গড় শালবনিতে দাঁতালের তাণ্ডব। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
হাতির হানায় মৃত্যু হল দু’জনের। বৃহস্পতিবার রাতে বিনপুরের পাপটপুরে হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে অটোচালক রোহিত দাসের (৪৫)। আর শুক্রবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম থানা এলাকার গড়শালবনির জঙ্গলে হাতি পিষে মারল শশধর মাহাতোকে (৫০)।
বন দফতর জানিয়েছে, শশধর মাহাতো গড় শালবনির কাজুবাদাম জঙ্গলের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। এ দিন জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসার সময় একটি দাঁতাল হাতি তাঁকে প্রথমে শুঁড় দিয়ে তুলে আছাড় মারে। তারপর পা দিয়ে পিষে দেয়। তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। আর রোহিত দাস বিনুপরে অটো চালাতেন। সারাদিন অটো চালিয়ে রাত দশটা নাগাদ ডাঙরপাড়ায় নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন। ফেরার পথে হাতি হানা দেয়। প্রথমে অটোরিকশাটি উল্টে দেয়। তারপর অটো থেকে রোহিতকে বের করে পিষে মারে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গড়শালবনিতে কাজুবাদাম ও আমবাগান রয়েছে। ওই এলাকায় ৫টি রেসিডেন্ট হাতি রয়েছে। এই সময় কাজু গাছ থেকে বাদাম ঝরে পড়ে। যাতে তা কেউ চুরি করতে না পারে তাই দেখভালের জন্য লোক রাখা হয়। ওই জঙ্গলে স্থানীয় বরিয়া গ্রামের শশধর মাহাতো, তাঁর স্ত্রী ভবানী, অরুণ মাহাতো ও তাঁর স্ত্রী সবিতা - চারজন দেখভালের কাজ করতেন। এ দিনও চার জনে জঙ্গল ঘুরে একটি জায়গায় বসার জন্য আসছিলেন। চারিদিক খেয়াল না করে একটু আগে আগে আপন মনে চলছিলেন শশধরবাবু। হঠাৎ সামনে হাতি দেখে পেছন থেকে চিৎকার করেন বাকিরা। কিন্তু ঘটনা বোঝার আগেই শুঁড় দিয়ে জড়িয়ে ধরে হাতি। আছাড় মারে। তারপর পা দিয়ে ধাক্কা মারে। পরে পিষে দেয়। অরুণ মাহাতোর কথায়, “হঠাৎ এ ভাবে হাতি এসে আক্রমণ করবে বুঝতেই পারিনি। একটু খেয়াল করলে এমনটা হত না।” মৃত শশধরবাবুর স্ত্রী বলেন, “চোখের সামনে স্বামীকে পিষে মারল, কিছুই করতে পারলাম না।”
ঝাড়গ্রাম মহকুমা জুড়েই রয়েছে জঙ্গল। দলমার দামাল হাতি ছাড়াও সেখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি রেসিডেন্ট হাতি। আর সেই হাতির হানায় প্রায়ই মৃত্যু ঘটছে মানুষের। তা নিয়ে বন দফতর কী ভাবছে? আবারও দু’জনের মত্যুর পর ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের ডিএফও বাসবরাজ হলিয়াচ্ছি বলেন, “হাতির হামলা রুখতে বৈঠক ডাকা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করার জন্য মাইক নিয়ে ঘোষণা করা হবে। ছড়ানো হবে লিফলেটও। যাতে জঙ্গল ও জঙ্গল লাগোয়া এলাকা দিয়ে চলাচলের সময় সকলেই একটু সাবধানতা অবলম্বন করেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy