ঝাড়গ্রামের সাতবল্লা গ্রামে মৃত দলমার পালের হাতিটি। - নিজস্ব চিত্র।
পাকা ধান খাওয়ার জন্য জমিতে নেমে সেচ-পাম্পের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল একটি কমবয়সী হাতির। রবিবার গভীর রাতে ঝাড়গ্রাম ব্লকের সর্ডিহা পঞ্চায়েতের সাতবল্লা গ্রামের ঘটনা।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার রাতে মেদিনীপুর বন বিভাগের চাঁদড়া রেঞ্জ এলাকায় থাকা দলমার পালের ৮০-৯০টি হাতিকে খেদিয়ে সদর ব্লকের মণিদহ এলাকা দিয়ে ঝাড়গ্রামের দিকে ফেরত পাঠিয়ে দেন বনকর্মী ও হুলাপার্টির লোকেরা। হাতিগুলি কংসাবতী নদী পেরিয়ে ঝাড়গ্রামের চুবকা অঞ্চলের চিতলবনি এলাকা হয়ে সর্ডিহা অঞ্চলের সাতবল্লা গ্রামের ধানখেত মাড়িয়ে এগোতে থাকে। বেশির ভাগ হাতিগুলি খেমাশুলির কাছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক পেরিয়ে খড়্গপুর বন বিভাগের কলাইকুণ্ডার জটিয়ার জঙ্গলের দিকে চলে যায়। যাওয়ার সময় রাত দু’টো নাগাদ দলমার পালের গোটা পাঁচেক হাতি দলছুট হয়ে গিয়ে সাতবল্লা গ্রামের ধান খেতে নেমে পড়ে। হাতির আওয়াজে গ্রামবাসীর ঘুম ভেঙে যায়। ফসল বাঁচাতে হাতি খেদাতে শুরু করেন বাসিন্দারা। ওই সময় একটি হাতির গায়ে বিদ্যুৎ চালিত মিনি ডিপ টিউবওয়েলের তার জড়িয়ে যায়। ধান খেতের এক পাশে থাকা সেচ দেওয়ার ব্যক্তিগত ওই মিনি ডিপ টিউব ওয়েলটির মালিক হলেন সুবল ঝাঁপ নামে স্থানীয় এক চাষি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুবলবাবুর বাড়ি থেকে প্রায় তিনশো মিটার তার টেনে ওই মিনি ডিপটিউবওয়েলে বিদ্যুতের সংযোগ দিয়েছিল বিদ্যুৎ দফতর। তার জড়িয়ে যেতে হাতিটি মিটার বক্স ভাঙতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় বলে অনুমান। হাতিটির মৃত্যু হওয়ার পর ভোর পর্যন্ত গোটা চারেক হাতি মৃত হাতিটির মৃতদেহ ঘিরে রেখেছিল। সোমবার সকালে মৃত হাতিটিকে দেখার ভিড় করেন কয়েকশো গ্রামবাসী। স্থানীয় চাষি প্রমথ দাস, সদানন্দ নায়েকরা বলেন, “দলমার পালটি খড়্গপুরের দিকে চলে গেলেও দলের কয়েকটি হাতি আশেপাশের জঙ্গলে থেকে গিয়েছে। সঙ্গীর মৃত্যু হওয়ায় তারা ফের এলাকায় ফিরে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বনকর্মীরা। এখনও মাঠে পাকা ধান রয়েছে। এই সময় ফের হাতি চলে আসায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছি।” ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হোলেইচ্চি জানান, মৃত পুরুষ হাতিটি সাব অ্যাডাল্ট (কমবয়সী)। বয়স প্রায় চার বছর। এদিন হাতির দেহটি ঝাড়গ্রামের বাঁদরভুলা বিট হাউসে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাণী চিকিৎসকরা ময়না তদন্ত করার পরে দেহটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy