টাকা চেয়ে আবেদন করতে পারে। তা ছাড়া রাস্তা চওড়া করার কাজ করা যেতে পারে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের তহবিল থেকেও।

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা গঠনের পর থেকেই এই জেলার বিভিন্ন এলাকায় গ্রামীণ সড়ক তৈরির কাজে গতি আসে। প্রথম দফায় জেলায় ১৬ টি গ্রামীণ রাস্তাকে পাকা করার কাজ চলে। এরপর ধাপে ধাপে জেলার সব ব্লকেই এই প্রকল্পের মাধ্যমে পাকা সড়ক তৈরির কাজ হচ্ছে। এছাড়াও আরআইডিএফ (রুরাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট ফান্ড) প্রকল্পেও বেশ কয়েকটি গ্রামীণ পাকা সড়ক তৈরি হয়েছে। এই দুই প্রকল্প মিলিয়ে জেলায় এখন মোট গ্রামীণ পাকা সড়কের সংখ্যা ১০৭ টি।

প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার নিয়ম অনুযায়ী রাস্তা তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরে পাঁচ বছর পর্যন্ত তা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থার। ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে এই সময়ের মধ্যেই রাস্তা বেহাল হয়ে যাওয়ায় তা মেরামত করতে ফের মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করতে হচ্ছে। ফলে ওই প্রকল্পে রাস্তা তৈরিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না অনেক ঠিকাদার। জেলা পরিষদের বরাদ্দে বেহাল রাস্তায় জোড়াতালি দেওয়া হলেও, পূর্ণাঙ্গ মেরামতি হচ্ছে না। টোল কর আদায় করে রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু করার এই পরিকল্পনা পূর্ব মেদিনীপুরে সফল হলে তা অন্যদেরও পথ দেখাতে পারে, মনে করছেন পঞ্চায়েত দফতরের একাংশ।

ananda mondal east midnapore zilla porisod state news latest news onine news latest latest news online
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy