E-Paper

কচ্ছপদের জন্য ‘অভয় পুকুর’

কচ্ছপ ধরা বা তা বাজারে বিক্রি করা আইনত নিষিদ্ধ। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের কিছু এলাকায় খোলা বাজারে এখনও কচ্ছপের মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়।

আরিফ ইকবাল খান

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৫ ০৯:৪৭
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ঘরহারা হয় ‘ওরা’-ও। কখনও কখনও তো মাংসের লোভে ‘ওদের’ বাজারে বিক্রিও করা হয়। তবে কিছু শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ বা বন দফতরের তৎপরতায় রক্ষা পায় কাছিম কূল। আর উদ্ধারের পর ‘তাদের’ থাকার জন্য একাধিক রেঞ্জে ‘ঘর’ তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে বন দফতর।

কচ্ছপ ধরা বা তা বাজারে বিক্রি করা আইনত নিষিদ্ধ। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের কিছু এলাকায় খোলা বাজারে এখনও কচ্ছপের মাংস বিক্রি হতে দেখা যায়। হলদিয়ার মাখনবাবাবুর বাজার, ব্রজলালচক এবং দুর্গাচকে হামেশাই কচ্ছপ বিক্রি হয় লুকিয়ে চুরিয়ে। তবে সচেতন ব্যক্তি বা বন দফতর অভিযান চালিয়ে এ ধরনের প্রচুর কচ্ছপ উদ্ধার করে। বন দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, সম্প্রতি হলদিয়ায় উদ্ধার হয়েছে ৫৩টি কচ্ছপ। দিঘা এলাকায় মিলেছে ১৭টি কচ্ছপ। এর মধ্যে ১৪টি অলিভ রিডলে প্রজাতির। তাদের সমুদ্রে ছাড়া হয়েছে।

তবে সামুদ্রিক প্রজাতির কচ্ছপ বাদে অন্যদের জন্য কয়েক বছর আগে শঙ্করপুরে কয়েক একর জায়গায় বন দফতর ‘অভয় পুকুর’ তৈরি করেছিল। উদ্ধার হওয়া সাধারণ বা বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপদের ওই পুকুরে ছাড়া হয়। তবে সেই ‘অভয় পুকুরে’ কচ্ছপের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তাই আগামী দিনে উদ্ধার হওয়া কচ্ছপদের কথা ভেবে জেলার বিভিন্ন রেঞ্জে ‘অভয় পুকুর’ বানানো শুরু করেছে বন দফতর। যেখানে কচ্ছপেরা অভয়ে বিচরণ করবে।

বন দফতর সূত্রের খবর, খেজুরির বিট অফিসে এই ধরনের কচ্ছপ-পুকুর করা হয়েছে। বাজকুল রেঞ্জের অন্তর্গত চণ্ডীপুর ব্লক অফিসেও রয়েছে এ রকম পুকুর। ওই পুকুরে মাছ ধরা বা চাষ করা নিষিদ্ধ। জেলার এডিএফও মার্স সিজার দাস বলেন, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুরে আমজনতার মধ্যে সচেতনতা বেশি। তাই কচ্ছপ উদ্ধারও হয় বেশি। শঙ্করপুরে আলাদা কচ্ছপ-পুকুর রয়েছে। তবে আরও এলাকায় ওই ধরনের পুকুর বানানো হচ্ছে।’’

শুক্রবার ছিল আন্তর্জাতিক কাছিম দিবস। কচ্ছপ বাঁচানোর বার্তা দিয়ে বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নিজেদের মতো করে এই দিনটি পালন করে। এ রকম সংস্থার সঙ্গে যুক্ত কচ্ছম প্রেমীরা জানাচ্ছেন, পূর্ব মেদিনীপুরে এক সময় প্রচুর সংখ্যায় হলুদ ছোপ কচ্ছপ দেখা যেত। য়ার ডাক নাম ফুল কাছিম। এর পীঠ ঢালু। আবার, পিঠ উঁচু এক ধরনের কচ্ছপ পাওয়া যেত এই জেলায়— যার নাম কূর্ম। পরিবেশ কর্মী তথা কচ্ছপ উদ্ধারে যুক্ত অধ্যাপক অসীমকুমার মান্নার কথায়, ‘‘জলাভূমি ধ্বংস করায় পিঠ উঁচু কচ্ছপ এই জেলা থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। হলুদ রঙের কচ্ছপদের তাই বাঁচিয়ে রাখা আমাদের কর্তব্য।’’ বিভিন্ন সংস্থার তরফে এ দিন কচ্ছপ বাঁচানোর বার্তা দিয়ে কর্মসূচি হয়েছে খেজুরি, হলদিয়া এবং চণ্ডীপুরে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Haldia Tortoise

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy