কেশপুর, গড়বেতা কিংবা দাঁতন, কেশিয়াড়ির প্রত্যন্ত অঞ্চলের বুথে কেমন ভোট চলছে, দিল্লির নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে সেটা সরাসরি নজর রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। তার জন্য কমিশনের নির্দেশে এ বার অনেক বুথেই থাকবে ‘ওয়েব কাস্টিং’। যে বুথে এই ব্যবস্থা থাকবে সেখানে ভোট কেমন চলছে, সেটা সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা ওয়েব ক্যামেরার মাধ্যমে সরাসরি দেখতে পারবেন। শুধু তাই নয়, কোন সময়ে কত ভোট পড়েছে, টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে সেটাও পৌঁছে যাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের কাছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে ঠিক কত বুথে ‘ওয়েব কাস্টিং’য়ের ব্যবস্থা থাকবে? জেলার ওসি (ইলেকশন) দীপ ভাদুড়ি বলেন, ‘‘এ বার জেলার অনেক বুথেই লাইভ ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মোট ৪,২৮৯টি বুথ রয়েছে। এর ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ১,২৮৭টি বুথে ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা রাখার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কোন ব্লকের কোন কোন বুথে এই ব্যবস্থা থাকবে, তার প্রাথমিক তালিকা তৈরি হয়েছে। কমিশনের নির্দেশ রয়েছে, ‘ওয়েব কাস্টিং’য়ের ক্যামেরা বুথের অন্তত ৭- ৮ ফুট উঁচুতে রাখতে হবে। ব্যবহৃত হবে ৫ অ্যাম্পিয়ারের তার। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কমিশনের নির্দেশ মেনেই সব পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের ইতিহাসে প্রথমবার বুথের ভিতরে ‘ওয়েব কাস্টিং’ হয়েছিল ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে। সে বার সামান্য কিছু বুথে অল্প সময়ের জন্য এই কাজ হয়। এই রাজ্যে ‘ওয়েব কাস্টিং’য়ের কাজ প্রথম ভাল ভাবে হয়েছিল ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে। সে বার বেশ কিছু বুথে এই ব্যবস্থা ছিল। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটেও কিছু বুথে ‘ওয়েব কাস্টিং’য়ের ব্যবস্থা ছিল।
• ৩০ শতাংশ বুথে ওয়েব কাস্টিং • ব্যবহৃত হবে ইপি ক্যামেরা • ক্যামেরায় ‘ইনবিল্ড মেমরি কার্ড’ • ক্যামেরা থাকবে ৮ ফুট উঁচুতে • ব্যবহৃত হবে ৫ অ্যাম্পিয়ার তার
‘ওয়েব কাস্টিং’ ব্যবস্থার কিছু সমস্যাও রয়েছে। কোনও বুথে নেটওয়ার্কের সমস্যা হলে ‘ওয়েব কাস্টিং’ বন্ধ হয়ে যাবে। সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বুথের ভোটচিত্র অস্পষ্ট থেকে যাবে কমিশনের কাছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, নেটওয়ার্ক সমস্যা মেটাতে এ বার ওয়েব কাস্টিংয়ে ব্যবহৃত ইপি ক্যামেরায় ‘ইনবিল্ড মেমরি কার্ড’ রাখা হবে। এরফলে নেটওয়ার্ক সমস্যায় কোথাও ‘ওয়েব কাস্টিং’ বন্ধ হয়ে গেলেও ‘ইনবিল্ড মেমরি’ সম্বলিত ইপি ক্যামেরায় ধারাবাহিক রেকর্ড হতে থাকবে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী, সেই অসম্পাদিত ফুটেজ দেখতে পারবে কমিশন। নিরবিছিন্ন নেটওয়ার্কের জন্য মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওয়েব কাস্টিং হলে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকেরা বুথের ছবি দেখতে পাবেন। কলকাতা অফিস, দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের অফিসে বসে কর্তারা নজরদারি চালাবেন। প্রয়োজনে সরাসরি বুথের ভোটকর্মী, পর্যবেক্ষক, জেলাশাসক, জেলা পুলিশ সুপার বা সেক্টর অফিসারদের নির্দেশ দিতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy