Advertisement
E-Paper

৬২ ঘণ্টা পরে নাম ছাড়াই খুনের মামলা

শনিবার সকালে কেশিয়াড়ি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন খাজরা বাজারে নিহত পান ব্যবসায়ী বিভুরঞ্জনের স্ত্রী সীমা। গত বুধবার সন্ধ্যায় বিজেপি-র ডাকা ১২ ঘণ্টা বন্‌ধ শেষে দোকান খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় বিভুরঞ্জনের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৩২
বাবার মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দুই মেয়ে। বৃহস্পতিবার (বাঁ দিকে)। বুধবার এই পান দোকানের সামনেই গুলিবিদ্ধ হল বিভুরঞ্জন দাস (ডান দিকে)। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

বাবার মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দুই মেয়ে। বৃহস্পতিবার (বাঁ দিকে)। বুধবার এই পান দোকানের সামনেই গুলিবিদ্ধ হল বিভুরঞ্জন দাস (ডান দিকে)। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

গোড়া থেকেই কেশিয়াড়িতে নিহত পান দোকানি বিভুরঞ্জন দাসকে নিজের কর্মী বলে দাবি করে তৃণমূল খুনের অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি-র দিকে। তবে পুলিশ লিখিত অভিযোগ হয়নি। অবশেষে ঘটনার ৬২ঘন্টা পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করল নিহতের স্ত্রী। কোনও রাজনৈতিক দল বা নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তির নামে নয়, অভিযোগ দায়ের হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।

শনিবার সকালে কেশিয়াড়ি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন খাজরা বাজারে নিহত পান ব্যবসায়ী বিভুরঞ্জনের স্ত্রী সীমা। গত বুধবার সন্ধ্যায় বিজেপি-র ডাকা ১২ ঘণ্টা বন্‌ধ শেষে দোকান খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় বিভুরঞ্জনের। নিহতের পরিজনেরা গোড়া থেকেই দাবি করছিলেন, বিভুরঞ্জন কোনও সক্রিয় রাজনীতি করতেন না। স্থানীয় তৃণমূল নেতা ভূষণ পুষ্টির থেকে ভাড়া নিয়ে পান দোকান চালানোর সুবাদে তৃণমূলের সমর্থক ছিলেন মাত্র। তাতে অবশ্য রাজনৈতিক চাপানউতোর থামেনি। তৃণমূল দাবি করে, তাদের কর্মীকে খুন করেছে বিজেপি। বিভুরঞ্জনে দেহ দলীয় পতাকায় ঢেকে মেদিনীপুরে মিছিলও হয়, নেতৃত্ব দেন তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। বিজেপি পাল্টা অভিযোগ তোলে, তৃণমূলই খড়্গপুর থেকে দুষ্কৃতীদের এনে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।

বিভুরঞ্জন খুনের পর থেকে রাজনৈতিক চাপানউতোরও চলছে। শুক্রবার রাতে অভিযোগ ওঠে, বিজেপির খাজরা অর্জুনগেড়িয়ার বুথ সভাপতি দিলীপ দাস ও তাঁর মা সন্ধ্যা দাসের উপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূলের লোকজন। দু’জনকেই ভর্তি করানো হয় মেদিনীপুর মেডিক্যালে। তাদের বুথ সভাপতি নবীন চক্রবর্তীর বাড়িতে পাল্টা হামলার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূলও।

বিজেপির অভিযোগ, শুক্রবার রাতে অর্জুনগেড়ির বুথ সভাপতি দিলীপ ও তাঁর মা সন্ধ্যা হাতিগেড়িয়ার বাড়ি থেকে বাইকে অর্জুনগেড়িয়া ফিরছিলেন। পথে পাঁচ-সাতজন দুষ্কৃতী লাঠি দিয়ে দিলীপের মাথায় আঘাত করলে বাইক থেকে পড়ে যান তিনি। অভিযোগ, এরপরেই ওই বিজেপি নেতাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। জখম হন তাঁর মা-ও। বিজেপির খাজরা অঞ্চলের শক্তি প্রমুখ দিলীপ দাস বলেন, “আমাদের বন্‌ধ সফল হওয়ায় মাথা ঠিক রাখতে পারছে না তৃণমূল। বন্‌ধের দিন গোলমালের সময় যেহেতু আমাদের এই বুথ সভাপতি ছিলেন, তাই বদলা নিতে ওঁর ওপর হামলা হয়েছে।”

তৃণমূলের কেশিয়াড়ি ব্লক সভাপতি পবিত্র শিট অবশ্য পথ দুর্ঘটনার তত্ত্ব দিচ্ছেন। তাঁর বক্তব্য, “সন্ত্রাস চালাচ্ছে বিজেপি। বন্‌ধের দিন আমাদের লোককে খুন করেছে। সব ধামাচাপা দিতে দুর্ঘটনাকে মিথ্যা রাজনৈতিক রং দিতে চাইছে বিজেপি।’’

বিভুরঞ্জনের পরিবার অবশ্য রাজনীতিতে জড়াতে নারাজ। নিহতের স্ত্রী এ দিন বলেন, “সত্যি বলতে আমরা যেখানে কাউকে দেখিনি, সেখানে কী করে নির্দিষ্ট কারও নামে অভিযোগ করব। তাই অ়জ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের নামেই অভিযোগ জানিয়েছি। তবে আমি চাই পুলিশ প্রকৃত খুনিকে দ্রুত ধরুক।” এ প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার বক্তব্য, “অজ্ঞাতপরিচয়দের নামে অভিযোগ দায়ের করেছে নিহতের পরিবার। আমাদের তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে। যথাসময়ে সব বলা হবে।”

Complaint Murder FIR
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy