কখনও পান বরজের মধ্যে, কখনও ধানখেতের আড়ালে— নিরাপদ আশ্রয়ে লুকিয়েও শেষ পর্যন্ত নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি দুই বাঘরোল। পূর্বের জেলা সদর তমলুক শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ধলহরা এলাকায় সম্প্রতি গ্রামবাসীরা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মেরেছে তাদের।
ফিশিং ক্যাট যার বাংলায় নাম বাঘরোল। দূর থেকে দেখলে অনেক সময় বাঘ বলে ভ্রম হয়। কিন্তু বিপন্ন প্রজাতির ওই প্রাণীকে মারা যে আইন বিরুদ্ধ এবং শাস্তি যোগ্য অপরাধ তা জানেনই না সাধারণ মানুষ। বোঝানোর দায় নেই বন দফতরেরও। বাসিন্দাদের সচেতনার অভাবের পাশাপাশি ওইসব পশু, পাখি, সাপ দেখা গেলে তা উদ্ধারের জন্য কোথায় জানাতে হবে তা জানেন না এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাই। ফলে প্রাণে বাঁচতে অনেকেই ই বন্যপ্রাণীকে নির্বিচারে মেরে ফেলেন।
যদিও তমলুক শহরে জেলা বন দফতরের অফিস ছাড়াও তমলুক, পাঁশকুড়া, কাঁথি, বাজকুল, এগরা, হলদিয়ায় রেঞ্জ অফিস রয়েছে। এছাড়াও রেঞ্জ অফিসের অধীনে একাধিক বীট অফিস রয়েছে। বন দফতরের অফিসে পশু, পাখি ধরার খাঁচা, স্নেক ক্যাচার (সাপ ধরার যন্ত্র) এবং এইসব প্রাণী উদ্ধারের জন্য জেলায় একটি রেসকিউ ভ্যানও রয়েছে। কিন্তু বন দফতরের অফিসের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগের অভাব, বাসিন্দাদের সচেতন করার জন্য তেমন উদ্যোগ নেই বলেও অভিযোগ। বন্য প্রাণী উদ্ধারের জন্য যোগাযোগের ফোন নম্বর জানা না থাকায় বাসিন্দাদের নাকাল হতে হয়। অনেকে বাধ্য হয়ে থানা, স্থানীয় পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু ঘুরপথে সেই খবর বন দফতরের কাছে পৌঁছানোর আগে ওইসব পশু, পাখির প্রাণ বিপন্ন হয়ে পড়ে।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অধিকাংশ এলাকায় বিট অফিসারের পদ ফাঁকা। ফলে একজন বিট অফিসার একাধিক এলাকার দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বন আধিকারিক স্বাগতা দাস অবশ্য বলেন, ‘‘পরিকাঠামোগত কিছু খামতি থাকলেও দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বাসিন্দাদের যোগাযোগ থাকে। বন্যপ্রাণী, গাছ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধি এবং প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় শিবির করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy